জন্মের পরপরই আমাদের মুখে টুক করে যা ভরে দেওয়া হয় তার নাম মধু। মুখে মধু দেওয়া হয় এই আশায় যে বড় হয়ে যেন আমাদের মুখের ভাষাও মধুর মতোই মিষ্টি হয়।
মধু আমরা কম বেশি সবাই খেয়েছি। কিন্তু আমরা কি সবাই জানি, মধু কীভাবে বানানো হয়? এসো আজ জেনে নেই মধু কীভাবে হয়–
১। কর্মী মৌমাছিরা ফুলে ফুলে ঘুরে ঘুরে মৌ-রস সংগ্রহ করে। এই মৌ-রসকে ইংরেজিতে বলে নেকটার। নেকটার আসলে ফুলের রেণুতে থাকা মিষ্টি পানির মতো তরল।
মৌমাছির শরীরে দুইটা পাকস্থলি আছে। একটাতে সে এই মৌ রস জমা করে আর অন্যটি আমাদের মত স্বাভাবিক, খাবার পরিপাক হয়।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
২। কর্মী মৌমাছি দূর-দূরান্ত থেকে পেটে মৌ-রস নিয়ে এসে মৌচাকে জমা করে। মৌচাকে মধুচকোষ বা honeycomb বলে অনেকগুলো ছোট ছোট প্রকোষ্ঠ থাকে।
মৌমাছিরা এই প্রকোষ্ঠে মধু ঢালার আগে পেট থেকে মধু মুখে নিয়ে আসে।
মুখে এনে মধুকে তারা চিবুতে থাকে। এটা মধু তৈরি করার সবচেয়ে জরুরী ধাপ। কেননা, এই কাজটা পৃথিবীর কোনো মেশিন করতে পারে না।
পারে শুধু মৌমাছিরাই। মধু চিবানো হয়ে গেলে মধু দিয়ে এক একটি করে প্রকোষ্ঠ ভরতে থাকে।
৩। এরপরই হয় আরেকটি জরুরী কাজ। প্রকোষ্ঠগুলো সব ভরে গেলে, কর্মী মৌমাছিরা সবাই মিলে ডানা ঝাপটাতে থাকে।
এই সবার একসঙ্গে ডানা ঝাপটানো আসলে একটা বড় ফ্যানের কাজ করে। এভাবে প্রকোষ্ঠে থাকা মৌ-রসের পানি বাস্প হয়ে উড়ে যেতে থাকে। এভাবে মৌ-রস গাঢ় ও ঘন হয়। ১৭% আর্দ্রতায় ঘন মৌ-রস মধুতে পরিণত হয়ে যায়।
মধু হয়ে গেলেও কর্মী মৌমাছির একটি দল সবসময় ডানা ঝাপটাতেই থাকে, যেন আর্দ্রতা কিছুতেই বাড়তে বা কমতে না পারে।
এই জন্য তুমি যখনই মৌচাকের কাছে যাবে শুনবে একটা ভোঁ ভোঁ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। এটা আসলে মৌমাছিদের সম্মিলিত ডানা ঝাপটানোর শব্দ।
৪। যখন মধু পুরোপুরি তৈরি হয়ে যায়, মৌমাছি আবার পেট থেকে একটা মোম বের করে এবং প্রকোষ্ঠগুলোর মুখ একদম বাতাসরোধী করে আটকে দেয়, যতদিন না তাদের সেই মধু ব্যবহার করা লাগে।
৫। আমরা যখন মধু সংগ্রহ করি, তখন আমাদের মৌয়ালরা এইসব প্রকোষ্ঠগুলোকে ভেঙে নিয়ে আসে। পরে মোমগুলো গলে গেলেই মধু বের হয়ে আসে।
আচ্ছা, ভালো কথা। আমরা যে মোম ব্যাবহার করি সেগুলো কিন্তু এই প্রকোষ্ঠ বন্ধ করার মোমই। পরে শুধু আমরা একটু পরিষ্কার করে আকৃতিতে নিয়ে আসি।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ