প্রশ্নঃ আমাদের দেশে জুম্আর খুতবা বাংলা ভাষায় পড়া হয় না কেন? আরবী ভাষায় খুতবা পাঠে শ্রোতামণ্ডলীর কোন উপকার হয় কি? অথচ আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন- “প্রত্যেক রাসূলকে আমি তাদের জাতির ভাষায় প্রেরণ করেছি।” তাছাড়া বাংলা মাআরিফুল কুরআনে বলা হয়েছে, জুম্আর খুতবা নিজ ভাষায় পড়াও জায়েয। সঠিক সমাধান কি?
- মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম রংপুরী, হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উত্তরঃ জুম্আর খুত্বা আরবী ভাষায় প্রদান করা সুন্নাত। অন্য কোন ভাষায় জুম্আর খুতবা পাঠ করা মাকরূহ। শ্রোতামণ্ডলীর বোধগম্য হোক বা না হোক, মাতৃভাষায় খুতবা পাঠ করা ঠিক হবে না। কারণ, ফিক্বাহ্ শাস্ত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, খুতবা নামাযেরই মত একটি ইবাদত বিশেষ।
আর একথা বলাই বাহুল্য, ইবাদতের মধ্যে অর্থ বোধগম্য হওয়া যদি লক্ষ্য হয় তাহলে নামাযের সূরা-ক্বিরাত এবং দোয়া-দরূদ ইত্যাদির অর্থ বোধগম্য হওয়া ছাড়া নামাযই বেকার। একথা প্রমাণ করে যে, খুতবা ইবাদত হওয়ার কারণে ‘সালফ’ তথা পূর্বসূরী মনীষীবৃন্দের কাছ থেকে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে ঠিক সেভাবেই আমাদের তা পালন করতে হবে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, সাহাবায়ে কিরামদের মধ্যে অনেক সাহাবা বিভিন্ন এলাকার ও বিভিন্ন ভাষাভাষী ছিলেন। অথচ একটি বর্ণনাও এমন পাওয়া যায় না যে, তাঁরা আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় জুম্আর খুতবা পাঠ করেছেন বা হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে স্থানীয় ভাষায় খুতবা পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন।
সুতরাং উল্লিখিত আলোচানার দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, জুম্আর খুতবা আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় পাঠ করা জায়েয নয়, মাকরূহে তাহরীমী।
(আল্ ফিক্বহিল ইসলামী-২/২৮৯, ইমদাদুল মুফ্তিয়্যীন-১/৩৮৩, ফাত্ওয়ায়ে শামী-২/১৪৭, জাওয়াহির€ল ফিক্বাহ্-১/৩৫২)।
উত্তর দিয়েছেন- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন
মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর-
জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ