প্রশ্ন: চট্টগ্রামের অধিকাংশ জায়গায় প্রথা আছে যে, বিবাহের পর মেয়ে পক্ষকে বরের জন্য যৌতুক দিতে হয়। তিরস্কারের ভয়ে কিংবা বাধ্য হয়ে অনেকেই যৌতুক দিয়ে থাকে। এটা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না?
উল্লেখ্য যে, সীরাতুন্নবী (সা.) নামক গ্রন্থে আছে, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যা ফাতেমা (রাযি.)কে চামড়ার তোষক ও পানির মশক দিয়েছিলেন। (সীরাতুন্নবী- ২/৬৪৪)। অনুরূপ ঘটনা আল ইসাবা ফী তাময়ীযিস সাহাবা গ্রন্থের ৮/৫৮ পৃষ্ঠায়ও বর্ণিত আছে। যথা-
অতএব, আপনাদের সমীপে আরয এই যে, উপরোক্ত ঘটনার সঠিক ব্যাখ্যা ও সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।
— আতাউর রহমান, সিলেট।
উত্তর: যে কোনো ব্যক্তির জন্য অপরের সম্পদ গ্রহণ ও ভোগ করা তখনই বৈধ হবে, যখন সে স্বেচ্ছায় সন্তুষ্টচিত্তে তা প্রদান করবে। জোর-জবরদস্তিপূর্বক প্রদত্ত সম্পদ গ্রহণ ও ভোগ করা জায়েয নয়। হযরত আনাস (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন-
‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কারও জন্য গ্রহণ বৈধ হবে না’ (সুনানে দারাকুতনী, হাদীস- ২৮৮৫)।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
বর্তমানে কনে পক্ষ থেকে বরকে বা বর পক্ষকে বিভিন্ন উপঢৌকন দেয়া সামাজিক প্রথায় পরিণত হয়েছে এবং অনেকে সামাজিক চাপে পড়েই এসব দিয়ে থাকেন। না দিলে কনেকে অত্যাচার ও বিড়ম্বানায় পড়তে হয়। এ সবই দাতার সন্তুষ্টির অনপুস্থিতির লক্ষণ। তাই বর পক্ষের জন্য এভাবে কোনো উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়েয নয়। অবশ্য যদি সামাজিক কোনো চাপ না থাকে এবং সন্তুষ্টচিত্তে দেয়া হচ্ছে এর পূর্ণ আলামত থাকে, তাহলে এ ধরনের প্রদত্ত সম্পদ গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই। প্রশ্নে উদ্ধৃত বর্ণনাগুলো এ প্রকারে শামিল। এছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রাযি.) এর অভিভাবক ছিলেন। অভিভাবক হিসেবে ঘরের প্রয়োজনীয় কিছু আসবাবপ্রত্র দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে বর্তমানে সামাজিক চাপে পড়ে কনে পক্ষ থেকে প্রদত্ত ব্যয়বহুল আসবাবপ্রত্র গ্রহণ করা বা আদায় করা বৈধ বলা যাবে না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস-৮৫৩, সুনানে নাসায়ী, হাদীস- ৩৩৮৪, রদ্দুল মুহতার- ৩/১৫৬)।
[সূত্র- মাসিক মুঈনুল ইসলাম, ৯০২৬নং ফতোয়া]
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ