সৌহার্দ্যপূণ আচরণে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ২০০ বছরের পুরনো ঝাকুয়াটারী মসজিদ কালের সাক্ষী হয়ে আছে আজও। মসজিদটি বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত এবং ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদ নামে সর্বমহলে সুপরিচিত।
মসজিদটির একদিকে যেমন বাংলাদেশের বাঁশজানি, অপরদিকে ভারতের ঝাকুয়াটারী গ্রাম। কোনো রকম বাধাবিপত্তি ছাড়াই দুই দেশের পাশাপাশি এ দুই গ্রামের মুসলিম অধিবাসী যুগ যুগ ধরে একসঙ্গে নামাজ আদায় করছে।
ফলে দুই দেশের মানুষের সমপ্রীতির অটুট বন্ধন হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। এ যেন দুই দেশের অনন্য নিদর্শন।
আরও পড়তে পারেন-
- ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামের নির্দেশনা
- কিশোর অপরাধ রোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
- আদর্শ পরিবার গঠনে যে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরী
- ইসলামে সামাজিক সম্পর্ক এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার গুরুত্ব
- মানুষ মারা যাওয়ার পর, তাঁর আত্মার কি হয় ?
ইতিহাস তালাশ করলে জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলেও ভাগ হয়নি সীমান্ত ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এ মসজিদটি। দুই দেশের পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষকে একই সমাজে আবদ্ধ রেখে চলেছে মসজিদটি। আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯৭৮-এর সাব-পিলার ৯-এর পাশে অবস্থিত মসজিদটির উত্তরদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার ঝাকুয়াটারী গ্রাম। আর দক্ষিণদিকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের বাঁশজানি গ্রাম। দেশ বিভাগের বহু আগে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। দেশ ভাগের পর সীমান্তের শূন্য রেখা ঘেঁষে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে যায়। মসজিদটি কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে।
মসজিদের সভাপতি আলমগীর হোসেন জানান, ‘ভারতের যে লোকগুলো আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের রক্তের সর্ম্পক। যার কারণে দেশ ভাগ হতে পারে; কিন্তু আমাদের মহব্বত ভাগ হতে পারে না। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমরা এখানে একসঙ্গে নামাজ আদায় করছি। ’
মসজিদের ইমাম এবং বাঁশজানি গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ‘আজানের ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের দুই গ্রামের মুসল্লিরা আসেন মসজিদে। একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। তখন তারা ভুলে যান তারা ভিন্ন দুই দেশের নাগরিক। মসজিদ থেকে বের হয়ে কোলাকুলি করেন। নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন। শুধু তা-ই নয়, অসুখেবিসুখে, বিপদাপদে পরস্পরের কাছে ছুটে আসেন তাঁরা। ’
ভারতের বাসিন্দা নুর হোসেন জানান, ‘আত্মীয়-স্বজন ভাগ হয়েছে, কিন্তু আমরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করি। এটা আমার বাপ-দাদারাও পড়েছেন। ’
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ