।। মুফতি আবদুল্লাহ নাজীব ।।
বিচক্ষণ ব্যক্তিমাত্রই জানেন, কাজ আঞ্জাম দেওয়াই সফলতা নয়। প্রকারান্তে কাজ শেষ হলেই কামিয়াবী অর্জিত হবে তাও নয়৷ বরং কাজে সফলতা ও কামিয়াবির জন্য প্রয়োজন নিপুণতা, দক্ষতা ও যথার্থতা৷
ইসলামে বিষয়টি আরও বহু গুরুত্ববহ। ইসলাম যেমন দুর্বল ও অলস মুসলিম পছন্দ করে না, তেমনি অপূর্ণাঙ্গ ও অযথার্থ কাজেরও অনুমোদন দেয় না। তাই ইসলাম প্রতিটি কাজে নিপুণতা ও যথার্থতা বজায় রাখার দিকটি আবশ্যক করে দিয়েছে ৷
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- إن الله كتب الإحسان على كل شيءٍ অর্থাৎ- আল্লাহ তাআলা প্রতিটি বিষয়ে ইহসানকে (নিপুণতা ও পূর্ণাঙ্গতা) আবশ্যক করেছেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ৫১৬৭)।
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে রজব হাম্বালী বলেন-
হাদীসটিতে মানুষের যাবতীয় কাজে ইহসানকে আবশ্যক করা হয়েছে। তবে প্রত্যেক কাজের ইহসান স্বতন্ত্র ও ভিন্ন। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য অবশ্যকরণীয় আহকামসমূহ পূর্ণাঙ্গতার সাথে আদায় করা অত্যাবশ্যক। এ পরিমাণ ইহসান উক্ত আমলসমূহে ওয়াজিব। (জামিউল উলূমি ওয়ালহিকাম)।
আরও পড়তে পারেন-
- সাদকায়ে ফিতরের মাসাইল
- রমজানে মুমিনের প্রতিদিনের আমল
- মাহে রমযানের সিয়াম সাধনা ও তার আহকাম
- রমযান মু’মিনের জন্য কী প্রতিফল বয়ে আনে?
- ইসলামে শাসক ও শাসিতের পারস্পরিক হক
হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি আরেক হাদীসে ইরশাদ করেন- إن الله يحب إذا عمل أحدكم عملا أن يتقنه ‘আল্লাহ তাআলা বান্দার সুনিপুন ও পূর্ণাঙ্গ কাজকে ভালোবাসেন’। (হাদীস হাসান, মুসনাদে আবু ইয়া’লা- ৪৩৮৬, আলমুজামুল কাবীর, তাবারানী- ৭৭৬, শুআবুল ঈমান-বায়হাকী- ৪৯২৯)। এ হাদীসের সমর্থনে আরো বহু হাদীস রয়েছে৷
ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে এ নীতির বিকল্প নেই৷ এ নীতি বর্জনের দরুণ মুসলিম উম্মাহর আজ এত বহুবিধ সংকট ও পতন্মুখ পরিস্থিতি ।
হাদীসে বর্ণিত ইহসান ও ইতকান এখনও আমরা আমাদের কাজে-কর্মে প্রমাণ করতে পারছি না ; যা অত্যন্ত দু:খজনক ও হতাশার।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সুবোধ, উপলব্ধি দান করুন৷ বিলুপ্ত হওয়া সেই আসমানী নীতির পুনর্জাগরণের তাওফীক দান করুন। আমীন।
লেখক: উসতায, উলূমুল হাদীস ও দাওয়াহ বিভাগ, আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম-হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ