পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী মতলববাজদের কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পরামর্শে কান দেওয়া যাবে না। কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গির ইজতেমার মাঠ সবসময়ের জন্যই উলামাবিদ্বেষী সাদপন্থী মুক্ত রাখতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন জাতীয় উলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে জাতীয় উলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘দাওয়াত ও তাবলিগ হেফাজতের লক্ষ্যে’ এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জাননো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রখ্যাত আলেম মাওলানা মুহাম্মদ ফজলুল করিম কাসেমি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সাদপন্থীদের কথায় ‘মূলধারা’ বলতে পৃথিবীতে কোনো ধারা নেই। তাবলিগের এই মেহনতের কাজ উলামায়ে দেওবন্দের সূর্যসন্তান হজরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) শুরু করেছেন, এখনো হক্কানি আলেমরা এই কাজের আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন, তারাই দাওয়াত ও তাবলিগের মূলধারা, এর বাইরে কোনো ধারা নেই। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে কোনো বৈষম্যের স্থান নেই, কারণ ‘বৈষম্য’ শব্দের অর্থ হলো- সব অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়া। যারা দ্বীনের, কোরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যাকারী, নবী-রাসুল ও সাহাবা বিদ্বেষী তাদের তাবলিগের মেহনতে কোনো অংশ থাকার কোনো সুযোগ নেই।
এক কথায়, উলামাবিদ্বেষী, টঙ্গিতে মানুষ হত্যাকারী, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সাদপন্থীদের কাকরাইল ও টঙ্গিতে কোনো অধিকার নেই, থাকার কোনো প্রশ্নই নেই। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের কোনো পক্ষ নেই, বরং একটাই পক্ষ; তা হলো হজরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর কর্মপদ্ধতি অনুসরণকারী উলামায়ে হক্কানির পক্ষ।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা দুর্নীতিবাজদের তেলমর্দন করে মদদ দিয়েছে, ভোটারবিহীন নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দলীয় কর্মী হিসেবে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছে, আজকে প্রায় ষাটের অধিক আলেম-উলামাসহ দুই হাজারের অধিক শহিদানের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত নতুন বাংলাদেশে আমাদের আস্থার প্রতীক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলী এবং সমন্বয়কদের আশেপাশে সাদপন্থীদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী মতলববাজদের কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পরামর্শে কান দেওয়া যাবে না। কাকরাইল মসজিদ এবং ইজতেমার মাঠ সবসময়ের জন্য উলামাবিদ্বেষী সাদপন্থী মুক্ত রাখতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দেশ এখন একটি সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে, এ অবস্থায় সাদপন্থীদেরকে নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।
মাওলানা মো. ফজলুল করিম কাসেমি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদ মাদরাসা কমপ্লেক্স ও টঙ্গির ইজতেমা ময়দান শতকরা ৯০ শতাংশ উলামাপন্থী তাবলিগের সাথী তথা উলামায়ে কেরামদের পরামর্শে শুরাই নেজামের অধীনে ছেড়ে দিতে হবে। গত ৫ নভেম্বরের মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্রের দাবিও এমনটি ছিল। অন্যথায় ২৪ ঘন্টার নোটিশে ঢাকা অচল হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা দেশবাসীকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখি না।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি গত কয়েকদিন আগে গুটি কয়েক সাদপন্থীর সংবাদ সম্মেলন মিথ্যাচারে ভরা পাগলের প্রলাপ মনে হয়েছে। সমাধানের পথ একটি খোলা আছে, তওবা করুন আপনাদের আমিরকে তওবা করান, দ্বীনের সহিহ পথে ফিরে আসুন, সংঘাত নয় শান্তির পথে চলতে শিখুন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমি, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারি ও মাওলানা সানাউল্লাহ প্রমুখ।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ