আজ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার। দিনটি বিশ্ব দাড়ি দিবস হিসেবে পালিত হয়। ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডারের তথ্য মতে ২০১০ সাল থেকে দিনটির যাত্রা শুরু।
দাড়ি ইসলামী রীতিনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। নারী-পুরুষের মুখাবয়বের অন্যতম পার্থক্য এ দাড়ি। এটি আল্লাহর সৃষ্টিগত ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্যের চমৎকার বিভাজন। আবশ্যকীয় ধর্মীয় বিধিবিধানের পাশাপাশি এ দাড়ির রয়েছে স্বাস্থ্যগত ও বৈজ্ঞানিক নানা উপকারিতা।
কোরআন-হাদিসে দাড়ি রাখার নির্দেশনা : রাসুল (সা.)-এর প্রতিটি হাদিস মুমিনের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মান্য করো এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত: ২০)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘রাসুল তোমাদের যা আদেশ দেন, তা গ্রহণ করো এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো এবং আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সুরা : হাশর, আয়াত : ৭)
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
তাই দাড়ি রাখা নিয়ে রাসুল (সা.)-এর আদিষ্ট হাদিসগুলো উম্মতের জন্য আমল করা অপরিহার্য। এখানে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো:
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) গোঁফ নিশ্চিহ্ন করতে, আর দাড়ি বড় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬২৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা গোঁফকে কর্তন করো এবং দাড়িকে লম্বা করো। তোমরা অগ্নিপূজকদের বিপরীত করো। (মুসলিম, হাদিস : ৬২৬)
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘স্বভাবগত কাজ হলো ১০টি। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, নখ কাটা, হাত ও পায়ের আঙুলের গিরাগুলো ধৌত করা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নিচের চুল মুণ্ডানো, ইসতেনজা করা, কুলি করা।’ (মিশকাত, পৃষ্ঠা ৪৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দ্বিনের স্বভাবগত কাজ হলো পাঁচটি—১. খতনা করা, ২. নাভির নিচের পশম মুণ্ডানো, ৩. গোঁফ খাটো করা, ৪. নখ কাটা, ৫. বগলের পশম উপড়ে ফেলা।’ (সুনানে নাসাঈ, পৃষ্ঠা ৭, মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৫৭, আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ৪১৯৮)
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবা (রা.) বলেন, জনৈক অগ্নিপূজক আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে এসেছিল। তার দাড়ি মুণ্ডানো ছিল ও গোঁফ লম্বা ছিল। আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, ‘এটা কী?’ সে বলল, ‘এটা আমাদের ধর্মের নিয়ম।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘কিন্তু আমাদের দ্বিনের বিধান, আমরা গোঁফ কর্তন করব ও দাড়ি লম্বা রাখব।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২৬০১৩)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) গোঁফ নিশ্চিহ্ন করতে, আর দাড়ি বড় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬২৪)
দাড়িকে কটাক্ষ করা পাপ : ইসলামের কোনো বিধান, ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কিত সাধারণ কোনো বিষয়, নবীজির কোনো সুন্নত, এমনকি প্রমাণিত কোনো মুস্তাহাব আমলের প্রতি অবজ্ঞাসূচক বাক্য ব্যবহার করা বা কোনো আচরণ করা কুফরি। ফতোয়ায়ে আলমগিরিতে এসেছে, ‘ব্যঙ্গবিদ্রুপকারী যদি ইসলামের কোনো বিধানকে হালকা মনে করে উপহাস করে এবং অস্বীকারমূলক শব্দ ব্যবহার করে, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে, যদিও আন্তরিক বিশ্বাস এর বিপরীত হয়।’ (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ২/৩৭৬)
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ