করোনাভাইরাসের যে সব টিকা বর্তমানে প্রচলিত আছে – এগুলো অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিতদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া থেকেও রক্ষা করতে পারবে বলে বলছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন কর্মকর্তা।
এর আগে প্রাথমিক ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় আভাস পাওয়া গিয়েছিল যে – দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত এই অমিক্রন নামের নতুন নতুন ধরনটি ফাইজারের টিকাকে আংশিকভাবে এড়িয়ে যেতে পারে।
গবেষকরা বলেছেন, টিকা থেকে সৃষ্ট এ্যান্টিবডি অমিক্রনকে যতটা নিষ্ক্রিয় করতে পারে – তার মাত্রায় “খুব বড় পতন” দেখা গেছে।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি পরিস্থিতি সম্পর্কিত পরিচালক ড. মাইক রায়ান বলেছেন, টিকাকে ফাঁকি দেবার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর চেয়ে অমিক্রন বেশি দক্ষ – এমন কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না।
এএফপি বার্তা সংস্থাকে ড. রায়ান বলেন, করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ঠেকানোর ক্ষেত্রে “আমাদের হাতে অত্যন্ত কার্যকর টিকা আছে যা এখন পর্যন্ত সকল ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে”।
তিনি বলেন, অমিক্রনের ক্ষেত্রেও যে তাই হবে না এমন মনে করার কোন কারণ নেই।
ড. রায়ান বলেন, প্রাথমিক উপাত্তে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে ডেল্টা বা অন্যান ধরনের তুলনায় অমিক্রন যে মানুষকে বেশি অসুস্থ করে তা নয়।
“বরং অসুস্থতা যে অপেক্ষাকৃত কম সেই ইঙ্গিতই মিলছে” – বলেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই নতুন জরিপটি এখনো অন্য বিজ্ঞানীদের দ্বারা যাচাই করানো হয়নি। তবে এতে দেখা গেছে যে করোনাভাইরাসের মূল ধরনটির বিরুদ্ধে ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার ফলে যে পরিমাণ এ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল, অমিক্রনের ক্ষেত্রে তা ৪০ গুণ পর্যন্ত কম হতে পারে।
এ গবেষণার নেতৃত্বদানকারী আফ্রিকা হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভাইরোলজিস্ট অধ্যপক এ্যালেক্স সিগাল বলেন, টিকাকে ফাঁকি দেবার যে ক্ষমতা অমিক্রনের আছে তা “অসম্পূর্ণ।”
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, যারা আগে সংক্রমিত হয়েছেন এবং পরে টিকা বা বুস্টার নিয়েছেন তারা হয়তো অমিক্রনে গুরুতর অসুস্থতার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাবেন। অমিক্রনের বিরুদ্ধে ফাইজারের টিকা কতটা ভালোভাবে কাজ করে – তার সম্পর্কে আরো উপাত্ত আগামীতে পাওয়া যাবে।
মডার্না, জনসন এ্যান্ড জনসন বা অন্যান্য টিকাগুলো অমিক্রনের বিরুদ্ধে কত কার্যকর – তা নিয়ে এখনো উল্লেখযোগ্য উপাত্ত পাওয়া যায় নি।
করোনাভাইরাসের বর্তমান ডেল্টা ধরনটির চেয়ে অমিক্রন বেশি সংক্রামক হতে পারে – এমন আভাস পাওয়া গেলেও এটির গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টির ক্ষমতা কতটা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অমিক্রন এখন বিশ্বের ৫৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এক সাপ্তাহিক রিপোর্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এটি যত ছড়াবে, হাসপাতালে সেবা নিতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা তত বাড়বে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক মাইকেল রায়ান বলছেন, প্রাথমিক ইঙ্গিত থেকে মনে হচ্ছে অমিক্রন অনেক বেশি দ্রুত ছড়ায় – তবে সম্ভবত এটি আগের ধরনগুলোর তুলনায় কম বিপদজনক।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ড. এ্যান্টনি ফাউচিও বলেছেন, প্রাথমিক আভাসে মনে হয় অমিক্রন হয়তো বেশি সংক্রামক হলেও ‘কম মারাত্মক’ হতে পারে।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ