দীর্ঘ চার দশক ধরে মরদেহ দাফনের দায়িত্ব পালন করছেন ফিলিস্তিনি বৃদ্ধ জাদুল্লাহ। ৮২ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবা হিসেবে এ কাজ করেন। বিনিময়ে কোনো ফি নেন না তিনি। বরং সেবা নিশ্চিত করতে সর্বদা তিনি কবরস্থানের ভেতর অবস্থান করেন। তাই অনেকে তাঁকে ‘মৃতদের বন্ধু’ বলে ডাকেন। এমন কি মরদেহের গোসল ও দাফনের কাজ করায় অনেকে তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রাখে।
প্রতিদিন সকালে জাদুল্লাহ মরদেহ দাফনের প্রয়োজনীয় সামগ্রি ক্রয় করেন। বাজারের সবাই তাঁকে হাস্যোজ্জ্বল মুখে সম্ভাষণ জানায়। তাঁর শুভাকাঙ্খীদের নিয়ে প্রতিদিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পন্ন করেন।
গাজা উপত্যকার বাইট লাহিয়া এলাকার কবরস্থানে কাজ করেন জাদুল্লাহ। তিনি বলেন, মরদেহ গোসল দেওয়া ও দাফনকার্য সম্পন্ন করায় আমার দিকে অনেকে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকায়। সব সময় মৃতদের সঙ্গে থাকায় অনেকে আমাকে দেখে ভয় পায়। এসবসত্ত্বেও আমি নিজের কাজ করতে থাকি।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
কবরে মরদেহ রাখার আগে জাদুল্লাহ নিজে তাতে কিছু সময় কাটান। মৃত্যুকে অন্যদের মতো ভয় করেন না। বরং সব প্রাণিকে একদিন মৃত্যু বরণ করতে হবে। তাঁর দৃষ্টিতে কবরে এসে সব মানুষ সমান। এখানে ধনী-দরিদ্র ও সাদা-কালোর মধ্যে কোনো তফাত নেই।
জাদুল্লাহ বলেন, গত ৪২ বছর যাবত এই দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘকাল যাবত অসংখ্য মানুষের মরদেহ গোসল ও দাফন করি। ইসরায়েল যুদ্ধের সময়ের মৃতদের দাফন করেছি। এমনকি নিজের স্ত্রী, ছেলে ও বাবা-মা ও অনেক আত্মীয়-স্বজনকে দাফন করেছি।
মরদেহ দাফন অন্যান্য পেশার চেয়ে ভিন্নতর। এ পেশার সঙ্গে ভারাক্রান্ত মনের অশ্রুভেজা চোখের সম্পর্ক। এ পেশায় এসে আপনাকে স্বজন হারানো ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভের আশায় আজীবন এ দায়িত্ব পালন করে যাব। আমি যেন পরকালে এ কাজের মাধ্যমে পরিত্রাণ পেতে পারি।
সূত্র: টিআরটি।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ