।। কাসেম শরীফ ।।
ইবাদত আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অনুগত হওয়া, নত হওয়া, বিনম্র হওয়া, আনুগত্য করা ইত্যাদি। ইবাদতের আসল অর্থ হচ্ছে আনুগত্য করা। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘ইবাদত হচ্ছে বিনয়ের সঙ্গে আনুগত্য। ’ (মিরআত ১/৬১)
ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘ইবাদতের শাব্দিক অর্থ হলো নীচতা-হীনতা। আর পারিভাষিক অর্থে ইবাদত বলা হয় পরিপূর্ণ ভালোবাসা, বিনয় ও ভীতির সমষ্টিকে। ’ (ইবনে কাসির, তাফসিরুল কুরআনিল আজিম, ১/১৩৪)
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘ইবাদত হলো আল্লাহর একত্বের ঘোষণা দেওয়া এবং তাঁর দ্বিনের বিধানসমূহের অনুসরণ করা। আর ইবাদতের মূল হলো নম্রতা ও নিজেকে হীন করে প্রকাশ করা। ’ (আল-জামে লি আহকামিল কোরআন, ১/২৫৫)
ইবাদতের ভিত্তি
ইবাদতের মধ্যে আসল হচ্ছে আনুগত্য। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর কিতাব এবং তাঁর রাসুলের সুন্নতে যে বিষয় প্রমাণিত নয় তাকে ইবাদত ভাবা কোনো মাখলুকের জন্য বৈধ নয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো কাজ করল অথচ ওই কাজে আমার কোনো অনুমোদন নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৯৯)
রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনাবহির্ভূত কোনো ইবাদত কবুল হয় না। সে ইবাদত যত ভালো আর বড়ই হোক না কেন।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
ব্যাপক অর্থে ইবাদত
মানব সৃষ্টির তাৎপর্য হচ্ছে, আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহভীতি অর্জন করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়, বছরের নির্দিষ্ট দিনে সিয়াম পালন, জান-মাল পবিত্র করার জন্য সম্পদের জাকাত প্রদান, জীবনে একবার হজ পালনের মধ্যে ইবাদতকে সীমাবদ্ধ করা ঠিক নয়। এগুলো অবশ্যই বড় ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
কিন্তু এ কথা সত্য, উল্লিখিত ইবাদতগুলো পালনে একজন মানুষের জীবনের খুব কম সময়ই ব্যয় হয়। কোনো বিবেকসম্পন্ন মানুষ কি এটা মেনে নেবে যে সে তার জীবনের বেশির ভাগ সময় আল্লাহর ইবাদত ছাড়াই অতিবাহিত করবে? অথচ সে জানে যে আল্লাহ তাকে ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন।
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তুমি বলো, আমার সালাত, আমার কোরবানি এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব জাহানের রব আল্লাহর জন্য। তাঁর কোনো শরিক নেই, আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি, আর আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে আমি হলাম প্রথম। ’ (সুরা আন আম, আয়াত : ১৬২-১৬৩)
উম্মাহ২৪ডটকম:এসএ