।। মাওলানা কামরুজ্জামান শিবলী ।।
জন্মগতভাবে নারী-পুরুষ উভয়েই মানুষ। তবে মানুষ হওয়া সত্ত্বেও এ দু’টি প্রজাতি ভিন্ন প্রকৃতির। আর এই ভিন্নতার কারণেই তাদের কর্মক্ষেত্রও স্বতন্ত্র হওয়াই যুক্তিযুক্ত। কেননা, নারী-পুরুষ এতদুভয়ের মাঝে রয়েছে দৈহিক ও মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য। এ পার্থক্য শুধু ইসলামের দৃষ্টিতেই নয়; বরং বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতেও; যদিও ইলমে তাশরীহ ও দেহ বিজ্ঞানের (ফিজিওলোজী) গবেষণায় বর্তমানে চূড়ান্তভাবেই বলা হচ্ছে যে, নর-নারীর ভেতরে দৈহিক ও মননের দিক থেকে কোনই পার্থক্য নেই। (নারীর দেহ বিজ্ঞান)।
অধ্যাপক ফ্রেশলো তার এক গ্রন্থে লিখেছেন- “দীর্ঘদিন ধরে আমি আধ্যাত্মিক শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা ও দর্শন শাস্ত্র অধ্যাপনা করেছি। আমার শিষ্যদের ভেতরে মেয়েদের সংখ্যাও ছিল যথেষ্ট। কিন্তু, তাদের ভেতরে আমি মেধাশক্তির দৌর্বল্য লক্ষ্য করিনি আদৌ। আমি এ দীর্ঘকালের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা নিয়ে অবশেষে এ সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছি যে, নর ও নারীর মনন শক্তির ভেতরে বিন্দুমাত্রও পার্থক্য নেই।”
উপরোক্ত মত দু’টিকে ভিত্তি করেই দাবী করা হচ্ছে- “দেহ বিজ্ঞানের যেসব বিখ্যাত বিশারদ নারীর শরীর ও মগজ নিয়ে গভীরভাবে গবেষণা চালিয়েছেন, তাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এই যে, জ্ঞানানুশীলনের ক্ষমতা নারী ও পুরুষের সমান।” এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই ইউরোপে নর-নারীর সমানাধিকার মেনে নিয়ে নারী স্বাধীনতাকে সমর্থন করা হয়েছে। ইউরোপে আজ এমন কোন কার্যক্ষেত্র নেই যেখানে পুরুষের সাথে সমান তালে পা রেখে নারীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে না। সেখানে নারী ডাক্তার, নারী অধ্যাপিকা, নারী উকিল, ব্যরিষ্টার, জজ এক কথায় তারা সর্বক্ষেত্রেই পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজেদের সমকক্ষতা প্রমাণ করে চলেছে। যা আমাদের দেশেও বিরাজমান।
নারী সংক্রান্ত এসব মতামত ও দাবী-দাওয়া পড়ে যে কেউ সোজাসুজি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছে যেতে পারেন যে, ধীশক্তিতে নর-নারীর ভেতরে যে মোটেও পার্থক্য নেই, ইউরোপের সুধী সমাজের সর্ববাদী সম্মত মত এটাই। তাই মেনে নেওয়া যায় যে, পুরুষের চাইতে নারী কোন অংশেই হেয় নয়।
আসলে এ হচ্ছে একটা ধোঁকা মাত্র। এই ইন্দ্রজালে আটকা পড়ে গেছে এদেশের নবীনেরা দলশুদ্ধ। এর মূলে রয়েছে তাদের দৃষ্টির সংকীর্ণতা ও জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। যদি এ দু’টো মতের বিপরীত দিকে ইউরোপের বিজ্ঞতম মনীষী যারা বিজ্ঞানের কর্ণদ্বার, প্রবর্তক তাদের ভূরিভূরি অভিমত তুলে ধরা যায়, তাহলে অবশ্যই দেখা যাবে যে, সেখানকার উচুঁদরের শিক্ষাবিদ মহল সেই গাাঁজাখোরী মত আদৌ সমর্থন করেন না; বরং তাদের মতামত সামঞ্জস্যশীল হয় ইসলামের বিধানের সাথে। শুধুমাত্র এখানেই নয়, বরং আমরা যেখানে যে কোন বিষয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করি, সেখানেই দেখতে পাই ইসলামের মতামতের সাথে বিজ্ঞানের ঐকমত্য। এটা ইসলামের সাথে বিজ্ঞানের এক অপূর্ব মিল। যদিও বর্তমানের কতিপয় বিজ্ঞানীরা অজ্ঞতাপ্রস্তুত পবিত্র কুরআন তথা ইসলামী সংবিধানের বিরোধিতা করে।
নারী সম্বন্ধে পবিত্র কুরআনের বিধান হলো, নারীর সৃষ্টি পুরুষের হাড়ের নির্যাস মগজ থেকে। মগজ যেমন হাড়ের তুলনায় নরম, হালকা ও স্বাভাবিক। অনুরূপ এই মগজের সৃষ্টি নারীও পুরুষের তুলনায় নরম, হালকা, নাজুক। পক্ষান্তরে, পুরুষ নারীর তুলনায় শক্তিশালী, কর্মঠ।
আর একথাটিরই বাস্তব রূপরেখার দ্বারোদ্ঘাটিত হয় বিজ্ঞান থেকে; যদিও বর্তমান দেহ বিজ্ঞান একথা প্রমাণ করেছে বলে বলা হচ্ছে যে, নারী-পুরুষে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু একথা আমরা কখনও মেনে নিতে পারি না। বাস্তব যা সত্য তা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে বিনাবাক্যে, অকুণ্ঠচিত্তে। বাস্তব প্রত্যাখ্যান করা অসম্ভব। কেননা, দৈহিক গঠন ও কাঠামোগত দিক থেকে নারী ও পুরুষের মাঝে বিরাট ব্যবধান বা বৈষম্য বিদ্যমান। পুরুষের দৈহিক গঠন কাঠামো অপেক্ষাকৃত সহজ-সরল ও ঋজু, অথচ শক্তিশালী, সবল ও কর্মঠ এবং দুর্বলতা মুক্ত। পক্ষান্তরে নারীর দেহ কাঠামো অপেক্ষাকৃত জটিল, অথচ নরম, নাজুক এবং দুর্বল। পুরুষের শরীর গঠন কাঠামোগত তেমন কোন দুর্বলতা, ত্র€টি বা সীমাবদ্ধতা নেই যেমনটা নারীর আছে। নারীর শরীরের সবচেয়ে বড় এবং গুরুতর ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা হলো তাদের অস্বাভাবিক বক্ষ স্ফীতি। নাজুক ও স্পর্শকাতর গোপনাঙ্গ এবং অস্বাভাবিক আয়তনের নিতম্ব (Waist)। ফলশ্রুতিতে শারীরিক সামর্থ, কলাকৌশল বা নৈপুণ্য তথা শারীরিক পারঙ্গমতা ও পারদর্শিতায় নারী পুরুষের মোকাবেলায় অপারগ। আর এই ব্যাপারটা শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয় বরং পশুপাখী তথা যাবতীয় ইতর প্রাণীর ক্ষেত্রেও সমানভাবে সত্য। যা একেবারেই অনস্বীকার্য। এতো গেল নারী ও পুরুষের মাঝে দৈহিক পার্থক্য। এছাড়াও রয়েছে বিস্তর আভ্যন্তরীণ ও মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য।
নারী ও পুরুষের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য
শারীরিক গঠন কাঠামোগত পার্থক্য ছাড়াও মানসিক ও স্বভাবগত দিক থেকেও নারী ও পুরুষের মাঝে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। আর এ পার্থক্য শুধু মানুষ নয় বরং ইতর প্রাণী নির্বিশেষে সকল ক্ষেত্রেই বিদ্যমান। পুরুষ যেখানে সাহসী, নারী সেখানে ভীরু। সাহসিকতা, শৌর্য-বীর্য, বীরত্ব ও পৌরুষ পুরুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট; আর ভীরুতা, আÍবিশ্বাসহীনতা, পরনির্ভরশীলতা ও লজ্জা নারীর ভূষণ।
পুরুষ যেখানে বেপরোয়া ও কাণ্ডজ্ঞানহীন, নারী সেখানে কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বশীল। পুরুষ যেখনে চঞ্চল ও উগ্র, নারী সেখানে শান্ত ও নমনীয়। পুরুষের আচরণ যেখানে ধ্বংসাত্মক, নারীর আচরণ সেখানে গঠনমূলক। পুরুষ যেখানে অসহিষ্ণু, আত্মকেন্দ্রিক, নারী সেখানে সহিষ্ণু ও নিবেদিত প্রাণ। পুরুষ যেখানে লম্পটের পরিচয় দেয়, নারী সেখানে যুধিষ্ঠির। পুরুষের জ্ঞান-বুদ্ধি যেখানে সহজ-সরল, নারী সেখানে কূটবুদ্ধিসম্পন্না ও প্রত্যুৎপন্নমতি। পুরুষ জয় করে শক্তি ও পৌরুষে, নারী জয় করে রূপে ও গুণে। পুরুষের জীবন যেখানে সাদাসিধে, নারী সেখানে আড়ম্বরপূর্ণ সাজসজ্জা বিলাসিনী। পুরুষ যেখানে মহানুভব, নারী সেখানে সংকীর্ণমনা। পুরুষ যেখানে আবেগের দাস, নারী সেখানে বাস্তববাদী। পুরুষ যদি হয় অদূরদর্শী, নারী হয় দূরদর্শী। নারী যেখানে নিরাপত্তাহীনতায় কাতর, পুরুষ সেখানে নিরাপত্তা দাতা।
একটি পুরুষ মোরগের ভয়ে সকল নারী মুরগিই ছুটে পালায়। একটি ষাঁড়ের ভয়ে একদল গাভী ভীত সন্ত্রস্ত। একজন মহিলা একটি ছোট মেয়ের চেয়ে ছোট একটি ছেলেকে নিয়ে একাকী হাঁটতে অধিকতর নিরাপত্তা বোধ করে। এভাবে মানুষ ও ইতর প্রাণী নির্বিশেষে নারী ও পুরুষের মধ্যে হাজারো রকমের মনস্তাত্ত্বিক ও স্বভাবগত পার্থক্যের কথা বলা যেতে পারে। নারীর নিকট পুরুষ খুঁজে শান্তি আর পুরুষের নিকট থেকে নারী পায় নিরাপত্তা। শক্তিশালী ও সুবিধাজনক শারীরিক গঠন কাঠামো নিয়ে পুরুষ যেখানে বেপরোয়া ও গর্বিত, অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও অসুবিধাজনক গঠন কাঠামো নিয়ে নারী সেখানে নির্যাতিত ও নিপীড়িত।
দৈহিক পার্থক্য বিস্তৃতঃ নারীর শরীর অম্লধর্মী কিন্তু পুরুষের শরীর ক্ষারধর্মী। নারীর শরীর চুম্বকধর্মী কিন্তু পুরুষের শরীর বিদ্যুৎধর্মী। নারীর শরীর স্থিতিশীল ও রক্ষণশীল কিন্তু পুরুষের শরীর গতিশীল ও সৃজনশীল।
- সাধারণতঃ পুরুষের দৈহিক গড় ওজন ১৪০ পাউণ্ড এবং নারীর দৈহিক ওজন ১২৮ পাউণ্ড।
- পুরুষের দেহে মাংসপেশী শতকরা ৪১.৫ ভাগ, কিন্তু নারীর দেহে মাংসপেশী ৩৫ ভাগ।
- পুরুষের দেহের হাড়ের ওজন সাধারণতঃ সাত সের কিন্তু নারীর দেহের হাড়ের ওজন সোয়া পাঁচ সের।
- পুরুষের দেহে শতকরা ১৮ ভাগ চর্বি কিন্তু নারীর দেহে ২৮ ভাগ চর্বি।
- পুরুষের তুলনায় নারীর শরীরে জলীয় অংশ বেশী।
- রক্তের লাল কণিকা নারীর চেয়ে পুরুষের অনেক বেশী। পুরুষের রক্তের এক কিউবিক মিলিমিটারে পঞ্চাশ লক্ষ রক্ত কণিকা থাকে; কিন্তু নারীর থাকে মাত্র পঁয়তাল্লিশ লক্ষ।
- পুরুষের মগজের ওজন গড়ে সাড়ে ৪৯ আউন্স, কিন্তু নারীর মগজের ওজন মাত্র ৪৪ আউন্স। পুরুষের মগজের সর্বনিু ওজন ৩৪ আর সর্বোচ্চ ৬৫ আউন্স কিন্তু নারীর সর্বনিম্ন ৩১ এবং সর্বোচ্চ ৫৪ আউন্স। অথচ মগজের ওজনের উপরই বুদ্ধি নির্ভরশীল।
- নারীর পঞ্চেন্দ্রিয় পুরুষের পঞ্চেন্দ্রিয়ের তুলনায় দুর্বল।
- নারীর মগজের বক্রতা ও প্যাঁচ পুরুষের তুলনায় কম।
- নারীর হৃৎপিণ্ড পুরুষের হৃৎপিণ্ডের তুলনায় ওজনে ৬০ গ্রাম কম।
- নারীর তুলনায় পুরুষের নাড়ীর স্পন্দন মিনিটে ৫টি কম।
- শ্বাস-প্রশ্বাসে পুরুষ ঘন্টায় ১১ ড্রাম কার্বণ জ্বালাতে পারে কিন্তু নারী পারে মাত্র ৬ ড্রাম।
- নারীর দেহে পুরুষের তুলনায় অক্সিজেনের ভাগ কম।
- নারীর তুলনায় পুরুষ বেশী শক্তিধর।
- সর্বোপরি, সমস্যার সমাধান কিংবা জটিল পরিকল্পনার ক্ষেত্রে মেয়েদের মস্তিস্কের ডান ও বাম উভয় বলয়-ই ব্যবহৃত হয়। যা আদৌ উচিৎ নয়। পক্ষান্তরে পুরুষরা ব্যবহার করে শুধু ডান বলয়।
- মগজের আলোচনা সম্বন্ধে আরো একটি দিক থেকে যায়, যা এখানে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হচ্ছে। আর তা হচ্ছে, ‘মীখাখ’।
সুতরাং এর ভেতরকার তারতম্য ও আলোচনা করা প্রয়োজন। শরীরতত্ত্বের পরিভাষায় মগজের শেষাংশকে মীখাখ বলে। পুরুষের মগজের সাথে মীখাখ এর সম্পর্ক হচ্ছে ১.৭/৪ অংশ। কিন্তু, নারীর মীখাখের সাথে মগজের সম্পর্ক হচ্ছে মাত্র ১.৪/১ অংশ।
জেনে রাখা দরকার যে, মীখাখ মগজের সেই অংশটির নাম, যার স্বল্পতা ও আধিক্যের উপরে জ্ঞান ও চিন্তাশক্তির তীক্ষ্ণতা ও ভালমন্দ সর্বতোভাবেই নির্ভরশীল। (আত-তাওযীহ্ ফী উসূলিত তাশরীহ-৪২২ পৃষ্ঠা)।
পঞ্চেন্দ্রিয় শক্তিতে নারী-পুরুষের পার্থক্যঃ মানুষের জ্ঞান ও মেধাশক্তি যে পাঁচটা ইন্দ্রিয়কে ভিত্তি করে প্রতিপালিত হয়, তাতেও উভয় শ্রেণীর ভেতরে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মনীষী নিকোলাস ও মনীষী বেইলি প্রমাণ করেছেন যে, নারীর ইন্দ্রিয়শক্তি পুরুষের ইন্দ্রিয়শক্তি অপেক্ষা অনেক দুর্বল।
ঘ্রাণশক্তিঃ নারীর ঘ্রাণশক্তি বিচার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, যতটুকু দূরত্ব তাদের বিশেষ ঘ্রাণশক্তি থেকে বঞ্চিত রাখে, পুরুষ তা সহজেই লাভ করে থাকে। মানে ঘ্রাণের শক্তিমাত্রা যতটুকু হলে পুরুষ অনুভব করতে পারে, নারীর প্রয়োজন তার দ্বিগুণ। আরও প্রমাণিত হয়েছে যে, নারীরা হাল্কা ব্রাসিক এসিডের ঘ্রাণ বিশ হাজারের একভাগ হলে এবং পুরুষ এক লক্ষ ভাগের এক ভাগ হলেই অনুভব করতে পারে।
স্বাদ ও শ্রবণশক্তিঃ স্বাদ ও শ্রবণ শক্তির অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, নারী অপেক্ষা পুরুষ সে ক্ষেত্রেও অনেক সবল। এর প্রমাণ আমরা দৈনন্দিন এত পাচ্ছি যে, তা আর নতুন কোন উদাহরণের অপেক্ষা রাখেনা। ‘এনসাইক্লোপেডিয়া’য় এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে- “এর ফলেই খাদ্যের গুণাগুণ বিচার, সুরের ভালমন্দ পরীক্ষা, পিয়ানোর রাগ-রাগিনী পরীক্ষা ক্ষেত্রে সর্বদা পুরুষরাই স্থান পায়। কোন নারী এসব ব্যাপারে আজ পর্যন্ত নিজেকে সক্ষম প্রমাণ করতে পারেনি।”
অনুভূতিশক্তিঃ এ সম্পর্কে মনীষী লোমব্রুয়ার ও সিয়ারজী প্রমুখ পণ্ডিতদের সর্বসম্মত অভিমত এই, নারীর পুরুষ থেকে এক্ষেত্রে দৌর্বল্য অনেক বেশী। তাদের গবেষণা প্রস্তুত যুক্তি হল, দুঃখ কষ্টের অনুভূতি নরের চেয়ে নারীর অনেক কম বলেই ধৈর্য তাদের নরের চেয়ে বেশী মনে হয়। (নরের চেয়ে নারীর অনুভূতি অনেক কম না হলে আগুনের মত দাহ্যবস্তুর সংস্পর্শে তারা এত ঘনিষ্ঠভাবে জীবনভর থাকতে পারেনা)।
লোমব্রুয়ারের মূল বক্তব্য হলো- “গর্ভ ও প্রসবের কঠিন কষ্ট সম্পর্কে চিন্তা করুন এবং ভেবে দেখুন, নারীরা দুনিয়ার বুকে কত কঠিন দুঃখ-কষ্ট সহ্য করছে। যদি নারীদের অনুভূতিশক্তি পুরুষের মতোই তীক্ষ্ণ হতো, তাহলে কিছুতেই তারা এতবড় দুঃখ নীরবে সহ্য করতে পারতো না। মানব জাতির সৌভাগ্য যে, প্রভু নারীকে প্রখর অনুভূতি থেকে বঞ্চিত রেখেছেন। তা না হলে বনী আদমের উৎপত্তির গুরুভার বয়ে চলা কারুর পক্ষেই সম্ভব হতো না।”
রুচিভেদ ও স্বভাবঃ বিখ্যাত Nihilist দার্শনিক প্রুডেন “ইবতিকারুন নিযাম” গ্রন্থে লিখেছেন, মেয়েদের জ্ঞানশক্তি পুরুষের জ্ঞানশক্তি অপেক্ষা যতখানি দুর্বল, ঠিক ততখানি পার্থক্য দেখা দেয় তাদের রুচিবোধের ভেতরে। তাদের চারিত্রিক শক্তিও পুরুষের সমান নয়। তাদের স্বভাবই সস্পুর্ণ আলাদা ধরনের। তাই দেখা যায় যে, তাদের ভালমন্দের বিচার পুরুষের ভালমন্দ বিচারের সাথে সাধারণতঃ এক হয় না। এতেই প্রমাণিত হয় যে, নারী ও পুরুষের অনৈক্যটা শুধু বাইরেই নয়, পরন্তু সেসব প্রকৃতিগত পার্থক্যেরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
এছাড়াও আরো অনেক পার্থক্য রয়েছে এই দুই শ্রেণী তথা নারী-পুরুষের মাঝে। এসব গঠনমূলক পার্থক্যই বলে দেয় যে, নারী পুরুষের কর্মক্ষেত্র এক ও অভিন্ন না হয়ে ভিন্নতর হওয়াই বাঞ্ছনীয় এবং যুক্তিসঙ্গত। আর এটাই হলো, ইসলামের বিধান। অতএব আমরা দেহ বিজ্ঞানের থিউরী মান্য করে নারী-পুরুষের পার্থক্যের বাস্তব সত্যকে বিসর্জন, কালিমা লেপন ও প্রত্যাখ্যান করতে চাই না। আর করাটাও হবে অজ্ঞতা প্রস্তুত ও বাতুলতা প্রবণ।
ইসলামের বিধান হচ্ছে- পুরুষরা গৃহ-বহির্ভূত বাইরের যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করবে, আর নারীরা গৃহের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদন করবে। নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্রের এ বিস্তৃত সুবিশাল পার্থক্য ইসলাম করেনি এবং পুরুষরাও করেনি, বরং প্রকৃতি তথা সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা মহান আল্লাহই করেছেন। আল্লাহ তাআলাই নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্রের সুবিশাল পার্থক্যের ব্যবধান স্থাপন করেছেন। আর ইসলাম তার পক্ষপাতিত্ব করেছে মাত্র। কেননা, আমরা জানি যে, মানব জাতির স্তুচনালগ্ন থেকেই মানুষ গৃহ নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করতে শিখেছে। এ থেকেই শুরু হয় প্রকৃতির এই অমোঘ ধারা। প্রকৃতির এ ঘরবাড়ীই নারীকে ঘর-সংসারের কাজ করতে বাধ্য করে। আর নারীও তখন মেনে নিয়েছিল এ বশ্যতা। কিন্তু এতদসত্ত্বেও নারীর পদচারণা পরিলক্ষিত হতো ঘরের বাইরে যথেচ্ছাভাবে। আর নারীর এই যথেচ্ছাচারিতার কারণে তখন নারী প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হতো বহুবিধ অপকর্মের, নির্যাতনের।
এই ‘নারী নির্যাতন’ প্রবণতা রোধে নারী-পুরুষের শারীরিক কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইসলাম ঘোষণা করলঃ “তোমরা (নারীরা) গৃহাভ্যান্তরে অবস্থান কর।” (সূরা আহযাব)।
এই আইনের হেতু এটাই যে, নারী-পুরুষ যেহেতু পরস্পর একে অপরের সস্পুরক, সেহেতু তাদের কাজকর্মের কর্মক্ষেত্রও স্বতন্ত্র হওয়াই উচিৎ। কারণ, নারী-পুরুষ পরস্পরের সস্পুরক তখনই প্রমাণিত ও প্রকাশিত হবে, যখন তাদের কাজের মধ্যে ভিন্নতা প্রকাশ পাবে। আর এ ভিন্নতা তখনই প্রকাশ পাবে, যখন কেউ কারো অনধিকার চর্চা না করে প্রত্যেক নর-নারীই স্বীয় কর্ম সম্বন্ধে সচেতন হবে। এ কারণেই ইসলাম নারীকে তার গৃহের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় কার্যসমূহ পালন করতে হুকুম করেছে। কেননা, নারীর সৃষ্টি হয়েছে বংশ সম্প্রসারণ, সংরক্ষণ, পারিবারিক দায়িত্ব, সন্তান গর্ভধারণ, প্রসব ও শিশু লালন-পালন, সংসারের যাবতীয় কাজের পাশাপাশি সন্তানদেরকে আদর্শবান করে গড়ে তোলা, সুশিক্ষা দেওয়া, খোদা প্রদত্ত নিখাদ ভালবাসা দান করা ইত্যাদির জন্য। পরন্তু, সংসারই হলো নারীর উন্নতির একমাত্র ক্ষেত্রফল।
পক্ষান্তরে, নারীরা যদি গৃহে অবস্থান না করে অফিস-আদালতে পুরুষের সাথে কাজকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। তবে এসব জরুরী কার্যাবলী সস্পুর্ণ ব্যাহত হবে। তা থাকবে সস্পুর্ণ উপেক্ষিত ও অবহেলিত, তাতে কোনই সন্দেহ নেই। সেই সঙ্গে পারিবারিক জীবনের সব সুখ-শান্তি, বিশ্বস্ততা, পবিত্রতাও নিঃসন্দেহে ক্ষুণ্ন হবে এতে। এই কারণে নারীদেরকে কঠিন অশান্তি ও দুঃখ, দুর্দশা থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই তাদের শান্তিপূর্ণ ঘর-সংসার থেকে টেনে বাইরে নিয়ে এসে দুঃসহ অবস্থার সম্মুখীন করে দেওয়াকে ইসলাম সমর্থন করেনি।
উঁচুদরের বিজ্ঞানীদের নারী সম্পর্কে মতামত পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, এখানেও তাদের মতামত ইসলামী মতাদর্শের সাথে সামঞ্জস্যশীল। এখানে কতিপয় দার্শনিক ও বিজ্ঞানীদের মতামত উপস্থাপন করা হলো।
জড় বিজ্ঞানের সেরা পারদর্শী ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক সোলসায়মন ‘রিভিউ অব রিভিউজ’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক ক্রশিয়ার পুস্তক সমালোচনা প্রসঙ্গে লিখেন- “নারীর নারীই থাকা উচিৎ। হ্যাঁ, অবশ্যই নারীকে নারী থাকতে হবে। তাতেই তাদের কল্যাণ এবং এই একমাত্র বৈশিষ্টই তাদের কল্যাণকর লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। প্রকৃতির এটাই বিধান এবং এভাবেই প্রকৃতি তাদের পথের নির্দেশ দিয়েছে। তাই তারা যতখানি প্রকৃতির সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে চলবে, ততখানি তাদের সাফল্য ও মর্যাদা সুস্পষ্টভাবে বেড়ে চলবে। আর যতই তারা প্রকৃতির ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে থাকবে, ততই তাদের বিপদ বেড়ে যাবে। কোন কোন দার্শনিক মানব জীবনে পবিত্রতার বালাই রয়েছে বলে স্বীকার করেন না। আমি বলছি, মানব জীবনে মনোমুগ্ধকর পবিত্রতার ব্যাপক অস্তিত্ব বিরাজমান। হ্যাঁ, তা শুধু তখনই দেখা দিতে পারে যখন নর ও নারী নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র ও দায়িত্ব সম্পর্কে সস্পুর্ণ সজাগ থাকবে এবং তা একনিষ্ঠভাবে সম্পাদন করে চলবে।” আর প্রকৃতিই তো নারীকে তার গৃহের আভ্যন্তরীণ যাবতীয় কার্যাদি পালনের দায়িত্বভার অর্পণ করেছে।
আপনাদের বিস্ময় জাগবে একথা শুনে যে, এতবড় দার্শনিকরা কেন নারীদের নারী থাকার উপদেশ দেন? নারী তাদের নারীত্বের বাইরে আবার যেতে পারে কি করে? নারী তো নারীই থাকবে চিরকাল এবং পুরুষ থাকবে পুরুষ। তাই আপনারা শুনে অবশ্যই অবাক হয়ে যাবেন যে, ইউরোপের সুধী মহল সেখানকার আধুনিকা নারীদের নারী বলেই স্বীকার করতে রাজি নন। কারণ, তারা তাদের স্বরূপ ও স্বদায়িত্ব ভুলে পুরুষ হবার সাধনা চালাচ্ছে। ফলে তারা নারীত্বের গণ্ডির বাইরে পা রাখবার প্রয়াস পাচ্ছে। উক্ত মনীষী আরেক স্থানে লিখেছেন- “যে নারী স্বীয় গৃহ ছেড়ে বাইরের কাজে মত্ত হতে চায়, সন্দেহ নেই যে, সে পূর্ণাঙ্গ কর্মী হিসেবেই দায়িত্ব সম্পাদন করে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে তখন আর নারী থাকে না।”
খ্যাতনামা লেখক অধ্যাপক জিওম ফ্রেয়ারো ১৮৯৫ খ্রীস্টাব্দে ‘রিভিউজ’এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ভাষায় আধুনিকা নারীর শোচনীয় অবস্থার চিত্র এঁকেছেন। বিশেষ করে ইউরোপের যেসব নারী বর্তমান নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রভাবে পড়ে পুরুষের দায়িত্বে ভাগ বসাতে এসেছে, তাদের মর্মান্তিক পরিণতি সম্পর্কে তিনি লিখেছেনঃ “যেসব নারী সমাজ জীবনের মূল ভিত্তি দাম্পত্য জীবনের প্রতি তীব্র ঘৃণা রাখছে, স্রষ্টা যে জন্য তাদের সৃষ্টি করেছেন আর যে প্রয়োজনে তাদের এ ধরনের দৈহিক ও মানসিক রূপদান করেছেন, তারা তাকেই বেমালুম ভুলে গেছে। তাদের মেজাজে আল্লাহ্র দেওয়া সেই বৈশিষ্ট আর অবশিষ্ট নেই, যা সেই বয়সের নারীদের ভেতরে স্বভাবতঃ পাওয়া যায়। তারা আজ এমন এক স্তরে এসে পৌঁছেছে, যাদের ‘নপুংসক’ ছাড়া আর কিছুই বলা চলেনা।
বস্তুতঃ তাদের পুরুষ বলবার যেরূপ জো নেই, তেমনি নারী বলবারও সাধ্য থাকে না। পরন্তু, তারা উভয় প্রকৃতির সংমিশ্রণে তৃতীয় এক আজব জীব হয়ে পড়েছে। পুরুষ হওয়া তো তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না এজন্য যে, প্রকৃতি তাদের দেহ ও মন এরূপ গড়ে ফেলেছে, যার সংশোধন তাদের সাধ্যাতীত ব্যাপার। আর নারীও এজন্য থাকছেনা যে, তাদের কাজকর্ম, হাবভাব ও চালচলন সবই পুরুষের, নারীর গন্ধও তাতে নেই।”
বিখ্যাত সমাজবাদী দার্শনিক মনীষী প্রুধোঁ স্বীয় খ্যাতনামা গ্রন্থ “ইবতিকারুন নিযাম”এ লিখেনঃ “প্রকৃতির বিধানই নারীকে মানবের সাংস্কৃতিক জীবনের উন্মুক্ত ময়দানে অংশগ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। সে শিক্ষার দুর্গম পথ অতিক্রম করতে চায়, কিন্তু শিক্ষা তাকে সহায়তা করতে নারাজ। তাই তাদের বর্তমান পদক্ষেপের ভয়াবহ পরিণতির আশংকায় আমরা দিন গুণছি। মানব সভ্যতার ইতিহাসে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিত্য নতুন আবিস্কারের বিস্তির্ণ ক্ষেত্রে নারীদের কোনই অবদান নেই। নারীদের আদৌ সহযোগিতা না নিয়েই মানব জাতি সভ্যতা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে শনৈঃ শনৈঃ এগিয়ে চলছে। পরিস্কার ভাষায় বলা চলে, একমাত্র পুরুষ জাতিই গবেষণা ও আবিস্কারের ক্ষেত্রে একŽছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রয়েছে। সেগুলোকে তারা যুগে যুগে পূর্ণতায় পৌঁছিয়ে চলছে। সেসবের যথাযোগ্য প্রয়োগ তাদেরই হাতে হচ্ছে। তার থেকে শুভাশুভ ফল যা কিছু তারাই উৎপাদন করছে, তার থেকেই তারা নারীদের ভরণ পোষণ ও সুখ শান্তির ব্যবস্থা করে চলছে।”
দার্শনিক শ্রেষ্ঠ অগাস্ট কোঁতে তার বিখ্যাত “জড় দর্শনের ভিত্তিতে পৌরনীতি” নামক গ্রন্থে লিখেছেন- “পুরুষের ক্ষেত্র নারীদের চর্চার ফলে ভয়াবহ পরিণাম ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে চলছে। এর প্রতিকার হচ্ছে, পুরুষের ব্যাপারে স্ত্রী জাতির স্বাভাবিক যে বৈষয়িক দায়িত্ব রয়েছে, তা বিশেষভাবে সীমিত ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।”
ঊনিশ শতকের খ্যাতনামা মনীষী স্যামুয়েল স্মাইলস্ তার অমূল্য গ্রন্থ “The character”এ ইংল্যাণ্ডের নারী স্বাধীনতার আন্দোলন প্রসঙ্গে লিখেছেন- “প্রাচীন রোমকদের দৃষ্টিতে শালীন মেয়েদের সবচেয়ে প্রশংসনীয় উঁচুস্তরের কাজ হচ্ছে ঘরকন্না চালানো এবং বাইরের টানা-হেঁচড়া থেকে মুক্ত থাকা। আমাদের এ যুগেও বলা হয়, নারীদের ভূগোল শিক্ষা এ জন্য অপরিহার্য যে, তারা নিজ নিজ ঘরের দরজা জানালাগুলো যথাযথ স্থানে বসাবার ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবে। রসায়নশাস্ত্র তাদের এজন্য শেখা দরকার যে, হাঁড়ির রান্নার সামগ্রী উথলে উঠলে যেন যথাসময়ে সামলে নিতে পারে। লর্ড বায়রণ নারীর প্রতি অতিমাত্রায় আসক্ত হয়েও অভিমত পেশ করছেন- মেয়েদের লাইব্রেরীতে ধর্মগ্রন্থ ও পাকপ্রণালী ছাড়া আর কোন বই থাকা অনুচিত।”
উঁচুদরের বৈজ্ঞানীকদের এ ধরনের আরো ভূরিভূরি থিউরী রয়েছে যেগুলো নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্রের ভিন্নতারই বার্তা বহন করে।
সুতরাং এসব কুরআনের বাণী, বৈজ্ঞানীকদের গবেষণালব্ধ বাণী ও প্রকৃতির নিয়মনীতি থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্র এক ও অভিন্ন না হয়ে ভিন্নতা হওয়াই যুক্তিসঙ্গত। পরন্তু, নারীর উন্নতির একমাত্র ক্ষেত্রফল হলো তার সংসার। সংসারেই নারীর নারীত্ব বিকশিত হয় অন্য কোথাও নয়। কিন্তু বর্তমান বিশ্বায়নের নারী প্রগতিবাদীরা এ তিনটি তথা কুরআন, বিজ্ঞান ও প্রকৃতি বিশ্বাসে রাজী নয়। তাই তারা তাদের সংকীর্ণ বুদ্ধি নিয়ে নারী স্বাধীনতার কথা বলে। নারী-পুরুষের কর্মক্ষেত্র এক ও অভিন্ন হবার দাবী করে। নারীকে প্রগতির নামে চাকরী দিয়ে স্বনির্ভর করার লোভ দেখায়। আবার এসব নারীবাদীরাই নারীকে অফিস-আদালতে চাকরী দিয়ে তাদের ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত রেখেছে। এসব চাকরীরত মহিলাদের মাসিক বেতন পুরুষের তুলনায় অনেক কম। এমন বেতন পুরুষদের হলে পুরুষরা সংগ্রাম চালিয়ে তাদের ন্যায্য হিস্যা আদায় করে নিতে পারত; কিন্তু নারীরা তা পারেনা। কারণ, তারা দুর্বল। এ পার্থক্য শুধু আমাদের দেশেই নয়; বরং ইউরোপেও, যেখানে গড়ে দশ লাখের মধ্যে মাত্র দশ হাজার নারী পুরুষের সমান বেতন পায়। আর বাকী সব নারীরা মাসিক বেতন পায় পুরুষের তুলনায় অনেক কম।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
যারা নারীর সত্তাকে পুরুষদের থেকে পৃথক ও স্বাধীন করে দেখতে চায় তাদের তুলনা হতে পারে সেই মূর্খদের সাথে যারা পানি পান করতে গিয়ে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মিলিত শক্তি লোপ করে একটাকে ভিন্ন করে পেতে চায়। অথচ সে মূর্খের জানা উচিৎ যে, পানির অস্তিত্বই নির্ভর করছে সেই দু’টো উপকরণের সংযোগের উপর এবং তা থেকে একের বিয়োগে আর পানির অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদি পানির বেলায় অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের একটাকে অপরটা থেকে ভিন্ন ও স্বাধীন করে দিয়েও পানিকে পানি রাখা সম্ভবপর হতো, তাহলে অবশ্যই নর ও নারীর এক শ্রেণীকে অপর শ্রেণী থেকে পৃথক করে দিয়ে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার কল্পনা করা যেত। পরন্তু অক্সিজেন যদি পানি সৃষ্টির ধারায় হাইড্রোজেনের কাজ দিত এবং হাইড্রোজেন দিত অক্সিজেনের কাজ, তাহলে নারীও নরের কাজে দখল দিতে পারত নিশ্চিন্তে এবং তাতে মানব সভ্যতার জগতে কোনরূপ ভাঙ্গনই দেখা দিত না।
কিন্তু আমরা জানি এরূপ হওয়া কস্মিন কালেও সম্ভবপর নয়। যেভাবে হাইড্রোজেনের তুলনায় অক্সিজেন ওজনে বেশী, তেমনি নারীর তুলনায় নর দৈহিক ও মানসিক শক্তিতে সবল। যেভাবে হাইড্রোজেনের ভারী হওয়া পানি সৃষ্টির পথে অন্তরায় স্বরূপ, তেমনি নারীর স্বাতন্ত্র্যও পুরুষের গুরুভারে তাদের হস্তক্ষেপ সভ্যতা ও সমাজ ব্যবস্থার বেলায় প্রাণ সংহারক বিষ বৈ নয়।
প্রকৃতির নিয়ম আগুন-পানি, আগুন-মোম, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন যেভাবে একত্রিত হতে পারেনা, অনুরূপ নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্র এক ও অভিন্ন হতে পারেনা। আর এসব হতে পারে তখনই, যখন প্রকৃতির বিধান ওলট পালট হয়ে যাবে। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম পরিবর্তন হওয়া অসম্ভব।
“তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দ্বীনে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহ্র প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহ্র সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দ্বীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানেনা।।” (স্তুরা রূমঃ ৩০)।
নারী-পুরুষ এই দুই শ্রেণী বিপরীতধর্মী হলেও পরস্পর আকর্ষণাÍক। আর এ কারণেই নারীরা প্রায়শঃই গ্রহণ করে তাদের কর্মক্ষেত্রে উপস্বামী, বয়ফ্রেণ্ড এবং পুরুষরা গ্রহণ করে উপস্ত্রী ও গার্লফ্রেণ্ড। স্বামী-স্ত্রীতে থাকেনা কোন মিল-মুহাব্বত, কেউ কারো ধার ধারেনা। পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় ঝগড়াঝাটি, তাদের সংসারে ধরে চিড়, ফাটল। চলে তালাক-ডিভোর্সের খেলা অবাধে। যা বর্তমান বিশ্বের অবাধ নারী স্বাধীনতায় এসব তালাক-ডিভোর্স অহরহ ঘটছে। সংসারে নেমে আসছে অশান্তি, অমানিষার অন্ধকার। আশ্চর্য যে, নারী স্বাধীনতার দাবীদাররা নারীর দাসত্বের অভিযোগ তুলে আল্লাহ্র আরশ পর্যন্ত কাঁপিয়ে তুলছে। অথচ তারা একথা ভাবছেনা যে, স্রষ্টা কিভাবে পুরুষদের নারীর অধীন ও দাস করে রেখেছেন। স্রষ্টা পুরুষদের উপরে অপরিহার্য করে দিয়েছেন নারীর খোরপোষ ও আরাম-আয়েশের ব্যবস্থার জন্য জীবন সংগ্রামে দুর্গম ক্ষেত্রে ঝাঁপ দেওয়া। সেজন্য তারা প্রাণ বিপন্ন করেও সমুদ্রের গভীর তলদেশে অভিযান চালিয়ে মণিমুক্তার ভাণ্ডার এনে নারীর পদতলে লুটিয়ে দেয়।
“নিয়মানুযায়ী মাতার খাওয়া-পরা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা সন্তানের পিতার দায়িত্ব।” (আত্তানযীল-২/২৩৩)।
এখানে একটি প্রশ্ন করার অবকাশ থাকে যে, আল্লাহ তাআলা তো পুরুষদেরকে নারীর যাবতীয় ভরণপোষণের দায়িত্ব অপরিহার্য করে দিয়েছেন। এখন কথা হলো, নারীর যদি তার পিতা, স্বামী, ভাই বা নিকটাত্মীয় কেউ না থাকে, তবে সে নারীর অবস্থা কি হবে? সে নারীকে তো অবশ্যই তার জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে, বাইরে অফিস-আদালতে চাকরীর অন্বেষণ চালাতে হবে।
ইসলাম এ প্রশ্নের যে জবাব দিয়েছে আজ আমরা তা ইউরোপের মনীষীদের কণ্ঠেই শুনতে পাচ্ছি। ইসলাম বলছে, এরূপ অসহায় ও অরক্ষিতা নারীর ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা “বাইতুল মাল” থেকে করা হবে। বাইতুল মাল হচ্ছে মুসলমানদের তথা জনসাধারণের অর্থ ভাণ্ডার। তা সরকারের দায়িত্বে দুঃস্থ ও অসহায়দের স্বার্থে মুক্তহস্তে ব্যয়িত হবার জন্য প্রস্তুত থাকে। তাই ইসলামে অসংখ্য দুঃস্থ বিধবার সহায়তা সমাজ ও রাষ্ট্রের উপরে অপরিহার্য করে দিয়েছে, যেন পেটের দায়ে তাকে গৃহ ছেড়ে বাইরের স্বভাববিরুদ্ধ কাজ করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ দুর্যোগ পোহাতে না হয়।
ইউরোপের মনীষীরা বেশ কিছুদিন যাবত ইসলামের এ বিধানটিকেই বাস্তব রূপ দেবার জন্য লেগে গেছেন এবং আন্দোলন শুরু করেছেন যে, সেরূপ অসহায় ও অরক্ষিতা বিধবা নারীদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা সরকারী তহবিল থেকেই করা হোক। অগাস্ট কোঁতে তার “আন্নিযামুস্ সিয়াসী” গ্রন্থে লিখেছেনঃ “স্বামী কিংবা কোন নিকট আত্মীয়ের অবর্তমানে নারীর প্রতি সমাজের অপরিহার্য দায়িত্ব হচ্ছে কোষাগার থেকে তার ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা, তাহলে পেটের দায়ে তাদের গৃহ ছেড়ে বাইরের কাজে লিপ্ত হতে হবে না। কারণ, যথাসম্ভব নারীর জীবন গৃহের চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ। আমাদের প্রচেষ্টা এটাই হওয়া উচিৎ যে, নারীকে যেন বাইরের কঠোর জীবন সংগ্রামের ক্ষেত্রে নেমে হাজার দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হতে না হয় এবং আল্লাহ তাদের যে ছায়া-ঘেরা গণ্ডিতে নির্ঝঞ্ঝাটে কাজ করবার জন্য সৃষ্টি করেছেন, তার থেকে বিচ্যুত হতে বাধ্য না হয়।”
সমাজের নিভৃত কোণ গৃহই হলো নারীর উন্নতির একমাত্র ক্ষেত্রফল। ঘর-সংসারেই নারীর নারীত্ব বিকশিত হয়। ঘর-সংসার নারীর মেধা বিকাশে অনন্য। গৃহে অবস্থান করেই নারীরা প্রভূত অর্থোপার্জনে সক্ষম হয় বিভিন্নভাবে। গৃহপালিত হাঁস-মুরগি লালন-পালন করে, বাড়ীর অব্যবহৃত স্থানে শাক-সব্জি উৎপাদন করে, হাতের কাজ যেমন সেলাইয়ের কাজ ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে সংসারের প্রয়োজন মেটানো যায় যেমন, তেমনি করা যায় যথেষ্ট উপরি আয়। এভাবে নারীরা গৃহাভ্যন্তরে বাস করেও প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারে, যেমন করেছেন সাহাবিয়াগণ।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্নে মাসঊদ (রাযি.)এর স্ত্রী নিজে ঘরে বসে শিল্পকর্ম করতেন এবং তা বিক্রি করে ঘর-সংসারের খরচাদি চালাতেন। একদিন তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হয়ে বল্লেন, আমি একজন হস্তশিল্পে দক্ষ লোক। আমি বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী তৈরী করে বিক্রি করি। এছাড়া আমার, আমার স্বামীর এবং সন্তানদের জীবিকার অন্য কোন উপায় নেই। রাস্তুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বল্লেন, তুমি যে এভাবে উপার্জন করে তোমার ঘর-সংসারের প্রয়োজন পূরণ করছ, তাতে তুমি বিরাট সাওয়াবের অধিকারী হবে। (তাবকাতে ইব্নে মাআ’দ)।
নারীর অবস্থান বাইরে নিরাপদ নয়। কেননা, হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নারী গোপন করে রাখার যোগ্য। সে যখন বাইরে বের হয়, তখন শয়তান তার উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। (তদুপরি লম্পটদের উপদ্রব তো আছেই)। (তিরমিযী শরীফ)। “গৃহের নিভৃত কোণই নারীর জন্য উত্তম মজলিশ।” (মসনদে আহমদ)।
হযরত উমর ফারুক (রাযি.) বলেছেন, “নারী প্রচ্ছন্ন রাখার বস্তু। তাকে তোমরা লুকিয়েই রাখবে।” (উয়ূনুল আখবার)।
ইসলাম নারীকে গৃহে অবস্থান করতে নির্দেশ দিয়েছে বটে, তবে নারীকে অবরুদ্ধ করেনি, প্রয়োজনে নারীরা বাইরে বের হতে পারবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হ্যাঁ, প্রয়োজনে গৃহের বাইরে যাওয়ার অনুমতি তোমাদের জন্য রয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই। (বুখারী, মসনদে আহ্মদ)।
সাহাবিয়া রমণীগণ প্রয়োজনে বাইরেও যেতেন, বাজার সওদাও করতেন। কীলাহ্ নাম্নী জনৈক মহিলা রাস্তুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হয়ে বল্লেন, আমি একজন স্ত্রীলোক। আমি ক্রয়বিক্রয় করি অর্থাৎ ব্যবসা করি। পরে সে মহিলা রাস্তুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ব্যবসা সংক্রান্ত কয়েকটি মাসআলাও জিজ্ঞেস করেন। হযরত উমর ফারুক (রাযি.)এর খিলাফত আমলে হযরত আসমা বিনতে মুহাররমা (রাযি.) নাম্নী জনৈকা মহিলা সাহাবী আতরের ব্যবসা করতেন। (তাবকাতে ইব্নে সাআ’দ)। উমরা বিন তবীয়া (রাযি.) একজন দাসী সমভিব্যহারে বাজারে গিয়ে বড় আকারের একটি মাছ ক্রয় করে বাড়ী ফিরে আসছিলেন। পথিমধ্যে হযরত আলী (রাযি.) তাঁকে দেখে জিজ্ঞাস করলেনঃ কত দিয়ে কিনলে, মাছটা তো বেশ বড়? গৃহের সবাই পেট ভরে খেতে পারবে। (তাবকাতে ইব্নে সাআ’দ)।
তাঁরা বাইরে যেতেন বটে, তবে হিজাব তথা পরিপূর্ণ পর্দা বজায় রেখে। বর্তমান নারীদের মত বেপর্দায় নয়। বর্তমান নারীদের তো পর্দাপুসিদার কোন বালাই নেই। খোলামেলা কাপড় চোপড় পড়ে কুরআন, বিজ্ঞান ও প্রকৃতির বিধান সীমালঙ্ঘন করে বেগানা পুরুষের সাথে চলছে অবাধে। হিরো সেজে চলছে তারা যত্রতত্র, যেখানে পুরুষ সেখানেই নারী। এহেন যথেচ্ছাচারিতার কারণে প্রগতিবাদী উগ্রপন্থী নারীরা আদিম যুগের নারীদের ন্যায় ধর্ষণ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে হরহামেশা। হয়ে যাচ্ছে তারা জিরো। ডাক হাঁকছে ত্রাতিত্রাহি। এজন্য দোষটা কার? আর এসব নির্যাতন ধর্ষণই কি ‘নারী স্বাধীনতার’ প্রকৃত রূপ?
আল্লাহ তাআলার শাশ্বত বিধান লঙ্ঘন করে কেউ কখনও সফলতা অর্জন করতে পারেনি। কবলিত হয়েছে নানাবিধ সমস্যার আবর্তনে। কাজেই এরাও কখনও সফলতা অর্জন করতে পারবে না। তাই আল্লাহর নির্দেশ- “যারা স্রষ্টার নির্ধারিত ক্ষেত্র লঙ্ঘন করল তারা আত্মপীড়িত সাজল।” পক্ষান্তরে যেসব নারী হিজাব তথা পর্দা পালন করে, তারা তাদের স্থানে অবস্থান করছে নিরাপদেই। অক্ষুণ্ন রয়েছে তাদের মান-সম্মান, ইজ্জত-আব্রু। বাস্তবতার নিরীখে যাচাই করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, যারা বর্তমান বিশ্বে ‘নারী স্বাধীনতা’র কথা বলে, আসলে তারা নারীর স্বাধীনতা চায় না। তারা চায় নারীকে ভোগ্য সামগ্রী বানাতে। স্বাধীনতার নাম দিয়ে নারীকে গৃহ থেকে বের করে অফিস-আদালতে চাকরী দিয়ে নারীর নারীত্ব, ইজ্জত, সম্ভ্রম, সতীত্ব তথা যথাস্বর্বস্ব লুট করতে। যা পরিলক্ষিত হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে। পরিশেষে নারী জাতিকে বলতে চাই যে, আপনারা আপনাদের কর্মক্ষেত্র সম্বন্ধে সচেতন হোন, ভেবে দেখুন আপনাদের সৃষ্টি কি জন্য করা হয়েছে। আপনাদের করণীয় কি? কুরআন, বিজ্ঞান, প্রকৃতির বিধান সম্বন্ধে বুঝে-জেনে-চিনে নিন আপনাদের কর্মক্ষেত্র এবং সেসব জেনে তদানুযায়ী চলতে শুরু করুন। ইন্শাআল্লাহ আপনারাও ফিরে পাবেন আপনাদের প্রকৃত মান-মর্যাদা, নারীত্ব, সতীত্ব, যেমন পেয়েছিলেন সাহাবিয়া (রাযি.) রমণীগণ। আমাদের সবাইকে আল্লাহ তাআলা শুভবুদ্ধি দান করুন।
তথ্যসূত্রঃ * ইসলামের দৃষ্টিতে নারী- অনুবাদ আখতার ফারুক * নারী- মাওলানা আব্দুর রহীম, * নারী ও পুরুষ প্রসঙ্গে বিজ্ঞান ও আল কুরআন- আব্দুল মালেক * গার্হস্থ্য অর্থনীতি * দৈনিক ইনকিলাব।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ