কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী পোশাক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিশ্বকাপের বিদেশি দর্শকদের মধ্যে। পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত দীর্ঘ সাদা জুব্বা ও লাল রুমাল এবং হিজাব ও বোরকা পরে আনন্দে মেতে উঠেছেন অনেকে। স্থানীয় সংস্কৃতি ও পোশাক ধারণ করে জীবনের প্রথম দুর্দান্ত সব অভিজ্ঞতায় মেতে উঠেছেন তাঁরা।
আলজাজিরা সূত্রে জানা যায়, দোহার শত বছরের পুরনো সুক ওয়াকিফ এখন বিশ্বকাপের ফ্যান ও দর্শকদের মিলনক্ষেত্র।
সেখানে এসে পছন্দের কাপড় বাছাই করছেন সবাই। দীর্ঘ পোশাকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পছন্দের দেশের পতাকা ও জার্সি। গাতরা নামে পরিচিত রুমাল মাথায় নিয়ে গায়ে জুব্বা পরছেন তাঁরা। এসব পোশাক পরতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলগুলো।
বিশ্বকাপ দেখতে এসে জীবনের প্রথম জুব্বা পরার অভিজ্ঞতার কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যান স্টিভ লভেল। নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার জন্য এমন পোশাক পরার অভিজ্ঞতা সত্যিই দুর্দান্ত। প্রথম দিকে আমার কাছে কিছুটা গরম মনে হলেও মৃদুমন্দ বাতাসে আরামদায়ক হয়ে ওঠে তা। ’
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
বিভিন্ন দেশের ফ্যানদের নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরতে দেখে আনন্দের কথা জানান কাতারের স্থানীয় অধিবাসী আদিল আলী শারশানি। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত যে ফুটবল ফ্যানরা এখানে এসে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরছেন। অবশ্য তাঁদের পোশাক পরার ধরন পুরোপুরি আমাদের মতো না হলেও আমরা খুবই আনন্দিত। ’
এদিকে হিজাব ও বোরকা পরছেন অনেক নারী দর্শক। বিশ্বকাপ দেখতে এসে জীবনে প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের। শো তিন তাও নামের এক চীনা দর্শক নিজ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমার জন্য হিজাব পরার অভিজ্ঞতা খুবই দারুণ। প্রথমদিকে আমার কাছে তা একটু কঠিন মনে হয়েছে। যথাযথভাবে পরতে পারিনি। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন নারী আমাকে হিজাব পরতে সহযোগিতা করেছেন। ’
ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো আরব-মুসলিম দেশে তা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর উদ্বোধনী পর্বে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত পাঠ করা হয়। তাতে মার্কিন অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যান ও কাতারি তরুণ গানিম আল-মিফতাহর সংলাপে দেওয়া হয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা।
নানা দেশের ভক্ত ও দর্শকদের কাছে ইসলামের পরিচিতি ও মুসলিম সংস্কৃতি তুলে ধরতে নানা উদ্যোগ নেয় কাতারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আরব ও ইসলামী সংস্কৃতি প্রচারের অংশ হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন বইপত্র ও ঐতিহ্যবাহী কাহওয়া। তা ছাড়া ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম’ নামে ছয় ভাষায় একটি ই-বুক এবং আরবি ভাষা শিখতে ‘দ্য কুইক স্টার্ট গাইড টু স্পোকেন অ্যারাবিক’ নামে ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় আরেকটি ই-বুক প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল, স্টেশন ও দর্শনীয় স্থানগুলোতে রয়েছে এসব ই-বুকের কিউআর কোড। দোহার বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো হয়েছে আরবি ও ইংরেজিতে মহানবী (সা.)-এর হাদিসসংবলিত দেয়ালচিত্র।
সূত্র : আলজাজিরা
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ