গত মার্চে কোভিড-১৯ এর টিকা নেন এক ব্যক্তি। কিন্তু গত মঙ্গলবার তার নাক দিয়ে সর্দি পড়তে শুরু করে। তারপর শুরু হয় তীব্র মাথাব্যথা আর শরীর ব্যথা। নির্ঘুম রাত। ডাক্তার বলেন, ফ্লু হয়েছে হয়তো। তবে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন তিনি। ফল আসে পজিটিভ।
ওই ব্যক্তির ভাষ্য, টিকা নেওয়ার পরও যে করোনায় আক্রান্ত হবেন, তা ভাবতে পারেননি। তবে টিকা কাজ করেছে। তিনি বলেন, ‘টিকা নেওয়ার আগে কোভিডে আক্রান্ত হলে লোকে যেরকম ভুগত, আমাকে তেমন ভুগতে হয়নি।’
‘ব্রেকথ্রু ইনফেকশনে’র’ ঘটনা দুর্লভ
পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়ার পরও যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে কী করবেন?
ডাক্তাররা বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে প্রত্যাশামাফিক টিকা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকিও কমায় টিকা।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খুব কম হলেও একেবারে অসম্ভব নয়।
এ ধরনের দুর্লভ আক্রান্তের ঘটনাকে বলা হয় ‘ব্রেকথ্রু ইনফেকশন’। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আমেরিকাতেই ৪৬টি রাজ্যে এরকম ১০ হাজার মানুষ টিকা নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
টিকা নেওয়া ব্যক্তি করোনা পজিটিভ হলে কী করবেন?
পূর্ণ ডোজ টিকা নেওয়া কারও মধ্যে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে তাকে বাকিদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে। মার্কিন ডাক্তার গ্যালিয়া বলেন, কেউ করোনা পজিটিভ হলে তাকে ২০ দিনের জন্য আইসোলেশনে রাখতে হবে।
টিকা নেওয়া কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে, এর বিকল্প নেই।
করোনা আক্রান্তের পরিবারের সদস্যরা কী করবেন?
আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাড়ির মধ্যে আলাদা ঘরে থাকতে হবে। সম্ভব হলে আলাদা বাথরুম ব্যবহার করতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
এই কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে—এমনকি যদি কোনো উপসর্গ দেখা না-ও দেয়—টিকা না নেওয়া ব্যক্তির মধ্যেও ভাইরাস যেতে পারে।
আরও পড়তে পারেন-
- প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ্ সম্পর্কে শরয়ী বিধান
- ইসলামের আলোকে নারীর কর্মপরিধি
- সালাম: উম্মাহর ঐক্য ও সংহতি রক্ষার অন্যতম বাহন
- বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ: বাস্তবতা ও অপপ্রচার
- সকালের ঘুম যেভাবে জীবনের বরকত নষ্ট করে
মানুষের হাঁচি-কাশি কিংবা কথা বলার সময় নিঃসৃত অর্ধতরল ‘ড্রপলেটে’র মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়। বাড়ি বা কর্মস্থলে একই জায়গা ব্যবহার করলে সেই বদ্ধ স্থান থেকেও নিশ্বাসের সঙ্গে নিঃসৃত ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়।
তবে টিকা নেওয়া ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে নিঃসৃত ড্রপলেট খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। এমনকি এতে আক্রান্তের সম্ভাবনাও খুব কম।
বাড়িতে ফ্যান চালিয়ে, দরজা-জানালা খোলা রেখে তাজা বাতাস চলাচল করতে দিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। আর কোয়ারেন্টিনকালে একজনের বাসনকোসন, গ্লাস-কাপ, তোয়ালে আরেকজন ব্যবহার করতে পারবেন না।
ব্রেকথ্রু উপসর্গ কতটা গুরুতর
টিকা নেওয়া ব্যক্তির মধ্যে অতি সামান্য উপসর্গ দেখা যেতে পারে। আবার কখনও কখনও কোনো উপসর্গই দেখা দেয় না।
সবচেয়ে গুরুতর উপসর্গের মধ্যে আছে নাকে রক্ত জমা ও হালকা শরীর ব্যথা।
টিকা নেওয়ার পরও আক্রান্তের ঘটনা কি নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠবে?
আরেকজন ডাক্তার ড. সিয়ো-পেনা বলেন, এমন আশঙ্কা কম। মাঝেমধ্যে টিকা নেওয়া ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার কথা শোনা যেতেই পারে।
তবু ডাক্তাররা টিকা নেওয়ার জোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, টিকা খুব ভালো সুরক্ষা দেয় এবং টিকা নিয়ে প্রায় স্বাভাবিক কাজকর্মে ফেরা যায়। প্রায় সর্বত্র চলাফেরা করা যায়, অনেকটা মহামারিপূর্ব অবস্থার মতো।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ