চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার হতবাক হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা। এ নিয়োগের বিরোধিতা করে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (১১ অক্টোবর) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ প্রেরিত বিবৃতিতে তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অন্তর্ভুক্ত করায় আমরা হতবাক হয়েছি। তিনি শাহবাগী নাস্তিক্যবাদীদের দোসর। হেফাজত আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে তেঁতুল হুজুর বলে ব্যঙ্গ করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন, যা ক্ষমা করা যায় না। তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
হেফাজত নেতৃদ্বয় আরো বলেন, বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই জালেম শাসকগোষ্ঠীর পতন নিশ্চিত হয়। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ একাধিক উপদেষ্টা সেই পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন, সমর্থন জুগিয়েছেন।
আরও পড়তে পারেন-
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
- উগ্র হিন্দুত্ববাদ এবং মুসলিমবিদ্বেষ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য হুমকি
- ‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ
- মৃত্যুর স্মরণ জীবনের গতিপথ বদলে দেয়
- যে কারণে হিন্দুত্ববাদের নতুন নিশানা ‘দারুল উলূম দেওবন্দ’
এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠ সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন ফারুকী। এছাড়া তিনি গণঅভ্যুত্থানের পর সেই শাসনের প্রতীক সংস্কারের পক্ষে আওয়াজ তুলে এক প্রকার ফ্যাসিবাদীদের পক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন, যা দেশবাসীর দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। জুলাই বিপ্লবে হাজারো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় এ দেশের ছাত্র-জনতাসহ আলেম-ওলামারা সম্মিলিতভাবে বসিয়েছে।
তারা আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হলো এই সরকারও ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছিল, তাদের বিচার এখনো হয়নি। এর বদলে তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদ পরাজিত করেছে। ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে এ দেশের আপামর তৌহিদী জনতা আপনাদেরও ক্ষমা করবে না।
নেতারা আরও বলেন, দেশে কি যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের অভাব পড়েছে? ফারুকীর মতো একজন নাট্যকারকে কোন যুক্তিতে উপদেষ্টায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা দেশবাসী জানতে চায়। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, জাতীয় মুনাফিক, গাদ্দার, নাস্তিক, মুরতাদ ও ফ্যাসিস্টের দোসর কাউকে আমরা উপদেষ্টা পরিষদে দেখতে চাই না। শহীদ ভাইদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে কখনোই তা মেনে নেওয়া হবে না।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ