।। আল্লামা হাফেয নাজমুল হাসান কাসেমী ।।
নিজের ভুলকে স্বীকার করে নেয়ার স্বভাব নিজের মাঝে সৃষ্টি করা উচিত। এর মাঝেই আমাদের উন্নতি রয়েছে। এতে করে আমরা যে কোন ধরনের ভুল থেকে নিরাপদ থাকতে পারব। অথবা আমাদের মাঝে যদি কোন ধরনের ত্রুটি থাকে এবং কেউ আমাদেরকে সতর্ক করে দেয়, তাহলে তাকে নিজের কল্যাণকামী মনে করা এবং নিজরে ভুলকে স্বীকার করে নেয়া।
এর মাঝে নিজের অপমান বা হেয় মনে না করা। সাহাবায়ে কেরামের স্বভাব এমনই ছিল। অর্থাৎ কেউ তাদের ভুল ধরিয়ে দিলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন এবং খুশি হয়ে তাদের জন্য দোয়া করতেন। আল্লামা ইবনুল জাওযী (রাহ.) আবু ইসহাক (রাহ.)এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত উমর ফারুক (রাযি.) বর্ণনা করেন-
অর্থাৎ- “আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ঐ ব্যক্তি, যে আমার ভুল ধরিয়ে দেয়”।
আব্দুল জাব্বার বিন আব্দুল ওয়াহেদ আল-তানুখী বলেন, হযরত উমর (রাযি.) একবার মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন যে, আমি আল্লাহর ক্বসম দিয়ে বলছি, যে ব্যক্তি আমার কোন দোষ সম্পর্কে অবগত সে যেন আমাকে তা অবশ্যই বলে দেয়। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আপনার মাঝে দু’টি দোষ রয়েছে। আপনি দু’টি চাদর ব্যবহার করেন এবং খাবারের সময় দুই তরকারি গ্রহণ করেন। অথচ অন্য লোকেরা এর সামর্থ্য রাখে না।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
বর্ণনাকারী বলেন, হযরত উমর (রাযি.) তার এই ভুল স্বীকার করে নিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত আর কখনো তিনি দু’টি চাদর এবং খাবারে দুই তরকারি গ্রহণ করেননি। নম্রতা এবং বন্দেগীর চাহিদাও এটাই। যে মানুষ নিজের ভুলকে স্বীকার করে নিবে, এর দ্বারা আল্লাহর নিকট তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
তাওয়াজু এর বরকত সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে-
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ন¤্রতা অবলম্বন করে, আল্লাহ তায়ালা তার মর্যাদা অবশ্যই উঁচু করে দিবেন”।
একবার হযরত উমর (রাযি.) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলছিলেন, হে লোক সকল! নম্রতা অবলম্বন কর। কেননা আমি রাসূল (সা.)কে বলতে শুনেছি যে-
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ন¤্রতা অবলম্বন করে, আল্লাহ তায়ালা তার মর্যাদা উঁচু করে দেন। তাই সে নিজের চোখে ছোট থাকলেও মানুষের নিকট তার সম্মান বেড়ে যায়”।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক- জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া ও রওজাতুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা, উত্তরা, ঢাকা।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ