।। মুফতি মাহমুদ হাসান ।।
সাহাবায়ে কিরামের সংস্রবপ্রাপ্ত শাগরেদ তথা তাবেয়িদের যুগ থেকেই হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য সনদ-সূত্রও উল্লেখ করার ধারা চালু ছিল। নির্ভরযোগ্য সনদ ছাড়া হাদিস গ্রহণের প্রশ্নই অবান্তর ছিল। এ জন্যই হাদিস শরিফের সংরক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে বর্ণনাকারীদের পূর্ণ ধারা বিস্তারিত বিবরণসহ সংরক্ষিত ও সংকলিত হয়েছে। সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে যাঁদের সূত্রে একটিমাত্র হাদিসও বর্ণিত হয়েছে, তাঁদেরও নামধাম, পরিচয় সংরক্ষিত।
তাঁদের সর্বমোট সংখ্যা দেড় হাজারের কিছু বেশি। (তাজরিদু আসমাইস সাহাবা—জাহাবি)
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) ‘মুসনাদে আহমদ’ গ্রন্থে ৯০৪ জন সাহাবির মুসনাদ সংকলন করেছেন। মুসনাদে বাকি ইবনে মাখলাদ-এর তালিকা থেকে জানা যায় যে অতিরিক্ত আরো ৫৬৮ জন সাহাবির মুসনাদ তাতে (মুসনাদে বাকিতে) সংকলিত হয়েছে। অতঃপর হাফেজ আবু বকর বারকি (ওফাত ২৭০ হিজরি) সেই তালিকায় আরো ৮৭ জন সাহাবির নাম যোগ করেছেন। আল্লামা ইবনুল জাওজি (ওফাত ৫৯৭ হিজরি) বিভিন্ন উৎস থেকে যোগ করেন আরো ছয়জন সাহাবির নাম। সর্বমোট সংখ্যা তা-ই দাঁড়ায়, যা হাফেজ জাহাবি (রা.) (ওফাত ৭৪৮ হিজরি) বলেছেন, অর্থাৎ দেড় হাজারের কিছু বেশি—এক হাজার ৫৬৫।
আরও পড়তে পারেন-
- ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামের নির্দেশনা
- কিশোর অপরাধ রোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
- আদর্শ পরিবার গঠনে যে সব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরী
- ইসলামে সামাজিক সম্পর্ক এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার গুরুত্ব
- মানুষ মারা যাওয়ার পর, তাঁর আত্মার কি হয় ?
প্রসঙ্গক্রমে বলা প্রয়োজন যে যাঁদের সূত্রে অল্পসংখ্যক হাদিস বর্ণিত হয়েছে এর অর্থ এই নয় যে তিনি স্বল্প পরিচিত বা স্বল্প মর্যাদার অধিকারী। অনেক বদরি সাহাবি থেকেও শুধু দু-একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাঁদের বর্ণনা কম হওয়ার কারণ হলো নবী (সা.)-এর উদ্ধৃতিদানে সতর্কতা। প্রয়োজন ছাড়া হাদিস শরিফ বর্ণনা করা সাহাবায়ে কিরামের নীতি ছিল না।
ইলমের প্রচারের বিষয়ে তাঁরা যেমন সচেতন ছিলেন, তেমনি নবী (সা.)-এর উদ্ধৃতি দেওয়াকেও তাঁরা অত্যন্ত কঠিন দায়িত্বের বিষয় বলে মনে করতেন। এ জন্যই দেখা যায় যে তুলনামূলক বেশি হাদিস তাঁদের সূত্রেই বর্ণিত হয়েছে, যাঁরা বয়স বেশি পেয়েছেন। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে নবী (সা.)-এর পয়গাম পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাঁদের ওপর এসে গেছে কিংবা যাঁরা কোনো অঞ্চলে শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন কিংবা বিচার বা শাসনভার যাঁদের ওপর অর্পিত হয়েছে, অথবা হাদিস শরিফের বর্ণনাকেই যাঁরা জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম