।। মুফতি মুহাম্মদ সা’দ কাসেমী ।।
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘হে রাসুল আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরণ করো, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত- ৩১)।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালবাসা ও তাঁর প্রদর্শিত পথ অনুযায়ী জীবন-যাপন করা ঈমানের অংশ।
এ প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী (রহ.) তার কিতাবে স্বতন্ত্র একটি শিরোনাম এনেছেন, যার অর্থ ‘নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালবাসা ঈমানের অঙ্গ’।
বিশিষ্ট সাহাবী আনাস (রা.) ও আবূহুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ওই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি তার নিকট নিজ পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হবো। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ১৫, মুসলিম শরিফ, হাদিস নং- ৪৫, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং- ১২৪৩)।
রাসূলের (সা.) জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রয়েছে আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। এ প্রসেঙ্গে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা পরকালে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ’। (আল আহযাব, ২১ আয়াত)।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
রবিউল আউয়াল মাসের ফযীলত অনন্য ও অপরিসীম। এ মাসে জন্মগ্রহণ করেন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)। রবিউল আউয়াল হিজরি (আরবি) বছরের তৃতীয় মাস। এ মাসটি যেসব কারণে বিখ্যাত তা হলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেলাদাত (জন্ম), নবুয়ত, হিজরত এবং ওফাত। এ সবই সংঘটিত হয়েছিল রবিউল আউয়াল মাসে।
বছর জুড়ে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ ভুলে গিয়ে শুধু রবিউল আউয়ালে তার জন্ম উৎসবে মেতে থাকলেই পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যাবে না। বরং হাদিসে এসেছে-সে ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই ব্যক্তি প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার পিতা-মাতা, সন্তান থেকে বেশি ভালোবাসবে। অর্থাৎ পিতামাতা-সন্তান থেকেও প্রিয় নবিকে বেশি ভালোবাসতে হবে।’
এ ভালোবাসার মানে এ নয় কিংবা মুখে মুখে এ কথা বলা নয় যে, ‘হে রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনাকে ভালোবাসি।’ বরং এর মর্মার্থ হলো এটি যে-রাসুল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছে তা ধারণ কর। আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক।’
এই মাসে খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-এর সঙ্গে রসুলে আকরাম (সা.)-এর পরিণয় হয়েছিল ১০ রবিউল আউয়াল। মহানবী (সা.) হিজরতের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন ১ রবিউল আউয়াল। তিনি মদিনায় পৌঁছেন ১২ রবিউল আউয়াল। প্রিয়নবী মোস্তফা (সা.) মসজিদে কুবা নির্মাণ করেন ১৬ রবিউল আউয়াল।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া, ঢাকা।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ