।। মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ ।।
পশুপাখি শরিয়তের বিধি-বিধান পালনের ব্যাপারে আদিষ্ট নয়। তথাপি ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার তাগিদে কিয়ামতের দিন পশুপাখিরও পুনরুত্থান হবে। কিয়ামতের দিন চতুষ্পদ জন্তু ও পক্ষিকুলকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে। সেদিন মহান আল্লাহ এমন সুবিচার করবেন যে কোনো শিংবিশিষ্ট জন্তু কোনো শিংবিহীন জন্তুকে দুনিয়ায় আঘাত করে থাকলে তারও প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
যখন তাদের পারস্পরিক অধিকার ও নির্যাতনের প্রতিশোধ নেওয়া সমাপ্ত হবে, তখন আদেশ দেওয়া হবে, ‘তোমরা সব মাটি হয়ে যাও। ’ অতঃপর সব জন্তু তৎক্ষণাৎ মাটির স্তূপে পরিণত হবে। এ সময় কাফিররা আক্ষেপ করে বলবে, ‘হায় আফসোস! আমরাও যদি মাটি হয়ে যেতে পারতাম। ’
দুনিয়ায় জীব-জানোয়ার ও পশুপাখির প্রতি বিধি-নিষেধ আরোপ করা না হলেও আল্লাহর চূড়ান্ত ইনসাফ ও সুবিচারের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে কিয়ামতে তাদের একে অন্যের কাছ থেকে জুলুমের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
পশুপাখিদের পুনরুত্থান বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যত ধরনের প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল এবং যত ধরনের পাখি দুই ডানাযোগে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেকটি শ্রেণি। আমি (আমার) গ্রন্থে কোনো কিছু লিপিবদ্ধ করতে ভুল করিনি। অতঃপর সবাই তাদের রবের কাছে সমবেত হবে। ’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৩৮)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন বন্য পশুদের (হাশরের মাঠে) সমবেত করা হবে। ’ (সুরা : তাকবির, আয়াত : ৫)
কাতাদা (রহ.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এসব সৃষ্টজীবকে কিয়ামতের দিন মানুষের সঙ্গে পুনরুত্থিত করার পর আল্লাহ তাআলা যেভাবে চান সেভাবে তাদের মধ্যে বিচার-ফায়সালা করবেন। ’
পশুপাখিদের পুনরুত্থানের বিষয়টি সহিহ হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক পাওনাদারকে তার পাওনা চুকিয়ে দিতে হবে। এমনকি শিংবিশিষ্ট বকরি থেকে শিংবিহীন বকরির প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৭৪)
সুতরাং এ আলোচনা থেকে জানা গেল, হাশরের ময়দানে পশুপাখির পুনরুত্থান হবে। এগুলোর মধ্যে বিচারকার্য সংঘটিত হবে। তারপর আল্লাহর হুকুমে তারা আবার মাটিতে মিশে যাবে।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম