।। আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন ।।
হযরত ইবনে ওমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মহিলাদের জন্য জানাযার পিছনে যাওয়ার মধ্যে কোন সাওয়াব নেই, বরং তাতে গুনাহ হয়।
হযরত আবু কাতাদা (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, মহিলাদের উপর না যুদ্ধ আছে, না জামাআতে হাজির হওয়া, না জানাযায় যাওয়া।
মাসআলাঃ মহিলাদের জন্য পর্দা করা ফরয। তাই জামাআত, জুমা এবং ঈদের নামাযে মহিলাদের হাজির হওয়া জরুরী নয়। এমনকি ফরয নামাযের জন্যও মসজিদে যাওয়া নিষেধ। আর যেখানে ইবাদতের জন্যও মহিলাদের ঘর থেকে বের হওয়া নিষেধ, সেখানে অন্য কাজের জন্য মহিলাদের ঘর থেকে বের হওয়া আরো অধিক গুনাহের কারণ হবে।
যেসব মহিলা কবরে বা মাজারে যাবে, তারা জান্নাতের সুঘ্রানও পাবে না
হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে নামায পড়ে বের হয়ে ঘরের দরজায় দাঁড়ানো ছিলেন। এ অবস্থায় বাহির থেকে হযরত ফাতিমা (রাযি.) আসলেন। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথা থেকে আসছ? উত্তরে ফাতিমা (রাযি.) বললেন, আমি অমুক ব্যক্তি যিনি মারা গেলেন তার ঘরে গিয়েছিলাম। তখন হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তার কবরে গিয়েছ? ফাতিমা (রাযি.) উত্তরে বললেন, আল্লাহর পানাহ, মহিলারা কবরে যাওয়া সম্পর্কে আপনার থেকে এত কঠোর বাণী শোনার পরও কি আমি কবরস্থানে যাব! হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমি যদি তার কবর যিয়ারত করতে যেতে, তবে জান্নাতের সুঘ্রানও পেতে না।
আরও পড়তে পারেন-
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
- উগ্র হিন্দুত্ববাদ এবং মুসলিমবিদ্বেষ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য হুমকি
- ‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ
- মৃত্যুর স্মরণ জীবনের গতিপথ বদলে দেয়
- যে কারণে হিন্দুত্ববাদের নতুন নিশানা ‘দারুল উলূম দেওবন্দ’
মাসআলাঃ মহিলাদের কবরস্থানে বা মাজারে যাওয়ার দ্বারা তারা আল্লাহর লা’নতে গ্রেফতার হয়। মাজারের নিয়্যাতে ঘর থেকে বের হলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ও ফিরিস্তাদের লা’নতে পড়ে এবং রাস্তার শয়তান তাদের সাথী হয়ে যায়। আর কবরবাসী যদি সত্যিকার মু’মিন বা বুযুর্গ হয়, ঐ বেপর্দা মহিলা সেখানে যাওয়ার কারণে তাদের কষ্ট হয়।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, হযরত ফাতিমা (রাযি.) যখন বাহির থেকে আসছিলেন, তখন হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথা হতে আসছ? ফাতেমা (রাযি.) বললেন, অমুক মৃতের ঘরে গিয়েছিলাম। তাদের জন্য রহ্মত ও মাগফিরাতের দোয়া করেছি এবং তার ঘরওয়ালাদেরকে সান্ত¡না দিয়েছি। হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুণরায় জিজ্ঞেস করলেন, কবরস্থানেও গিয়েছ কি? ফাতিমা (রাযি.) বললেন, আল্লাহর পানা, আমি কবরস্থানে যাব? অথচ আমি হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মহিলাদের কবরস্থানে যাওয়ার ব্যাপারে খুব শক্ত ধমকি ও আযাবের কথা শুনেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমি যদি কবরস্থানে যেতে, তবে জান্নাত দেখতেওনা এ পর্যন্ত, যে পর্যন্ত তোমার পিতার দাদা না দেখতে।
– আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন, মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক- জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ