উম্মাহ অনলাইন: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাজপরিবারের সঙ্গে যুক্ত প্রিন্সেস হিন্দাহ আল-কাসেমি তার সামাজিক গণমাধ্যমের টাইমলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ ও ইসলামোফোবিক মন্তব্যের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে যাচ্ছেন। এসব মন্তব্যের বেশিরভাগ আসছে আরব আমিরাতে কর্মরত ভারতের হিন্দু ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের কাছ থেকে।
এই প্রবণতায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রদূত পবন কাপুর ভারতীয় নাগরিকদের বলেন যে, বৈষম্য আমাদের নৈতিক বুনন ও আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং আমিরাতে বাস করা ভারতীয়দের এটা মনে রাখতে হবে।
প্রিন্সেস হিন্দার সঙ্গে বিশেষভাবে কথা বলেছে এই গণমাধ্যম। এ সময় তিনি, বিশেষ করে কিছু ব্যক্তির মন্তব্যের কারণে একই সঙ্গে বেদনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমিরাত ও ভারতের সম্পর্ক শত বছরের পুরনো। কিন্তু এই প্রবণতা নতুন। ভারতীয়দের কাছ থেকে আগে কখনো এমন বিদ্বেষমূলক আচরণ আমরা পাইনি।
আরও পড়তে পারেন-
‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ
কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইসলামের শিক্ষা: ফরহাদ মজহার
আদর্শবানরূপে নিজেকে গড়তে চাইলে চার গুণাবলী অর্জন করতে হবে
‘হিজাব’ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করে: মার্কিন গবেষক!
বিশ্বকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস
তিনি বলেন, আগে আমি কখনো কোন ভারতীয় আরব বা মুসলমানদের উপর হামলা করছে বলে শুনিনি কিন্তু এখন আমার টাইমলাইনে আরব ও মুসলমানদের অপমান করে লেখা মন্তব্যে ভারপুর। এগুলো ভারতীয়সুলভ নয়।
প্রিন্সেস হিন্দাহ যদিও স্বীকার করেন যে, কিছু ব্যক্তির এ ধরনের মন্তব্য আরব আমিরাতে কর্মরত বিপুল সংখ্যক ভারতীয়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু তিনি বেশ কায়দা করে ভারতীয়দের জন্য একটি হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন এভাবে, “শুধু মুসলিম ও খ্রিস্টান – আমরা কাদেরকে আমিরাতে জায়গা দেবো সেটা বেছে নিতে ভারত কি আমাদেরকে বাধ্য করছে? আমরা এই প্রশ্ন তুলিনি। আমাদের কাছে তারা সবাই ভারতীয়। তারা ভারতীয় মুসলমান বলে আমরা শুধু তাদের সঙ্গে কাজ করবো, এভাবে কাউকে আমরা আলাদাভাবে ভাগ করিনি”।
দূতাবাসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী আরব আমিরাতে প্রায় ৩৫ লাখ ভারতীয় রয়েছে, যারা দেশটির জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ। ভারতীয়রাই সেখানে সবচেয়ে বড় বিদেশী জাতিগোষ্ঠী।
প্রিন্সেস হিন্দা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমি যদি প্রকাশ্যে বলি যে, ভারতীয় হিন্দুদের আমিরাতে মেনে নেয়া হবে না, তাহলে ভারতীয়দের কেমন লাগবে? প্রতিবছর আমিরাত থেকে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স ভারতে যায় – গত বছরও গিয়েছে। ভাবুন, সেটা বন্ধ হয়ে গেলে কেমন হবে? ভারতীয়রা এখানে কঠোর পরিশ্রম করে। আমি মনে করি না তারা ওইসব লোককে পছন্দ করবে- যারা তাদের ভুল প্রতিনিধিত্ব করছে।
তিনি কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন উল্লেখ করে প্রিন্সেস বলেন যে, এ কারণে তার উদ্বেগ নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলেননি। তবে তার সঙ্গে সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নবদীপ সুরির যোগাযোগ রয়েছে। তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, প্রিন্সেসের বক্তব্য ‘জোরালো ও স্পষ্ট’।
প্রিন্সেস বলেন, তার দেশে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য অবৈধ। তিনি ঘৃণা থামাতে তার কণ্ঠ সরব করে যাবেন। কারণ, তিনি ভারতের বন্ধু। সূত্র- এসএএম।
উম্মাহ২৪ডটকম: আরএএম
উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com