মুহাম্মাদ এমদাদুল্লাহ: ক্যালিগ্রাফি দিন দিন বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। সাধারণ মানুষের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে নিত্যদিন। আরবী ও বাংলা ক্যালিগ্রাফি ব্যাপকভাবে মুসলিম তরুণ- তরুণীদের শিল্পচর্চা হয়ে ওঠছে।
ইতিহাসবিদদের তথ্য মতে জানা যায়, মুসলমানদের আগমনের পূর্ব হতে আরব অঞ্চলে ক্যালিগ্রাফির চর্চা ছিল প্রচুর। মক্কা নগরীতে আরবি লিপির প্রথম প্রচলন করেন বিশর ইবনে আবদুল মালিক আল কিন্দি। শুরুর দিকে কুরআনের লিপি আজকের দিনের মত এত সুন্দর ও পরিপাটি ছিল না। ক্যালিওগ্রাফি যেমন প্রতিনিয়ত তার অতীত সৌন্দর্যকে ছাড়িয়ে যায়, ঠিক তেমনি নতুনত্ব খুঁজে পায় নতুন শিল্পের ছোঁয়ায়।
ক্যালিগ্রাফার তরুণী উমামা সালসাবিল রিনাম। বাড়ি চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদে। পরিবারের বড় মেয়ে। বর্তমান তিনি পড়া-লেখা করছেন আইআইইউসির ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টে। তার সাথে কথা বলে জানতে পারি, তিনি ছোট থেকে রঙের তুলি দিয়ে ক্যানভাসে, পেপারে বা দেয়ালে যখন যা হাতের কাছে পান, আঁকাআঁকি করতেন।
তার ক্যালিগ্রাফি জগতে আসার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, একসময় ছবি অঙ্কন করতাম। যখন জানতে পারলাম প্রাণির ছবি অঙ্কন হারাম, তখন এ কাজ ছেড়ে দেই। কোন একদিন ফেসবুকের টাইমলাইনে আমার চোখে পড়ে আরবী ক্যালিগ্রাফির ছবি। সে ছবিটি দেখে আমার মনে অনেক ভালোলাগা কাজ করে। আমি একসময় ঝুঁকে পড়ি আরবীর প্রতি। আরবী লেখা শিখার চেষ্টা করি এবং চেষ্টা অব্যাহত রাখি।
তিনি বলেন, পড়া-লেখার পাশাপাশি অবসর সময়ে রঙের কাজ কিংবা ক্যালিগ্রাফি করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করি। রঙের তুলির আঁচড়ে সাত রঙের খেলায় মেতে থাকি অবসর সময়গুলোতে, বাকি সময়টা পড়া-লেখা নিয়ে কাটাই।
জানা যায়, তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে জাতীয় ও স্থানীয় স্তরের বিভিন্ন ক্যালিগ্রাফি কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করে পদক ও সাফল্য নিয়ে ঘরে ফিরেন একের পর এক।
তিনি বলেন, আমি সবচেয়ে আনন্দিত হই যখন নতুনত্বের কিছু শিখতে পারলে। নতুনত্বের যে কোন কিছু দেখলে তা শেখার চেষ্টা করি। আর শেখার শেষ নেই। জন্মের পর যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, তখন থেকে শিখছি তো শিখছিই। এই শেখার ধারাবাহিকতায় আমার জীবনে নতুন নতুন যোগ্যতা যোগ করতে চাই।
তিনি আরো যোগ করে বলেন, আমি ক্যালিগ্রাফি জগতে পা দিতে গিয়ে পরিচিত হয় অনেক গুরু ও খ্যাতনামা শিল্পীদের সাথে। যাদের সংস্পর্শে পেয়েছি অনেক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা। যাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের খ্যাতনামা শিল্পী মাহবুব মুর্শিদ স্যার ও জনাব সেকান্দর মেহেদি এবং বাংলাদেশে তরুণ ক্যালিগ্রাফার জনাব মোল্লা হানিফ এর মতো অনেক সম্মানিত মানুষের সান্নিধ্যে পেয়েছি।
তিনি বলেন, এখন আমি বাংলা ক্যালিগ্রাফি শিখছি। তবে বাংলার চেয়ে আরবী ক্যালিগ্রাফির প্রতি বেশি মন টানে আমার। কুরআনের প্রতিটি অক্ষর যেন মনের মাধুরি মিশিয়ে নিজের শিল্প দিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। সকলের দোয়া চাই, এভাবে যাতে কাজ করে যেতে পারি।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ