সৌদি আরবে স্থানীয় সময় তখন সকাল ১০টা। গতকাল শুক্রবার। জুমার নামাজ শুরু হতে দুই ঘণ্টা বাকি। স্রোতের মতো মুসল্লিরা মসজিদুল হারামের দিকে ছুটছেন। নারী-পুরুষ-শিশু সবাই অজু ও গোসল সেরে নামাজ আদায় করতে যাচ্ছেন। অসুস্থ বা দুর্বল ব্যক্তিরা হুইলচেয়ারে করে মসজিদের দিকে রওনা হয়েছেন। পবিত্র হজের আগে এটাই ছিল শেষ জুমা। আগামী বুধবার হজের অংশ হিসেবে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন মুসল্লিরা।
বেশ কয়েকজন হজযাত্রী জানালেন, গতকাল ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে মসজিদুল হারামের কাছাকাছি অপেক্ষা করেছিলেন তাঁরা। অনেকে প্রথম কাতারে ইমামের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করতে পেরেছেন। নামাজের তিন ঘণ্টা আগেই মসজিদুল হারামের চারপাশের সব সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হাঁটা ছাড়া কোনো গতি নেই।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
শুক্রবার সৌদি আরবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরই মক্কা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে মসজিদুল হারামের উদ্দেশে রওনা হন মুসল্লিরা। এটা প্রবাসীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। জুমার নামাজের পাশাপাশি তাঁরা দেশ থেকে হজ পালন করতে আসা আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করে কর্মস্থলে ফেরেন।
জুমার খুতবা শোনার জন্য মসজিদের বাইরে ছিল পর্যাপ্ত মাইক ও সাউন্ড সিস্টেম। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও নিরাপত্তার সঙ্গে হজযাত্রীরা খুতবা শোনেন ও নামাজ পড়েন। খুতবায় মক্কা, কাবা শরিফ, হাজরে আসওয়াদ ও জমজম কূপের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে বিশ্বের সব মানুষের জন্য দোয়া করা হয়। জুমার নামাজের ইমামতি করেন মসজিদুল হারামের ইমাম শাইখ ফয়সাল বিন মাজিল গাজাওয়ায়ি।
নামাজ শেষে ফেরার পথে কথা হয় নাইজেরিয়া থেকে আগত মোহাম্মদ হাসানের সঙ্গে। হাসান বললেন, তাঁর ছোট ভাই বাংলাদেশে গাজীপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। নাইজেরিয়া থেকে ৪৩ হাজার জন এবার হজ পালন করতে এসেছেন। হজ প্যাকেজে তাঁদের জনপ্রতি প্রায় সাড়ে চার হাজার ডলার খরচ পড়েছে।
ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম স্ত্রী, মেয়েসহ হজ পালন করতে এসেছেন। তাঁরা জানালেন, জুমার এত বড় জামাতে অংশ নিতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছেন তাঁরা।
উম্মাহ২৪ডটকম:এমএ