Home জাতীয় তিস্তার দুঃখ তুলে ধরতে ৪৮ ঘণ্টা কর্মসূচি

তিস্তার দুঃখ তুলে ধরতে ৪৮ ঘণ্টা কর্মসূচি

রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহৎ পরিসরে কর্মসূচি পালন করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’।

আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দাবি বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগসহ বিশ্ব পরিমণ্ডলে তিস্তার দুঃখ তুলে ধরা হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ তৈরিসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর বাজার-সংলগ্ন তিস্তা নদীর বুকে রংপুরের কর্মসূচি পালিত হবে।

গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মহিপুর তিস্তায় গিয়ে দেখা যায়, কর্মসূচিকে ঘিরে তিনটি বড় বড় প্যান্ডেল করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য, একটি রাত্রি যাপনের এবং একটি খাবার তৈরি ও পরিবেশনের।

গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিবুর রহমান বলেন, ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর নেতৃত্বে টানা ৪৮ ঘণ্টার আন্দোলন কর্মসূচি হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি, এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিতে পারব, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না।

লালমনিরহাট কালিগঞ্জের আনিছুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের রাত্রিযাপনের প্যান্ডেল, সমাবেশ ও বিনোদনের জন্য মঞ্চ তৈরি, পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা করা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপনসহ সকল ধরনের কাজ শেষ হয়েছে। এ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার যদি তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করে তবে লাগাতার কর্মসূচি চলবে।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের নয়। এটি রংপুর বিভাগবাসীর আন্দোলন। এই আন্দোলন জনদাবিতে পরিণত হওয়ায় এতে তিস্তাপাড়ের মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। আশা করছি, দু’দিন ব্যাপক লোকসমাগম ঘটবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৭ তারিখ তিস্তাপাড়ের সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি জানাতে তিস্তাপাড়ে আসবেন।

তিস্তার পানি বণ্টন ও নদীর প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে পূর্বঘোষিত দু’দিনের কর্মসূচি আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাও’ শ্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশ নিবেন বিএনপি ও তার মিত্ররা।

দিনরাতসহ টানা ৪৮ ঘণ্টা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। তিস্তা চুক্তিসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান ও দেশের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে এই কর্মসূচি। লালমনিরহাট তিস্তা রেলসেতু-সংলগ্ন এলাকায় সোমবার কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরও পড়তে পারেন-

আগামীকাল মঙ্গলবার কর্মসূচির সমাপনী দিনে বক্তব্য রাখবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়াও দেশের উত্তরের পাঁচ জেলা- লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা, নিলফামারীর এগারো স্থানে দলের সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে সমাবেশ হবে। পাশাপাশি মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নিবেন।

জানা গেছে, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা অভিমুখে পদযাত্রা এবং নদীর দু’তীরে ২৩০ কিলোমিটারজুড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ কমিটি। ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাও’ স্লোগানে তিস্তা নদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সেমিনার, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তিস্তা ব্যারাজ, কাউনিয়া সেতু, মহিপুর সেতুসহ বিভিন্ন স্থানে তাঁবু টানিয়ে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।

পদযাত্রার বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকি।

তিস্তা রক্ষা কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আসাদুল হাবিব দুলু জানান, ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী ওই কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গজুড়ে বিশাল গণজমায়েতের আয়োজন হবে। এতে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, নদী গবেষক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা যোগ দেবেন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।