।। আলতাফ পারভেজ ।।
এই ছবির ২৮ জনের মধ্যে ২৭ জন হলেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এমপি। এরা অবরুদ্ধ কাশ্মীর গেলেন গতকাল।
বিস্ময়কর হলেও সত্য ভারত সরকার এই সফরের বিষয়ে খুব সহায়তা দিচ্ছে। অথচ এতদিন কাশ্মীর বিষয়ে সকল বিদেশী আগ্রহকে অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।
এটা সকলেরই জানা, কাশ্মীরে স্থানীয় সকল রাজনীতিবিদ বন্দি। এমনকি ভারতীয় রাজনীতিবিদরাও সেখানে যেতে পারছেন না। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও কিছুদিন আগে কাশ্মীরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
বিদেশী কোন সাংবাদিকেরও কাশ্মীরে কাজ করায় নিষেধাজ্ঞা আছে। এমনকী ভারতে কাজ করছেন এমন বিদেশী কূটনীতিবিদরাও কাশ্মীর যেতে পারছেন না সরকারের আপত্তির কারণে। অথচ ইউরোপ থেকে রাজনীতিবিদদের নিয়ে আসা হয়েছে অবরুদ্ধ কাশ্মীরীদের দেখাতে। ভারতের কাশ্মীর-নীতির এই স্ববিরোধিতা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক।
আরও কৌতূহল উদ্দীপক হলো, দিল্লীর ইইউ অফিস বলছে, এই এমপিরা কোন ‘অফিসিয়াল’ ডেলিগেশনে নয়– ব্যক্তিগত সূত্রে সফরে এসেছেন!! অর্থাৎ এদের মূলত ভারত সরকার নিয়ে এসেছে। যদিও সরকার জানাচ্ছে, এরা এসেছেন একটি এনজিও’র আমন্ত্রণে!!
তবে মূল প্রশ্ন হলো কেন নিয়ে আসা হয়েছে এমুহূর্তে এদের? তার কিছুটা আগাম উত্তর পাওয়া যায় এই এমপিদের পরিচয় সম্পর্কে জানলে।
তিন জন ব্যাতীত ২৭ এমপি’র সকলেই ইউরোপের চরম দক্ষিণপন্থী দলগুলোর প্রতিনিধি। যেসব দল ইউরোপে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নাজি পার্টির ঐতিহ্য বয়ে বেড়াচ্ছে সেসব দল থেকেই এই প্রতিনিধিদের বাছাই করা হয়েছে।
যেমন ফ্রান্স থেকে যে ছয় জন এসেছেন, তারা সবাই লি পেনের ন্যাশনাল ফ্রন্টের লোক। পোলান্ড থেকে নিয়ে আসা হয়েছে একই আদর্শের জাস্টিস এন্ড ল’ পার্টির ছয় এমপিকে। ইটালী, চেকোশ্লোভাকিয়ার এমপিদের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যও অনুরূপ।
দক্ষিণ এশিয়ায় যারা আরএসএস-বিজেপি’র সঙ্গে ইউরোপের নাজি পার্টির আদর্শিক সম্পর্ক সম্পর্ক জানতে আগ্রহী তারা কাশ্মীরমুখী ইইউ এমপিদের এই দলটির আগমন-নিগর্মন পরবর্তী কথাবার্তার দিকে মনযোগ রাখতে পারেন।
– আলতাফ পারভেজ, সাংবাদিক ও গবেষক।