Home ইসলাম মাহে মুহাররমে আশূরার রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

মাহে মুহাররমে আশূরার রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

।। মাওলানা তাজুল ইসলাম আশরাফী ।।

রমযান মাসের রোযা মুসলিমদের ওপর ফরয। ফরয রোযা ছাড়াও ইসলামে বেশ কিছু নফল রোযা পালনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। সেগুলোর একটি হলো- হিজরি বর্ষের প্রথম মাস- মুহাররমের রোযা। যা আশূরা অর্থাৎ ওই মাসের ১০ তারিখকে কেন্দ্র করে রাখা হয়। এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমযান ও আশূরায় যেরূপ গুরুত্বের সাথে রোযা রাখতে দেখেছি, অন্য সময় তা দেখিনি।’ (সহিহ বুখারী- ১/২১৮)।

অন্যান্য নফল রোজার তুলনায় আশুরার রোজার মর্যাদা অনন্য। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি এ রোযার ব্যাপারে খুব আগ্রহী থাকতেন এবং তার জন্য অপেক্ষা করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘ফযীলতপূর্ণ দিন হিসেবে আশূরার রোযা ও এ মাসের রোযা অর্থাৎ রমযানের রোযার ব্যাপারে মহানবী (সা.)কে যত বেশি আগ্রহী দেখেছি, অন্য রোযার ব্যাপারে তদ্রূপ দেখিনি।’ (সহিহ বুখারি (১৮৬৭) এই হাদিসের আরবি শব্দ ‘يتحرى’ শব্দের অর্থ- সওয়াব প্রাপ্তি ও আগ্রহের কারণে তিনি এ রোযার প্রতীক্ষায় থাকতেন।

আশূরার রোযার ফযীলতের ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রাযি.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমযানের পর আল্লাহর মাস মহররমের রোযা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/৩৬৮)

আরও পড়তে পারেন-

আশূরার রোযা পালনে যেমন অফুরন্ত সওয়াব অর্জিত হয়, তেমনি এদিন রোযা রাখলে গোনাহও মাফ হয়। হযরত আলী (রাযি.)কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিল, রমযানের পর আর কোনো মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোযা রাখার আদেশ করেন? তিনি বললেন, এই প্রশ্ন আল্লাহর রাসূল (সা.)এর কাছে জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তার খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসূল (স.) ইরশাদ করলেন, ‘রমযানের পর যদি তুমি রোযা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখ। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন।’ (জামে তিরমিযী, হাদিস- ১/১৫৭)।

আশূরার রোযা মূলত ১০ই মহররমের রোযা। তবে এই রোযার সাথে আরো একটি রোযা মিলিয়ে রাখার ব্যাপারে হাদিসে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা আশূরার দিন রোযা রাখ এবং তাতে ইহুদীদের বিরোধিতা কর, আশূরার আগে একদিন বা পরে একদিন রোযা রাখ।’ (সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস- ২০৯৫)।

অন্য বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আশূরার দিনে রোযা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সাথে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরো একটি রোযা রেখে নিয়ো।’

তাই মুহাররমের ৯ ও ১০ কিংবা ১০ ও ১১ দুইদিন রোযা রাখা উত্তম। অবশ্য কেউ যদি শুধু ১০ মুহাররম রোযা রাখে তবে সেটিও আশূরার রোযা হিসেবেই গণ্য হবে। তবে হাদিসের নির্দেশনার ওপর আমল না করার কারণে মাকরূহ তথা অনুত্তম হবে।

উম্মাহ২৪ডটকম:আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।