গত এক বছরেরও অধিক সময় ঢাকা শহরে সিএনজি আর রিকশায় চলাচল করছি। এই দুইটাই পুরো শহরে সহজলোভ্য, আর ডিস্টেন্স মেইন্টেনের জন্য উপযোগী। তো ঢাকা শহরের জ্যামে বসে বসে সময় নষ্ট না করে একটা ছোট্ট হিসাব রাখার চেষ্টা করলাম।
প্রতিদিন যে রিকশায়/সিএনজি তে উঠি তাদের লাইফস্টাইল খোঁজার একটা ছোট্ট চেষ্টা। আমার উদ্দেশ্য রিকশাচালক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে মাদকাসক্ত এর (উচ্চ বা মধ্যম পর্যায়ের) হার খুঁজে বের করা। যদিও আমি ফিমেল বা পর্দা করার কারণে সবাই সব তথ্য দিতে কম্ফোর্ট ফিল করেনি সবসময়, তবুও লকডাউন থেকে শুরু করে প্রায় প্রতি মাসেই ৫-৬ জনকে ইন ডিটেইল রেসপণ্ডেন্ট হিসেবে পেয়েছি।
আরও পড়তে পারেন-
- উলামায়ে কেরামের প্রতি মুফতি শফী (রাহ.)এর দরদমাখা নসিহত
- কম্পিউটার চিপ শিল্প: জলবায়ুর উপর ফেলছে ভয়ঙ্কর প্রভাব
- ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করে ইসরায়েল
- ব্যতিক্রমী এক ইসলামী আইন গবেষক
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
আমি সাধারণত নিজের ও অন্যের সেফটির কথা মাথায় রেখেই বাহনে উঠি, অত্যাধিক আসক্তদের চোখ ও কথাবার্তা দেখে চেনা যায় তাদের এভয়েড করি। এটা এই গবেষণার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা ছিল।
তো আমার এই দেড় বছরের ফাইন্ডিংস হল-
- রিকশাচালকদের মাদক গ্রহণের হার বেশি
- ৮৭ শতাংশ চালক একবার হলেও মাদকদ্রব্য গ্রহণ করেছে।
- ৩৩ শতাংশ রেগুলার মাদক গ্রহণ করে।
- ৯১ শতাংশ এক্যুট ধূমপায়ী।
- সবচেয়ে বেশি হার ১৬-৩৫ বছরের চালক এর মধ্যে।
- লকডাউনের আগের চেয়ে লকডাউনের পরে মাদকসেবী ও সেবনের হার বেড়েছে।
- ইয়াবা গ্রহণের হার বেশি।
ব্যস্ততার কারণে এটার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে না। ভীষণ চিন্তার বিষয়, ঢাকা শহরে এইসব চালক শুধু নিজেদের জন্য না, আমাদের সকলের জন্যই দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এদের ডোপ টেস্টের (সঠিক ফলাফল, ম্যানিপুলেটেড না) মাধ্যমে অনুমতি দেয়া কর্তৃপক্ষের অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব হয়ে উঠেছে।
ঢাকা শহরে জরুরি ভিত্তিতে স্ক্রুনিং শুরু করা উচিত। ভাবছিলাম অনেক নীতি-নির্ধারকের মাথায় বিষয়টা আছে। আর দিনশেষে শুনলাম নীতি-নির্ধারক মহল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডোপ টেস্ট নিয়ে লম্ফঝম্ফ চলছে!!!
শুনে কিছুদিন তব্দা ছিলাম, ভাবছিলাম ঢাবি তো পরের বিষয়, প্রথমেই চালকদের সাথে আর কার কার ডোপ টেস্ট করা দরকার!!!😢😢😢
লিখেছেন- রিতু কুণ্ডু
সহযোগী অধ্যাপক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ