৪ জুলাই ১১৮৭। ইসলামি ইতিহাসের গৌরবোজ্জল ও স্মরণীয় দিনগুলোর একটি। এদিনে ক্রুসেডারদের সাথে সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ূবী রহঃ-এর এক ঐতিহাসিক যুদ্ধের সূচনা হয়, যা পরবর্তীতে প্রথম কেবলা বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয়ের পথ সুগম করে।
ইতিহাসের পাতা উল্টালে জানা যায়, মিশরে ফাতেমী সালতানাত বিলুপ্তির পর থেকে ১১৮২ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সিরিয়া, মসূল ও আলেপ্পোকে নিজের রাজ্যের অর্ন্তভুক্ত করেন সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ূবী রহঃ।
এসময় সালাহউদ্দীন আইয়ূবী রহঃ রাজা রেনাল্ডের সাথে একটি শান্তি চুক্তিতে আবদ্ধ হন, যাতে একে অপরকে সহযোগীতা ও কেউ কারো সাথে যুদ্ধে না জড়ানোর কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু রেনাল্ড এই চুক্তি ভঙ্গ করে সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ূবী রহঃ-এর বাহিনীর উপর আক্রমণ করে।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
চুক্তি ভঙ্গ ছাড়াও ১১৮৭ সালে রেনাল্ড মদীনা দখলের উদ্দেশ্যে হিজাজে আক্রমণ করে। রেনাল্ডের মদীনা দখলের এই দুঃসাহসের উচিত জবাব দিতে সুলতান সালাহউদ্দীন আউয়ূবী রহঃ ৩০ হাজার সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে রওয়ানা হন। হিত্তিনের ময়দানে রেনাল্ডের বাহিনীর সাথে সালাহউদ্দীন আউয়ূবীর দেখা হয়। এখানেই ৪ জুলাই এই ক্রুসেড বাহিনীর সাথে সালাহউদ্দীন আইয়ূবীর ঐতিহাসিক যুদ্ধের সূচনা। যুদ্ধে ক্রুসেড বাহিনী চরম বিপর্যয়ের শিকার হয়। ক্রুসেডারদের ৩০ হাজার সৈন্য মারা যায়, ৩০ হাজার বন্দী হয়। আর রেনাল্ডকে সুলতান সালাহউদ্দীন আউয়ূবী নিজ হাতে হত্যা করেন।
হিত্তিনের ময়দানে সূচনা হওয়া ঐতিহাসিক সেই যুদ্ধের দিন আজ ৪ জুলাই। এই দিনের সেই যুদ্ধের মাধ্যমে ২ অক্টোবর বাইতুল মুকাদ্দাস বিজিত হয়।
আজ কয়েক শতাব্দী পর মুসলিম উম্মাহ আবারো সেই কঠিন সময় পার করছে। ১১৭৮ সালের সেই সময় ও বর্তমানে পার্থক্য শুধু এতোটুকু যে, তখন ক্রুসেড যুদ্ধের অংশ ছিল শুধু বাইতুল মুকাদ্দাস। কিন্তু বর্তমানে পুরো মুসলিম বিশ্ব এক অদৃশ্য ক্রুসেড যুদ্ধে পর্যদুস্ত। বর্তমান এই ক্রুসেড যুদ্ধ থেকে রক্ষা পেতে উম্মাহকে আবারো ফিরে যেতে হবে হিত্তিনে। ১১৮৭-এর ৪ জুলাইয় থেকে অনুপ্রাণিত হতে হবে বারবার ।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ