জাপানের মুসলিমরা তুরস্কের এক আলেমকে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি হলেন শায়খ নেয়ামতুল্লাহ খলিল ইবরাহিম খাজা (রহ.)। যিনি জাপানসহ বিশ্বের ৫৫টি দেশে ইসলাম প্রচার করছেন। জাপান, কোরিয়া ও ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের হাজার-হাজার লোক তাঁর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। গত ৩০ জুলাই তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি হাসপাতালে তিনি ৯০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেছেন।
নেয়ামাতুল্লাহ খাজা জাপানের ছোট-বড় অসংখ্য মসজিদ চালু করেছেন। জাপানের অসংখ্য মানুষ তাঁর মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি ছয়টি ভাষায় সমান পারদর্শী ছিলেন। তুর্কি, আরবি, ফার্সি, উর্দু, জাপানি ও ইংরেজি ভাষার দক্ষতাকে তিনি ইসলামের শিক্ষা প্রসারে ব্যয় করেন।
জাপানের ইসলামিক ওয়াকফ এসোসিয়েশনের প্রধান হারুন কারশি বলেন, শায়খ নেয়ামতুল্লাহ ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের বিশাল অংশ কাটে জাপানের রাজধানীতে। জাপানের আত্মহত্যাপ্রবণ অসংখ্য মানুষকে তিনি ইসলামের সঙ্গে পরিচিত করেন। তাদের তিনি শান্তিপূর্ণ জীবনের সন্ধান দেন। জাপানে একটি ইসলামী স্কুল প্রতিষ্ঠা করা ছিল তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ২০১৭ সালে পাকিস্তানি মুসলিমদের মাধ্যমে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
টোকিও মসজিদের মিডিয়া বিষয়ক কর্মকর্তা শিমোয়ামা শিগেরু বলেন, শায়খ নেয়ামাতুল্লাহর মৃত্যু বিশ্বের মুসলিমদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। জাপানের মুসলিমরা আজীবন তাঁকে স্মরণ করবেন। তিনি জাপানের কিউশু থেকে হোক্কাইডো দ্বীপসহ জাপানের আনাচে-কানাচে তিনি ইসলামের আলো ছড়িয়েছেন।
লন্ডনের তুর্কি দূতাবাসের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ও টোকিও মসজিদের সাবেক ইমাম আনসারি ইয়ানতুর্ক বলেন, শায়খ নেয়ামাতুল্লাহ টোকিও মসজিদের মুআজ্জিন ছিলেন। তখন তিনি জাপানের তরুণদের মধ্যে ইসলামের পরিচিতি তুলে ধরেন এবং তাদেরকে হতাশা থেকে জীবনের সার্থকতা তুলে ধরেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে মানুষকে বলতেন, আপনি কি সুখী মানুষের কথা বলতে চান? কেউ ইতিবাচক উত্তর দিলে তিনি তাকে কালেমা তাওহিদ পড়তে বলতেন। এভাবে মানুষের অন্তরে তিনি জায়গা করে নেন। বিশেষত জাপানের অভিবাসী মুসলিমদের সঙ্গে তিনি গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেন।
শুধু তাই নয়, তিনি জাপানিদের কাছে অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। মানুষের আচার-বিশ্বাসের পরিবর্তন অনেক কঠিন। তবে তিনি বিশ্বাস করতেন যে দীর্ঘ শিক্ষা-দীক্ষার কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ইসলাম প্রচারিত হবে। তাই তিনি একনিষ্ঠভাবে মানুষের মধ্যে দাওয়াতের কাজ করতেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ