সিরিয়ার আল-আসাদ পরিবারের নির্মম, কয়েক দশকের শাসনের অবসান ঘটানো বিদ্রোহীরা এখন দেশটিকে একত্রিত করা এবং কীভাবে এটিকে শাসন করা যায় তা নির্ধারণ করার বিশাল জটিল কাজের মুখোমুখি।
তারা একটি চমকপ্রদ আক্রমণে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে পতন ঘটায় যা মাত্র কয়েক দিন স্থায়ী হয়েছিল এবং রবিবার দামেস্কে শেষ হয়েছিল। সিরিয়ার রাজধানীর পতন একটি ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে এবং একটি সরকারকে তাড়িয়ে দিয়েছে যেটি তার নিজের নাগরিকদের উপর সন্ত্রাস ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।
অনেক সিরিয়ান আল-আসাদ থেকে মুক্ত হতে পেরে আনন্দিত, যিনি তার দেশ থেকে পালিয়ে রবিবার রাশিয়ায় পৌঁছেছেন। পরবর্তী কী হবে তা নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। ইসলামপন্থী নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির নেতৃত্বে, যিনি আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বিদ্রোহীদের এখন দামেস্ককে নিরাপদ করতে হবে এবং গভীর জাতিগত, সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মীয় বিভাজন সহ একটি দেশের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করতে হবে।
আরও পড়তে পারেন-
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
- উগ্র হিন্দুত্ববাদ এবং মুসলিমবিদ্বেষ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য হুমকি
- ‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ
- মৃত্যুর স্মরণ জীবনের গতিপথ বদলে দেয়
- যে কারণে হিন্দুত্ববাদের নতুন নিশানা ‘দারুল উলূম দেওবন্দ’
আল-জোলানি রোববার দামেস্কের একটি মসজিদে সমর্থকদের বলেছিলেন যে, আক্রমণের সাফল্য ‘পুরো ইসলামিক জাতির জন্য একটি বিজয়’ এবং সিরিয়া ‘তার সুস্থতা ফিরে পাচ্ছে’।
এইচটিএস নেতা তার ভাষণে বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, এই বিজয় এ অঞ্চলের জন্য ঐতিহাসিক এক ঘটনা।’ আল-জোলানি বর্তমানে তার প্রকৃত নাম আহমেদ আল-শারা ব্যবহার করছেন। তার ছদ্মনাম গ্রহণের বিষয়ে তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম পিবিএসকে বলেছিলেন, তার পরিবারের মূল অংশ গোলান মালভূমি থেকে এসেছে। ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে, তারা সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়ে দামেস্কের একটি অঞ্চলে বাস করতে শুরু করে। মূলত পূর্বপুরুষদের স্মৃতি জাগ্রত রাখতেই তিনি তার নামে আল-জোলানি যোগ করেছিলেন।
আহমেদ আল-শারা ওরফে আল-জোলানি আরও বলেন, ‘বিদ্রোহীদের এই বিজয় কেবল সিরিয়ার নয়, এটি সমগ্র মুসলিম জাতির বিজয়। আজ, সিরিয়া পরিশুদ্ধ হচ্ছে। যারা দীর্ঘদিন (আল-আসাদের) কারাগারে বন্দী ছিলেন তাদের ত্যাগের বিনিময়েই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। আজ মুজাহিদীনরা (যোদ্ধারা) তাদের শৃঙ্খল ভেঙেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসাদের শাসন হাজারো নিরীহ নাগরিককে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করেছে। আজ আমরা এই বিজয়ের পুরস্কার পেয়েছি। এটি সব সিরিয়াবাসীর জন্য।’
এইচটিএসের শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘আসাদের শাসনামলে সিরিয়া ইরানের উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি স্থান হয়ে উঠেছিল, যেখানে সাম্প্রদায়িকতা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল ছিল।’ তিনি মূলত সিরিয়ায় আসাদের মিত্র ইরান এবং এর লেবাননের প্রক্সি হিজবুল্লাহকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেছিলেন। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ