Home জাতীয় পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ‘র’ জড়িত থাকার তথ্য জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের হাতে

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ‘র’ জড়িত থাকার তথ্য জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের হাতে

পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সরাসরি জড়িত থাকা এবং নেপথ্যে জড়িত, ইন্ধনদাতা ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে পুনঃ তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এছাড়া পতিত আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম রয়েছে নেপথ্যে জড়িতদের তালিকায়। পুনঃ তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে পুনঃ তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান সোমবার ইনকিলাবকে বলেন, আমরা কাজ করছি, বসে নেই। তদন্ত চলছে। অপেক্ষা করুণ। প্রথম বৈঠকের পর গত ২৬ ডিসেম্বর পিলখানা হত্যাকান্ডের তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেছিলেন, ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনার সঙ্গে দেশি-বিদেশি শক্তি ও ষড়যন্ত্রের যারাই জড়িত, সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিশনের একজন সদস্য ইনকিলাবকে বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সরাসরি জড়িত থাকাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূণ্য তথ্য এরই মধ্যে আমাদের হাতে এসেছে। আমরা এসব তথ্য পর্যালোচনা করছি। এর বাইরে কিছুই বলা যাবে না বলে ওই সদস্য জানিয়েছেন।

পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের খুনের সাথে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিম, ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম এবং সাবেক লে. কর্নেল শামসুল আলম চৌধুরীর সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনও বলার সময় হয়নি। অপেক্ষা করুণ, সময় লাগবে। আমরা কাজ করছি।

সূত্র মতে, দীর্ঘ ১৬ বছরেও পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকান্ডের পেছনে কারা এতদিন কলকাটি নেড়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি। যাদের বিচারের মুখোমুখি হয়েছে, তারা আসলে নেপথ্যের কারিগর নয়। যারা এ ঘটনার আসল কারিগর তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি না করা পর্যন্ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বের করা সম্ভব হবে না। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। পিলখানা হত্যাকান্ডে প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা সদস্যসহ ৭৪ জন। আহত হন কয়েক শত। এখনই সময় পিলখানা হত্যাকান্ডের মতো বিশ্ব ইতিহাসে জঘন্যতম ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে নেপথ্যে জড়িতদের বের করা।

আরও পড়তে পারেন-

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিলখানা হত্যাকান্ডের সেই বীভৎস দৃশ্যাবলি এদেশের মানুষের মন থেকে আজও মুছে যায়নি। কতিপয় বিডিআর সদস্য যে এমন হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করতে পারে, সে কথাও মানুষ বিশ্বাস করে না। তাদের অনেকেই মনে করেন, পর্দার আড়াল থেকে কেউ না কেউ এ ঘটনায় ইন্ধন জুগিয়েছে। সেই ইন্ধনদাতা কারা? তারা কি এদেশেরই লোক, নাকি বিদেশি এজেন্ট? পিলখানা হত্যাকান্ডের অনেক আগে ঘটে যাওয়া কিছু কিছু ঘটনা বিচার-বিশ্লেষণ করে অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, কেবল কিছুসংখ্যক মধ্যম ও নি¤œসারির বিডিআর সদস্য দ্বারা এতবড় ঘটনার পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। এ ঘটনায় স্বার্থান্বেষী মহলের কোনো না কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে। আদালতও পূর্ণাঙ্গ রায়ে তারই প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে ছিল স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। দেশ-বিদেশে আলোচিত এই পিলখানা হত্যাকান্ডের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলেছেন, ওই ঘটনা ছিল রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক-সামাজিক নিরাপত্তায় বিঘœ সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। শুধু তাই নয়, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি দক্ষ, প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ধ্বংসেরও চেষ্টা। বিডিআর জওয়ানরা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙে দেয়াসহ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর প্রত্যক্ষ হুমকির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে যে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে, সেই কলঙ্কের চিহ্ন তাদের বহুকাল বহন করতে হবে। তাই পিলখানা হত্যাকান্ডে নেপথ্যে জড়িত ও ইন্ধনদাতাদের নাম তদন্ত কমিশন প্রকাশ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। পিলখানায় শহীদ পরিবারের স্বজনরা বলছেন, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, বিডিআর হত্যাকান্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে ও নেপথ্যে জড়িতদের বের করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।