।। নূর হোসাইন সবুজ ।।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। মুক্তির ধর্ম। যথাযথভাবে ইসলামের বিধি-বিধান ও নিয়ম মেনে চললে কোনো অন্যায় কাজ করা সম্ভব নয়। আইয়্যামে জাহিলিয়্যাতে নারীরা ছিলো ভোগের পণ্য। তাঁদের ছিলো না কোন মান-সম্মান। সর্বত্র তাঁরা ছিলো লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, অবহেলিত ও অপদস্ত। সেই সময় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রেরণ করেছিলেন মানবতার মুক্তি দূত হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে।
তাঁর স্নিগ্ধ পরশে মানুষের সবধরনের অমানবিকতা ও অন্যায় কর্মকাণ্ড দূরীভূত হয়ে যায়। নারীরা তাদের অধিকার ও ইজ্জত-সম্মান ফিরে পায়।
মডার্ণ যুগের নারীদের কাছে পর্দা মানে অবরোধ। প্রকৃতপক্ষে পর্দাই নারীর রক্ষাকবচ। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অন্যান্য প্রাণী অপেক্ষা মানুষের বেশী। নিয়ন্ত্রণের অভাবে যা অনেক সময় নির্দিষ্ট সীমারেখার বাইরেও চলে যেতে পারে। এ আকর্ষণের অপব্যবহার নৈতিকতাকে ধ্বংস করে সামাজিক অবক্ষয় ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। তাই নারী-পুরুষের অবস্থান ও চলাচলের গণ্ডি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ইসলাম।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
পর্দা ব্যবস্থা মহান আল্লাহর এমন এক শ্বাশত বিধান- যা পুরুষের পাশবিক উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে হেফাজত করে মনবিক মর্যাদার উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করে। নারীকে পুরুষের হিংস্র নির্যাতন থেকে বাঁচায়।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে নারী জাতির আব্রু-ইজ্জত রক্ষায় নির্দেশনা দিয়েছেন। “তোমরা তোমাদের ঘরে অবস্থান করবে এবং মূর্খতার যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।” (সুরা আহযাব-৩৩)।
হাদীস শরীফেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ (রাযি.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু। যখন সে পর্দাহীন হয়ে বের হয়, তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। (তিরমিযী, হাদীস নং- ১১৭৩)।
পর্দা দ্বীনের অপরিহার্য বিধান। কিন্তু বর্তমানে অনেক মুসলিম মা-বোনেরা বোরকা পরেন ঠিকই, তবে শরয়ী পর্দার প্রতি তারা একেবারেই উদাসীন। অনেকে পাতলা কাপড়ের তৈরী বা টাইট ফিট কিংবা মুখ-খোলা বোরকা গায়ে দিয়ে মনে করেন পর্দা হয়ে গেছে। এটা ভুল। যে বোরকা দ্বারা পরিপূর্ণ পর্দা পালন হবে, তা-ই পরিধান করতে হবে।
পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষক রং-বেরঙের কাপড়ে টাইট ফিট বোরকায় পর্দার উদ্দেশ্য অর্জিত হয় না। বোরকা পরিধান করে মুখ, হাত, পা ইত্যাদি খোলা রাখলেও শরয়ী পর্দা আদায় হবে না।
পর্দা নারী জাতিকে রক্ষা করার আল্লাহপ্রদত্ত এক বড় নেয়ামত। এটা যথাযথভবে পালন করলে দুনিয়াতেও শান্তি, আখেরাতেও শান্তি।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের মা-বোনদের যথযথভাবে শরয়ী পর্দা পালন করা তৌফিক দান করুক। আমিন।
– নূর হোসাইন সবুজ, শিক্ষার্থী- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা-ঢাকা এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগরী।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ