ঘর থেকে বাইরে পা দিলেই তো আমরা হাঁটি, হেঁটে হেঁটে প্রতিনিয়ত কত জায়গায়ই না যেতে হয়। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা যানবাহন ব্যবহারের চাইতে যথাসম্ভব হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু তার মানে কি এই যে আমরা সঠিক পদ্ধতিতেই হাঁটছি? শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে যেনতেনভাবে হাঁটলেই চলবে না, অনুসরণ করতে হবে কিছু আদর্শ উপায়। সেসব উপায় কী কী, সেটিই জানাবো আজ পাঠকদের।
স্বাস্থ্যের বেশকিছু প্রকারভেদ আছে, যেমন- মানসিক স্বাস্থ্য, আবেগীয় স্বাস্থ্য, সাহসিকতা ধরে রাখার স্বাস্থ্য ইত্যাদি। কিন্তু নিয়মিত হাঁটলে কি এই সব রকম স্বাস্থ্যেরই উপকার হয়? ‘ফিফটি টু ওয়েস টু ওয়াক’ এর লেখিকা অ্যানাবেল স্ট্রিটস কিন্তু বলছেন, হ্যাঁ!
১. জলপ্রপাত বা ফোয়ারার আশেপাশে হাঁটা
অ্যানাবেলের মতে, হাঁটার সময় যে বাতাস আমরা চাই, তাতে যেন নেগেটিভ আয়্নের পরিমাণ বেশি থাকে। নেগেটিভ আয়ন হলো স্বাদহীন, গন্ধহীন মলিকিউল যা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। আর এটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় জলপ্রপাত আছে এমন জায়গায়। একটি গবেষণায় আলাদা আলাদা কয়েকটি দলের মধ্যে গবেষণা চালানো হয় যেখানে একদল জলপ্রপাতের কাছে হেটেছে, একদল পাহাড়ি রাস্তায়, আরেকদল বদ্ধ কোনো জায়গায়। গবেষণার পর দেখা যায়, যারা জলপ্রপাতের আশেপাশে হেঁটেছে, তাদের মানসিক দুশ্চিন্তা অন্যদের চাইতে অনেক কম। এমনকি তাদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও ভালো হয়েছে এবং শরীরে ‘সেক্রেটরি ইমিউনোগ্লোবুলিন’ নামক অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়েছে অনেক বেশি।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
কিন্তু যদি আশেপাশে কোনো জলপ্রপাত না থাকে তাহলে কি করবেন? খুবই সহজ। বাড়ির আশেপাশের কোনো একটা পার্কে চলে যান, যেখানে ফোয়ারা বা কৃত্রিম ঝরণা আছে। সেখানেই হাঁটতে থাকুন এবং বুক ভরে নিঃশ্বাস নিন!
২. হাঁটার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় কোনটা?
এটা আসলে ব্যক্তির জীবনযাপনের অভ্যাসের উপর নির্ভর করে। আপনার যদি ঘুম কম হয়, তাহলে সকালে জেগে ওঠার এক ঘন্টার মধ্যে অন্তত ১০ মিনিট হাঁটা উচিত আপনার। সত্যি বলতে, জানালার পাশে বসে থেকে খুব একটা উপকার হয় না। কারণ আপনার চোখে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো দরকার যা শরীরকে পরবর্তী ঘুমের জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। বিকেলে হাঁটাহাটি করাও একটি ভালো অভ্যাস, বিশেষ করে বনের পথে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আর যদি মন ভালো করার জন্য হাঁটতে চান, তাহলে খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার বিকল্প নেই।
এখন কেউ কেউ বলতে পারেন, তিনি খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে করণীয় কী? রাত্রে হাঁটাও স্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে। বিশেষ করে, পূর্ণিমা রাতে বাইরে হাঁটা একটা চমৎকার ব্যাপার। পূর্ণিমা রাতে একজন ব্যক্তি গড়ে ২০ মিনিট কম ঘুমায়, তাই বাড়তি সময়ের সদ্ব্যবহার করা যেতেই পারে!
৩. সংকীর্ণ রাস্তায় এবং লোকের ভিড়ে হাঁটা কি উচিত?
লেখিকা অ্যানাবেল মনে করেন, সরু রাস্তা যেখানে অনেক মানুষের ভিড়, সেখানে হাঁটা উচিত নয়। হাঁটার সময় সামনে যদি বহুতল ভবন বেশি চোখে পড়ে, তাহলে জ্যামিতিক আকৃতির যেকোনো কাঠামোর দিকে লক্ষ্য করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কারণ জ্যামিতিক আকৃতির দিকে তাকালে আমাদের মস্তিষ্কে সহজাত প্রশান্তি চলে আসে এবং এটি আমাদের মনের ভেতরে আলফা ওয়েভ সৃষ্টি করে।
হাঁটার ক্ষেত্রে এমন জায়গা বেছে নেওয়া উচিত যেখানে পাখির কলকাকলি আছে। এটি আপনাআপনিই মানুষের মন ভালো করে দেয়, দুশ্চিন্তার মাত্রা কমিয়ে আনে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম