Home জাতীয় বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩০০ লকার ফ্রিজ, দুদককে খোলার অনুমতি

বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩০০ লকার ফ্রিজ, দুদককে খোলার অনুমতি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ৩০০ লকার ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহ করছে, এসব লকারে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ মজুদ রয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের লকার খোলার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই আদেশ দেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, আদালত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লকার খোলার অনুমতি দিয়েছেন। এই আদেশের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সেফ ডিপোজিট তল্লাশির বাধা কাটল।

এর আগে গত রবিবার লকার খোলার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী লকার ফ্রিজ করার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ছাড়া অন্য কেউ ব্যাংকের লকার বা অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে পারে না।
দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোনো লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে।

সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর লকার থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধারের পর এবার ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সব লকার খুলে তালিকা তৈরি করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত গত সোমবার দুদকের আবেদনে এই আদেশ দেন। এতে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা ফেঁসে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, এস কে সুরের লকার খুলতে গিয়ে দুদক দেখে, সিলগালা করা এমন আরো ব্যক্তিগত লকার রয়েছে। সেখানে অবৈধ সম্পদ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লকারগুলো খুলে এতে কী পাওয়া যায়, তার তালিকা তৈরির আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আরও পড়তে পারেন-

এর আগে দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হোসাইন বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা ব্যক্তিগত লকার খুলে প্রাপ্ত সামগ্রীর তালিকা তৈরি করার আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন।

দুদক বলছে, গত ২৬ জানুয়ারি তাদের একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে তল্লাশি চালিয়ে এস কে সুর চৌধুরীর সিলগালা করা তিনটি লকার খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, এক লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, এক হাজার পাঁচ গ্রাম স্বর্ণালংকার এবং ৭০ লাখ টাকার মুদারাবা মেয়াদি আমানত সনদ (এমটিডিআর) উদ্ধার করে।

তল্লাশির সময় তারা রেজিস্ট্রার পর‌্যালোচনা করে দেখতে পায়, আরো কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা গোপনে লকার ব্যবহার করছেন, যেখানে অবৈধ সম্পদ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এসব লকার সিলগালা করা আছে এবং এতে অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর‌্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। সরকারি চাকরির সুযোগ নিয়ে এই কর্মকর্তারা দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের এবং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জন করতে পারেন, যা তাঁদের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।

মামলার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরুর আগে তাঁরা ব্যাংকের লকারে রাখা মূল্যবান সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি এসব লকার থেকে সম্পদ সরিয়ে ফেলা হয়, তাহলে তদন্তের ফলাফল শূন্য হয়ে যেতে পারে। তাই তদন্তের স্বার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুদকের একটি টিম লকার খুলে সম্পদ উদ্ধার করতে চায়। এ জন্য দুদক বিধিমালা, ২০০৭-এর বিধি ১৮(১) অনুযায়ী আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।

এ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে আপাতত নতুন করে কোনো লকার বরাদ্দ না দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে আগের লকারগুলো যাতে আপাতত খোলা না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে।

জানা যায়, বর্তমানে লকারে কোনো সম্পদ রাখতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সঙ্গে কোনো সম্পদ বের করতেও দেওয়া হচ্ছে না।

ওই সব বিশেষ লকারে গোপনে অপ্রদর্শিত বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ জমা রয়েছে বলে মনে করছে দুদক।

এর আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনোভাবেই যাতে লকার থেকে অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে না পারেন, এ জন্য সব লকার ফ্রিজ করার অনুরোধ জানিয়ে গত রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠান দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।