শীতের হিমেল হাওয়ার আনাগোনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তুলে রাখা জ্যাকেট, সুয়েটার, শাল, লেপ ও কাঁথা প্রায় সকলেই নামিয়ে ফেলেছেন। আর শীতের পোশাক গায়ে জড়ানোতে যত আনন্দ, ঠিক ততই ঝক্কি পোহাতে হয় শীতের পোশাকের যত্ন নিতে গিয়ে।
ভারী আর ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের হওয়ায় এসব পোশাকের যত্নও নিতে হয় ভিন্ন ভাবে। না হয় দীর্ঘদিন অব্যবহারের ফলে গন্ধ কিংবা ধুলো জমতে পারে আবার ভুল পদ্ধতির কারণে কাপড় নষ্টও হতে পারে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
উল: উলের কাপড় মৃদু ক্ষারযুক্ত ডিটারজেন্ট দিয়ে ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। কখনোই বেশি জোরে কাচা বা নিংড়ানো যাবে না। উলের কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধুলেও ‘উল মুড’ চালু রাখতে হবে। উলের কাপড়ে কোনো দাগ পড়লে ধোয়ার আগে লেবু বা ভিনেগার ঘষে নিতে হবে।
পশমি: আঙ্গুরা বা পশমি কাপড় ধোয়ার জন্য আপনাকে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পশমি কাপড় শ্যাম্পু দিয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে নিয়ে কচলে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ধরনের কাপড়ে দুই হাত দিয়ে পানি চেপে চেপে ফেলতে হবে। পশমি কাপড়গুলোকে কখনো অন্য কাপড়ের সঙ্গে ভেজানো বা ধোয়া যাবে না। তাহলে পশমগুলো অন্যান্য কাপড়ে লেগে যাবে। পশমি কাপড় ধোয়ার পর টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে ভাঁজ করে পলিথিনে রেখে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
লেদার: লেদারের পোশাক খুবই স্পর্শকাতর হয়। তাই সারা বছরই এর যত্ন নিতে হয়। মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য রোদে দিয়ে ব্রাশ করে ঝেড়ে ফেলতে হবে। অবশ্যই লেদারের জ্যাকেট হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে তুলনামূলক ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হবে। জিপারের চেইন জ্যাম হয়ে গেলে মোম বা নারকেল তেল দিয়ে ঘষে নিলেই জিপার সহজে খুলে যাবে।
ফ্লানেল: ফ্লানেল কাপড়ের খুব বেশি যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। লিকুইড ডিটারজেন্ট ভালো করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে কেচে ধুয়ে ফেলতে হবে। এ কাপড় ওয়াশিং মেশিনে ধোয়ার জন্য ‘নরমাল মুড’ চালু রাখতে হবে।
ভেলভেট: শীতে ভেলভেটের পোশাক আরাম, আর দেখতেও লাগে বেশ। ভেলভেটের কাপড় ড্রাই ওয়াশ করা ভালো। ভেলভেটের কাপড় কখনোই আয়রন করা উচিত নয়। এমনিতেই ভেলভেটের কাপড় খুব সহজেই ম্লান হয়ে যায়, তাই এ ধরনের কাপড় ভাঁজ করবেন না। ভেলভেটে ভাঁজের জায়গা স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে পারে। খুব আলতোভাবে কোনো বক্সে বা ঝুলিয়ে রাখতে পারেন।
কাঁথার যত্ন:
কাঁথা পরিষ্কার রাখা খুব একটা কষ্টকর কিছু নয়। সাধারণ ডিটারজেন্ট দিয়েই এটি পরিষ্কার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে হালকা গরম পানি ব্যবহার করলে ভালো ময়লা পরিষ্কার হয়।
লেপ বা কম্বলের যত্ন:
লেপ যদি শিমুল তুলার হয় তবে তা কাচাকুচি কিংবা ড্রাই ওয়াশ করা যায় না। এক্ষেত্রে লেপ বের করার কয়েকবার রোদে দিন। তবে লেপের কভার আলাদা করে কেচে নিতে হবে।
কম্বলের ক্ষেত্রেও একই উপায়ে যত্ন নিন। শিমুল তুলার না হলে কাচতেও পারেন। এক্ষেত্রে পানিতে শ্যাম্পু গুলিয়ে তাতে কিছুক্ষণ কম্বল ভিজিয়ে ধুয়ে নিন। তবে কম্বল ওজনে ভারী হয় খুব। সেক্ষেত্রে লন্ড্রিতে দিতে পারেন।
আরও কিছু
- উলের পোশাক ঝুলিয়ে শুকাতে দেবেন না। মাটিতে তোয়ালে বিছিয়ে তার ওপরে শুকাতে দিন।
- শীতের কাপড়ে ভুলেও কখনো পারফিউম দিয়ে রাখবেন না। তাহলে কাপড়ে দাগ পড়ে যাবে।
- ঘামযুক্ত শীতের পোশাক আলমারিতে তুলে রাখবেন না। এতে পোকার আক্রমণ হতে পারে।
- ঘন ঘন শীতের পোশাক ধোবেন না। এতে পোশাক তার কোমলতা আর ঔজ্জ্বল্য হারায়।
- অনেকেই শীতের পোশাক ড্রাই ক্লিন করেন। ড্রাই ক্লিনিংয়ের সময় নানা রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে কাপড়গুলো একবার রোদে শুকিয়ে তারপরই আলমারিতে তুলুন।
- আয়রন করার আগে উলের জামাকাপড় উল্টে নিয়ে তারপর আয়রন করুন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ