।। আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন ।।
এন্ডোসকপির সংজ্ঞা: লম্বা চিকন একটি পাইপ, যার এক প্রান্তে খুব ছোট আকৃতির ইলেক্ট্রনিক বাতি ও ক্যামেরা থাকে, আর অপর প্রান্তে থাকে মনিটর। ক্যামেরা ও বাল্বযুক্ত মাথাটি গলা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে পাকস্থলীতে পৌঁছানো হয়। ফলে অপর প্রান্তের অর্থাৎ বাইরের মনিটরে পেটের অভ্যন্তরীণ সকল অবস্থা স্পষ্ট দৃশ্যমান হয়। যার সাহায্যে ডাক্তারগণ পেটের রোগ নির্ণয় করতে সক্ষম হন। এটাকে এন্ডোসকপি বলা হয়।
এন্ডোসকপি করলে রোযা ভঙ্গ হবে না
বলাবাহুল্য এন্ডোসকপি করার সময় সাধারণত পাইপটিতে কোন ধরণের মেডিসিন বা তৈল ব্যবহার করা হয় না। আর পাইপসহ যা কিছু ঢুকানো হয় সব বের হয়ে আসে। রোযা ভঙ্গ হওয়ার মূলনীতিতে বলা হয়েছে- বাইর থেকে বস্তু অতিক্রমস্থল দিয়ে প্রবেশ করে পেট বা মস্তিষ্কে স্থির হতে হবে। কিন্তু এন্ডোসকপি করার সময় পাকস্থলীতে বাইর থেকে বস্তু প্রবেশ করে বটে, তবে সেখানে স্থির থাকে না। তাই রোযা নষ্ট হবে না। ফিকহের কিতাবে এ ধরনের বেশ কিছু মাসআলা পাওয়া যায়।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ. বলেন- ‘যদি কোনো সুতার সাথে খাদ্য বেঁধে তা খাদ্যনালীতে প্রবেশ করানে হয়, আর সুতার অন্যদিক তার হাতে থাকে, তাহলে রোযা নষ্ট হবে না। তবে যদি খাদ্যবস্তুটি সুতা থেকে পৃথক হয়ে কণ্ঠনালীতে থেকে যায়, তাহলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবো।’ (আল বাহরুর রায়েক- ২/৪৮৭ পৃষ্ঠা, মাকতাবায়ে যাকারিয়া, দেওবন্দ)।
উল্লিখিত মাসআলা ও এন্ডোসকপির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। মোটকথা, এন্ডোসকপি করলে রোযা নষ্ট হবে না। তবে যদি পাইপের সাথে কোনো ধরনের মেডিসিন বা তৈল লাগানো হয়, যা পেটে থেকে যায়, তাহলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে।
যেমন উল্লিখিত মাসআলাতে রয়েছে- الا اذا انفصل। তবে খাবার পৃথক হয়ে গেলে রোযা নষ্ট হবে যাবে। আবার এন্ডোসকপি করার সময় রক্ত বা ময়লার কারণে পাইপের বাল্ব প্রায়ই ঘোলাটে হয়ে যায়। যার কারণে পাইপের মাধ্যমে পানি দিয়ে ওই বাল্ব পরিষ্কার করতে হয়। এমন হলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। তাই যে ডাক্তার পরীক্ষা করাবেন, তার থেকে জেনে নিতে হবে যে, পাইপের সাথে কোন ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে কিনা বা ভেতরে পানি দেয়ার প্রয়োজন হয়েছে কিনা। উল্লেখ্য, রমযান মাসে এন্ডোসকপি করার প্রয়োজন হলে, যদি সুযোগ থাকে তাহলে ইফতারের পর করা উত্তম।
– মুফতি জসীমুদ্দীন, মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও সহকারী পরিচালক- আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ