সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে দেশটির বর্তমান প্রশাসনের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত বিমানঘাঁটির কাছে লাতাকিয়া প্রদেশে সংঘর্ষে তারা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
দামেস্কের নতুন সরকারের প্রতি অনুগত সিরিয়ার বাহিনী দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি উপকূলীয় এলাকায় ক্ষমতাচ্যুত আসাদ সরকারের অবশিষ্টাংশের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে।
ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার ইসলামপন্থী সরকারের সঙ্গে যুক্ত বাহিনীর ওপর এটি সবচেয়ে সহিংস হামলা। আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় অঞ্চলে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, ‘বিশাল সামরিক শক্তি জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে। নিহতদের সংখ্যা বিবিসি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পরেনি।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিরিয়াভিত্তিক স্টেপ সংবাদ সংস্থা প্রতিবেদন করছে, সরকার সমর্থিত বাহিনী প্রায় ৭০ সাবেক শাসকযোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং আরো ২৫ জনেরও বেশি জাবলেহ ও তার আশপাশ থেকে আটক করা হয়েছে। পৃথকভাবে এএফপি সংবাদ সংস্থা একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মোট ৪৮ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ১৬ জন সরকারি নিরাপত্তাকর্মী, ২৮ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।
হোমস এবং আলেপ্পো শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যাচাই না করা ভিডিওগুলোতে হোমসের আবাসিক রাস্তায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে লাতাকিয়ায় যুদ্ধরত আসাদের অনুগতদের প্রতি একটি সতর্কবার্তা জারি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
আবার কেউ কেউ মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কথা স্পষ্ট, অস্ত্র জমা দাও, নতুবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হও।’
অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য এই অঞ্চলটি একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলাউইট কর্মীরা বলেছেন, আসাদের পতনের পর থেকে তাদের সম্প্রদায় সহিংসতা এবং আক্রমণের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ হোমস এবং লাতাকিয়ায়।
দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন, যেখানে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ড্রুজ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক অস্ত্র পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে বলেছিলেন, নতুন সরকার আসাদের অধীনে উৎপাদিত অবশিষ্ট যেকোনো মজুদ ধ্বংস করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আসাদের সরকার ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের সময় কখনো রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে, তবে কর্মীরা কয়েক ডজন রাসায়নিক হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে।
সূত্র- বিবিসি
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ