প্রশ্ন: আমরা পাঁচ ভাই তিন বোন। আমার মা এখনো জীবিত, আমার পিতা মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ। আমার পিতা গ্রামের বাড়িতে ১০.৫০ শতাংশ জমির কিছু অংশে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁর মেজ ছেলেকে বাড়ি করে দেন। আর বাবা নিজ টাকা দিয়ে মাকেও একবার ৩৩.০০ শতাংশ জমি ক্রয় করে দেন। এই জমি পিতার মৃত্যুর পর মা মেজ ছেলেকে রেজিস্ট্রি করে দেন। আর পিতা জীবিত অবস্থায় ছোট ভাইকেও আড়াই কাঠা জমি ক্রয় করে দেন দুই লক্ষ টাকা দিয়ে।
এখন আমার জানার বিষয় হলো, কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী এতে অন্যান্য সন্তানদের হক নষ্ট হয়েছে কি না? রোজ হাশরের দিন পিতা সন্তানদের হক নষ্টের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কি না? মা ও বড় ছেলের জন্য বর্তমানে কি কোন কিছু করণীয় আছে?
– নাম ও ঠিকানা বিহীন।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
উত্তর: পিতা-মাতার জীবদ্দশায় তাদের সম্পত্তিতে ছেলে-মেয়ে কারো কোনো হক বা অধিকার থাকে না। শরীয়তের নীতিমালা অনুযায়ী মানুষ জীবদ্দশায় যাকে যে পরিমাণ ইচ্ছা দান করার অধিকার রাখে, তবে সন্তান সন্ততির মধ্যে জীবদ্দশায় সম্পদ বণ্টন করতে চাইলে সবাইকে সমান হারে বণ্টন করাই শরীয়তের নির্দেশ। বিহিত কোন কারণ ছাড়াই সন্তানদের মধ্যে তারতম্য করা গুনাহ।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত মাসআলায় শুধু দুই ছেলেকে হেবা করার দ্বারা যদি বাকিদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করা উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে তাদেরকে দেয়াটা শরীয়ত পরিপন্থি হয়নি এবং আপনার পিতা এর দ্বারা গুনাহগারও হননি। সাথে সাথে যদি পিতা জীবদ্দশায় উক্ত সম্পত্তি তাদের ভোগ দখলে দিয়ে থাকে, তাহলে হেবা পরিপূর্ণ হওয়ার কারণে তারাই একমাত্র উক্ত সম্পদের মালিক হবে। বাকি অন্য কোনো ওয়ারিশদের জন্য উক্ত সম্পত্তির দাবি করা জায়েয হবে না। আর যদি শুধুমাত্র মৌখিকভাবে হেবা করে থাকে এবং তাদের ভোগ-দখলে না দিয়ে থাকে, তাহলে উক্ত সম্পত্তি পৈতৃক মিরাছ হিসেবে মিরাছের বিধি-বিধান মোতাবেক জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন করতে হবে।
আর যদি কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে তাদেরকে সম্পদ থেকে মাহরূম করে থাকে, এমতাবস্থায় আল্লাহ যদি মাফ না করেন তাহলে হাশরের ময়দানে জবাব দিতে হবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে- রদ্দুল মুহতার- ৫/৬৯৬, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া- ৪/৪৩৭, ফাতাওয়ায়ে কাযিখান- ৪/২৯০, বাহরুর রায়েক- ৭/২৮৮, আহসানুল ফাতাওয়া- ২/২৫৬; দেখা যেতে পারে।
উত্তর দিয়েছেন- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন
মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক-
জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ