Home ইসলাম ঘুমের আগে নবীজি (সা.) যেসব সুরা পাঠ করতেন

ঘুমের আগে নবীজি (সা.) যেসব সুরা পাঠ করতেন

শিল্পীর কল্পনায় নবীজি (সা.)-এর ঘর

।। মো. আবদুল মজিদ মোল্লা ।।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশি পরিমাণ কোরআন তিলাওয়াত করতেন। দিন ও রাতে তিনি দীর্ঘ সময় কোরআন পাঠে মগ্ন থাকতেন। বিশেষত তাহাজ্জুদের নামাজে নবীজি (সা.) দীর্ঘ তিলাওয়াত করতেন। কখনো কখনো তিনি এক রাকাতে সুরা বাকারা, সুরা আলে ইমরান ও সুরা নিসা তিলাওয়াত করতেন।

(মুসলিম, হাদিস : ৭২২)

সুরা মুলক : রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন ঘুমানোর আগে সুরা মুলক ও সুরা সাজদা পাঠ করতেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, “নবী (সা.) ‘আলিফ লাম মিম, তানজিলু’ (সাজদা) ও ‘তাবারাকাল্লাজি’ (মুলক) পাঠ না করে ঘুমাতেন না। ” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯২)

সুরা বনি ইসরাইল : অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি ঘুমের আগে সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা ঝুমার পাঠ করতেন। আয়েশা (রহ.) বলেন, ‘নবী (সা.) সুরা ঝুমার ও বনি ইসরাইল পাঠ না করে ঘুমাতেন না। ’ (সুনানে তিরমিজি,

হাদিস : ৩৪০৫)

তিন কুল : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘প্রতি রাতে নবী (সা.) বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে দুই হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখভাগের ওপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। ’

(সহিহ বুখারি, হাদিস : (৫০১৭)

সুরা কাফিরুন : ফারওয়াহ ইবনু নাওফাল (রা.) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী (সা.) নাওফাল (রা.)-কে বলেন, ‘‘তুমি ‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন’ সুরাটি পড়ে ঘুমাবে। কেননা তা শিরক থেকে মুক্তকারী। ’’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫০৫৫)

আরও পড়তে পারেন-

মুসাব্বিহাত সুরাগুলো : ইরবাজ ইবনে সারিয়া বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুমানোর আগে মুসাব্বিহাত সুরাগুলো পাঠ করতেন এবং বলতেন, এ আয়াতগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত আছে, যা হাজার আয়াতের চেয়ে উত্তম। ’ (সুনানে তিরমিজি,

হাদিস : ২৯২১)

মুসাব্বিহাত সুরা দ্বারা সুরা হাদিদ, হাশর, সাফ্ফ, জুমা ও তাগাবুন উদ্দেশ্য।

(তাফসিরে কুরতুবি, ১৭/২৩৫)

আয়াতুল কুরসি : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি শোবার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত একজন ফেরেশতা তাকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৭৫)

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত : আবু মাসউদ বাদরি (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪০০৮)

ইমাম নববী (রহ.) উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যথেষ্ট হওয়ার অর্থ তাহাজ্জুদ, শয়তান ও বিপদ থেকে যথেষ্ট হবে। ’

(শরহু মুসলিম : ৬/৯২)

আলে ইমরানের শেষ ১০ আয়াত : আবদুল্লাহ ইবেন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর খালা উম্মুল মুমিনিন মায়মুনা (রা.)-এর ঘরে রাত কাটান। (তিনি বলেন) ‘আমি বালিশের প্রস্থের দিক দিয়ে শয়ন করলাম এবং আল্লাহর রাসুল (সা.) ও তাঁর পরিবার সেটির দৈর্ঘ্যের দিক দিয়ে শয়ন করলেন। নবী (সা.) রাতের অর্ধেক বা তার কাছাকাছি সময় পর্যন্ত ঘুমালেন। অতঃপর তিনি জাগ্রত হলেন এবং চেহারা থেকে ঘুমের রেশ দূর করলেন। পরে তিনি সুরা আলে ইমরানের (শেষ) ১০ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৯২)

লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।