।। মুফতি ইবরাহিম সুলতান ।।
কিতাব সংগ্রহে বাড়ি বিক্রি—বিষয়টি আমাদের কাছে আশ্চর্য মনে হলেও পূর্ববর্তী কিতাবপ্রেমী মনীষীদের অনেকেই তা-ই করেছেন। তাঁদের একজন আবুল আলা হাসান ইবনে আহমাদ বিন সাহল (রহ.)। একদিন বাগদাদে ইবনুল জাওয়ালিকি (রহ.)-এর গ্রন্থগুলো বিক্রি হচ্ছিল। তিনিও সেখানে গেলেন।
কিছু কিতাবের তখন দাম হাঁকা হলো ৬০ দিনার। তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা কিনে ফেললেন। তবে দাম পরিশোধের জন্য সময় চাইলেন এক সপ্তাহ। কিতাব কিনে রওনা দিলেন মাতৃভূমি হামাজানের দিকে। বাড়ি পৌঁছে তিনি বাড়ি বিক্রির ঘোষণা দিলেন। একজন ৬০ দিনারের কথা বলল। তিনি রাজি হয়ে গেলেন।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
আশপাশের লোকজন বলল, এই বাড়ির দাম তো আরো বেশি হবে। তিনি বললেন, না, এ দামেই বিক্রি করব। তখন ৬০ দিনারেই বাড়ি বিক্রি করে তিনি মূল্য পরিশোধ করতে আবার ছুটলেন বাগদাদের দিকে। তাঁর এই আসা-যাওয়ায় সময় লেগেছে প্রায় এক সপ্তাহ। বইপ্রেমী এই মহান মনীষী ৫৬৯ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
ইবনুল জাওজি (রহ.) বলেন, একবার আবুল আলা (রহ.)-কে এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখলেন, তিনি একটি শহরে প্রবেশ করেছেন, যার সবগুলো দেয়াল তৈরি করা হয়েছে বই দিয়ে। তাঁর চারপাশেও অসংখ্য কিতাব। তিনি গভীর নিমগ্নতায় সেগুলো পড়াশোনা করছেন।
স্বপ্নেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এর রহস্য কী? তিনি বললেন, আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি, দুনিয়ায় আমি যা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম এখানে তা নিয়েই ব্যস্ত থাকার সুযোগ যেন তিনি আমাকে করে দেন। আল্লাহ তাআলা আমার এই চাওয়া কবুল করেছেন। (সাফহাত মিন সাবরিল উলামা, পৃষ্ঠা ৩২৩)
উম্মাহ২৪ডটকম:এসএ