আজ (২৫ ডিসেম্বর) বুধবার দেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উম্মুল মাদারিস খ্যাত জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে দারুল উলূম দেওবন্দের আদলে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরষ্কৃার বিতরণ করা হবে।
পুরষ্কার বিতরণী সভায় জামিয়া মহাপরিচালক হযরত আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী (দা.বা.), সদরুল মুদাররেসীন ও শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা শেখ আহমদ (দা.বা.), শিক্ষাসচিব হযরত আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ (দা.বা.)সহ জামিয়ার অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মুহাদ্দিস, মুফতি এবং শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। জামিয়ার শিক্ষাবিভাগ থেকে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীকে পুরষ্কার বিতরণী সভায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সকাল ৯টা থেকে মূল শিক্ষা ভবনের দ্বিতীয় তলায় দারুল হাদীসে পুরষ্কার বিতরণী সভা শুরু হয়ে একটানা যোহর পর্যন্ত চলবে। পুরষ্কার বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নসীহত ও উদ্দীপনামূলক বক্তব্য রাখবেন মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী, শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ’সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মুহাদ্দিস ও মুফতিবৃন্দ।
জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর শিক্ষাকার্যক্রম, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং শিক্ষার্থীদের অধ্যাবসায়ের উপর বিশেষ দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন শিক্ষাসচিব ও মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ।
জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত শিক্ষাবর্ষ ১৪৪৪-৪৫ হিজরীর বার্ষিক পরীক্ষায় মুমতাজ বিভাগে উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদেরকে পুরষ্কৃত করা হবে। এছাড়া সাধারণ শিক্ষা বিভাগের প্রতি জামাতের শীর্ষস্থান অর্জনকারী ১২ জন ছাত্র, তাখাসস বিভাগসমূহে শীর্ষস্থান অর্জনকারী ১০ জন এবং হেফজখানার দুই সেশনের শীর্ষস্থান অর্জনারী ২ জনসহ ২৪ জন ছাত্রকে বিশেষ পুরষ্কার দেওয়া হবে।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
ইতোমধ্যে পুরস্কার বিতরণী সভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য পুরষ্কারের প্যাকেটসমূহ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জামিয়ার শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার বিতরণ প্রসঙ্গে শিক্ষাসচিব আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ এই প্রতিবেদককে বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে পুরস্কার বিতরণ এক অনন্য উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি এবং তাদের মেধা বিকাশে সহায়ক হতে পারে এই উদ্যোগ। প্রতি বছর কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান তাদের কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে, যা অন্যদেরও আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা জোগায়। দারুল উলূম দেওবন্দসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণের প্রচলন আছে। আলহামদুলিল্লাহ, দারুল উলূম হাটহাজারীতেও গত কয়েক বছর ধরে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে।
আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আরও বলেন, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মেধা, সৃজনশীলতা এবং পরিশ্রমের মূল্যায়ন করা হয়। এটি তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং ভবিষ্যতে আরও সাফল্যের জন্য অনুপ্রাণিত করে। অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও এই উদ্যোগের মাধ্যমে সন্তুষ্টি পান। কারণ, এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের মনোযোগী ও উৎসাহিত হওয়ার একটি শক্তিশালী মাধ্যমও বটে।
তিনি বলেন, কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং সামাজিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু মেধাবীদের জন্য নয়, বরং সকলের জন্য শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায় ও লেখা-পড়ার উন্নত মান গঠনের মাধ্যমে দ্বীনি শিক্ষার বিস্তার ও খিদমত আঞ্জামসহ বহুমুখী অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সহায়ক হয় বলে মনে করি।
আল্লামা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আগামীকালকের পুরষ্কার বিতরণী সভা সফল ও সার্থক হওয়ার জন্য সকলের বিশেষ দোয়া কামনা করেন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ