স্ট্রোক, নামটা শুনলেই অনেকের মনে হয় এটা শুধু বয়স্কদের রোগ, আর এটি কেবল মস্তিষ্কে ঘটে। কিন্তু এই ধারণাগুলো আসলে সত্য নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে স্ট্রোক নিয়ে প্রচলিত অনেক ভুল ধারণা ভেঙে গেছে। তাই আজ আমরা সহজ-সরল ভাষায় স্ট্রোক নিয়ে সঠিক তথ্যগুলো জানার চেষ্টা করব।
অনেকেই মনে করেন, স্ট্রোক কেবল বেশি বয়সে হয়। কিন্তু সত্যি হলো, স্ট্রোকের কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। টিনএজার বা এমনকি শিশুরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে।
বেশি বয়েসে স্ট্রোক হওয়ার কারণ কী?
কারন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিংবা কার্ডিয়াক সমস্যা।জিনগত কিছু সমস্যা যেমন—জন্মগত কিছু রোগও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ভাস্কুলাইটিস বা কোভিড-১৯ এর মতো অসুস্থতা কম বয়সে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। তাই বয়স কম বলে স্ট্রোক নিয়ে উদাসীন হওয়ার সুযোগ নেই।
স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিৎসা করা জরুরি।
আরও পড়তে পারেন-
- উলামায়ে কেরামের প্রতি মুফতি শফী (রাহ.)এর দরদমাখা নসিহত
- কম্পিউটার চিপ শিল্প: জলবায়ুর উপর ফেলছে ভয়ঙ্কর প্রভাব
- ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করে ইসরায়েল
- ব্যতিক্রমী এক ইসলামী আইন গবেষক
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
কিন্তু তা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ধরন নির্ধারণ করতে মেডিক্যাল ইমেজিং প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ইশকেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, যেখানে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ সচল করতে সময় লাগে। উন্নত প্রযুক্তি যেমন ইন্ট্রাভেনাস থ্রম্বোলাইসিস (আইভিটি) এবং এন্ডোভাসকুলার টেকনিক এই চিকিৎসাকে আরও কার্যকর করেছে।
স্ট্রোক শুধু মস্তিষ্কে হয় এটাও অনেক বড় এক মিথ।
স্ট্রোক স্পাইনাল কর্ড এবং স্নায়ুতন্ত্রের অন্যান্য সংবেদনশীল অংশেও হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে।
স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক কি একই?
অনেকেই মনে করেন, স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাক একই ধরনের সমস্যা। তবে এটি ভুল। হার্ট অ্যাটাক হলো হৃদযন্ত্রে রক্ত প্রবাহে বাধাজনিত একটা রোগ। অন্যদিকে স্ট্রোক মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রে রক্ত প্রবাহে বাধা। অবশ্য বিরল কিছু ক্ষেত্রে এই দুটি একসঙ্গে ঘটতে পারে, তবে দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জটিলতা।
স্ট্রোকের লক্ষণ কীভাবে বুঝবেন?
স্ট্রোক দ্রুত চিহ্নিত করতে চিকিৎসকেরা BE FAST পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এখানে—
B (Balance): ভারসাম্য হারানো।
E (Eyes): ঝাপসা বা ডাবল ভিশন।
F (Face): মুখে বিকৃতি।
A (Arms): হাত বা পায়ের নিয়ন্ত্রণ হারানো।
S (Speech): কথা জড়িয়ে যাওয়া।
T (Time): লক্ষণ দেখলেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন।
স্ট্রোকের চিকিৎসা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। যেমন এন্ডোভাসকুলার পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্লকেজ মেরামত করা হয়। অন্যদিকে সিঙ্গল সেল জিনোমিক্স এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে স্ট্রোকের কারণ বিশ্লেষণ করা হয়। অল্প বয়স বা বেশি বয়স—সবার জন্যই রয়েছে এ ধরনের চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ