Home অন্যান্য খবর ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলেনে যা বলেছেন মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী

ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলেনে যা বলেছেন মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী

রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওলামা মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, “কাদিয়ানীরা ইসলামের মূল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শেষ নবী হিসেবে বিশ্বাস করে না; যা ইসলাম বিরোধী এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য হুমকি।

গতকাল (২৪ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার, সকাল ৯টায়, রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি) মিলনায়তনে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে- সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে এক ওলামা-মাশায়েখ ও সুধী সম্মেলেন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী আরও বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, কাদিয়ানীদেরকে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য এই দাবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দাবি দেশের ১৭ কোটি তাওহিদী জনতার, যাতে কাদিয়ানীরা সাধারণ মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করে ধোকা দিতে না পারে। সুতরাং সরকারের কর্তব্য, জনগণের দাবি অবিলম্বে মেনে নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, “কাদিয়ানী মতবাদ সরাসরি ইসলামের মৌলিক আকিদা এবং মুসলিম ঐক্যের ওপর আঘাত হানে। তারা ইসলামের ভিত্তিমূল নষ্ট করতে চায়। কাদিয়ানীদের ঈমানবিধ্বংসী এমন অপতৎপরতা আমরা চুপচাপ চেয়ে চেয়ে দেখে যেতে পারি না। ইসলামের সঠিক পথ রক্ষায় এবং সাধারণ মুসলিম জনসাধারণকে প্রতারণা ও বিভ্রান্তি থেকে রক্ষার লক্ষ্যে আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই, কাদিয়ানীদেরকে দ্রুত অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা করা হোক।”

মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী তাঁর বক্তব্যের শেষে আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন, যাতে মুসলিম উম্মাহ কাদিয়ানীদের বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা পায় এবং ইসলামের সঠিক পথে অটল থাকতে পারে।

আরও পড়তে পারেন-

বৃহস্পতিবারের সম্মেলন থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তকালীন সরকারের কাছে সংগঠনের সদস্য সচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী ৭টি দাবি পেশ করেন। যথা-

১. অনতিবিলম্বে সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
২. কাদিয়ানীদের সঙ্গে মুসলমান ছেলে-মেয়ের বিবাহ ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক সম্পূর্ণ হারাম। কাদিয়ানীরা মুসলিম পরিচয় আড়ালে মুসলমানদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে। অনতিবিলম্বে মুসলিম ছেলে-মেয়ের সঙ্গে কাদিয়ানীদের বিবাহ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করতে হবে।
৩. দেশব্যাপী কাদিয়ানীদের মসজিদ নামে উপাসনালয় নির্মাণের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
৪. কাদিয়ানীদের জন্য ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় পরিভাষা যথা- নবী-রাসুল, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত, আজান, মুয়াজ্জিন, মসজিদ, ইমাম ইত্যাদি ধর্মীয় পরিভাষার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. পঞ্চগড় বা দেশের যেকোনো স্থানে কাদিয়ানীদের তথাকথিত জলসা সালানা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৬. কাদিয়ানীদের যাবতীয় প্রচারণামূলক অপতৎপরতা বই-পুস্তক মাসিক/পাক্ষিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন, লিফলেট, ইত্যকার যাবতীয় প্রকাশনা, মুদ্রণ, প্রচার, সংরক্ষণ ও বিতরণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৭. কাদিয়ানীদের পৃষ্ঠপোষক ও অর্থ যোগানদাতা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ, আরএফএলসহ সকল কোম্পানির পণ্য ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সকল স্তরেই বয়কট করতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

এ সময় মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন- ১. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি প্রদান করবে। ২. পর্যায়ক্রমে দেশের সকল জেলা ও বিভাগীয় শহরে খতমে নবুওয়াত সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। ৩. কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে সরকারিবাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি আদায় করার জন্য আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় আয়োজন করা হবে।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।