।। মাওলানা নূর হোসাইন সবুজ ।।
মহব্বত, ভালোবাসা এগুলো মানবীয় গুণ। কিন্তু দয়া-মায়া ভালোবাসা এসব শব্দ যেন দিনেদিনে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। শব্দের ব্যবহার থাকলেও এগুলোর ধরন-ধারণ রূপ পাল্টে গেছে। সীমিত দায়ভারে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে এর পরিধি।
মানুষ এখন ভালবাসে নিজের প্রয়োজন নিরসনে, মায়া খুনসুটি দেখায় আপন স্বার্থ উদ্ধারে। এমন দিন আসবে যখন মানুষকে ভালোবাসা শিখানোর জন্য শিক্ষকের নিকট পাঠানো হবে। তারা তালিম নিবে, কীভাবে ভালোবাসতে হয়? যদি কোনদিন এমনটি হয় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, প্রকৃত ভালোবাসার স্বরূপ কেমন হওয়া চাই তা আমরা জানতে চাই না। আমাদের সংকীর্ণ মনন এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক।
আমরা দৃষ্টান্ত খুঁজি এমন কোথাও এমন কারো কাছে, যার ভালোবাসা হয়তো একমুখী নির্দিষ্ট কোন ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ। অথচ ভালোবাসা সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত’র রূপরেখা রেখে গেছেন মানবতার মহান দূত কুল শিরোমণি হযরত মুহাম্মদ (সা.)।
তাঁর ভালোবাসার পরিধি এতই বিস্তৃত ছিল যে, তার সীরাত-জীবনীর যে দিকে তাকাই কেবল নিখাঁদ ভালোবাসা সুষমায় চোখ ধাঁধিয়ে যায়। প্রকৃতি থেকে শুরু করে মানবজীবনে দয়ামায়া ভালোবাসার কোন অনুষঙ্গই বাদ যায়নি।
ভালোবাসা যোগ্যতার ব্যাপার। পড়তে লেখতে না জেনেও যে যোগ্যতা পূণ্য অর্জন করেছিলেন মহানবী (সা.) তার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে পুরো কায়েনাত। শিশু থেকে বৃদ্ধ, বৃক্ষরাজি থেকে বিহঙ্গকুল কোন কিছুই তার দয়ার সিক্ত থেকে খালি ছিল না।
আরও পড়তে পারেন-
- উলামায়ে কেরামের প্রতি মুফতি শফী (রাহ.)এর দরদমাখা নসিহত
- কম্পিউটার চিপ শিল্প: জলবায়ুর উপর ফেলছে ভয়ঙ্কর প্রভাব
- ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করে ইসরায়েল
- ব্যতিক্রমী এক ইসলামী আইন গবেষক
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
মহানবীর ঘর ছিলো অকৃত্রিম ভালোবাসায় ভরা। অভাব-অনটনে কারো সঙ্গে রূঢ় দুর্ব্যবহার করেননি। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করেছেন। শত্রুদের সাথে ক্ষমা আর ভালোবাসার এমন নজির দেখিয়ছেন, পরম শ্রদ্ধায় তারা তাঁকে আল-আমীন উপাধিতে ভূষিত করেছেন এবং দলে দলে তারা ইসলামের পথে পা বাড়িয়েছেন।
এখানেই মহানবী (সা.) ইসলামের মূল সৌন্দর্যের লাবণ্য প্রস্ফুটিত হয়।
আমরা সময় কিংবা পরিস্থিতির উপর দোষ চাপিয়ে নিজের দায় মুক্তির পথ খুঁজি। সমাধান হাতড়ে বেড়াই নানান অপরিপক্ক উৎসে। অথচ একবার যদি পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের জীবনে ফিরে তাকাই, তবে তা থেকে খুঁজে নিতে পারি ধৈর্য, আত্মসংযম, ক্ষমা, আর ভালোবাসার অহর্নিশ প্রেরণা। একমাত্র তিনিই হয়ে উঠতে পারেন আমাদের জন্য প্রকৃত মানবিক দয়া-মায়া ও ভালোবাসার শ্রেষ্ঠতম ও শুদ্ধতম শিক্ষক।
লেখক: নিজস্ব প্রতিনিধি, উম্মাহ ২৪ ডটকম এবং কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক- ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ