Home রাজনীতি যুব জমিয়তের হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন মাওলানা ইসহাক কামাল

যুব জমিয়তের হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন মাওলানা ইসহাক কামাল

বক্তব্য দিচ্ছেন যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল। ছবি- উম্মাহ।

নূর হোসাইন: যুব জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল বলেছেন, জাতীয় নেতৃবৃন্দ আমাদের প্রতি যে প্রত্যাশা করেছেন, বর্তমান কমিটি সে প্রত্যাশা পূরণে বিরামহীনভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং শতভাগ সফল হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ অগ্রসর হবে, ইনশাআল্লাহ। এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌছতে সক্ষম হবে। কারণ যুব জমিয়ত বাংলাদেশ শতবর্ষী, প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ, রাজনৈতিক কাফেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহযোগী সংগঠন।

তিনি বলেছেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম একটি ঐতিহাসিক আদর্শিক কাফেলা। যে কাফেলা তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ জন্মগ্রহণ করেছিল অপরাজিত পরাশক্তি ব্রিটিশদের চোখ রাঙ্গানিকে উপেক্ষা করে এবং ব্রিটিশদেরকে ভারত উপমহাদেশ থেকে বিতাড়িত করার ধারাবাহিক আন্দোলনের মাধ্যমে জমিয়ত বেড়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল এ-সব কথা বলেছেন।

তিনি আরো বলেছেন, বলেছেন, জমিয়ত স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনেছে। স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে সংগ্রাম করেছে এবং অন্যদেরও স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের সাহস যুগিয়েছে। যার ফলাফল মাত্র ২৮ বৎসর তথা ১৯১৯ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ তাদের সেই লক্ষ্যে পরিপূর্ণভাবে সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। ব্রিটিশরা ভেগে যেতে বাধ্য হয়েছে। ১৯৭০ এর নির্বাচন পরবর্তী ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশ জন্ম লাভ করে।

মাওলানা ইসহাক কামাল বলেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে জমিয়তের রয়েছে অনন্য অবদান। দলের সাবেক নির্বাহী সভাপতি আরজাবাদ মাদ্রাসার সম্মানিত সাবেক মুহতামিম বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা মোস্তাফা আজাদ, জমিয়তের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা জহিরুল হক ভূঁইয়া, নরসিংদী জেলা জমিয়তের সাবেক সভাপতি জেলা জমিয়তের অন্যতম মুরব্বি বীর মুক্তিযোদ্ধা শায়খুল হাদিস মাওলানা বশির উদ্দিন তার উজ্জ্বল প্রমাণ।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি বলেছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে শুধুমাত্র টুপির সাথে টুপি মিলে যাওয়ার কারণে, জামার রং এক হওয়ার কারণে, ইসলাম নামক শব্দের মাধ্যমে সাদৃশ্য হওয়ার কারণে ফ্যাসিজমের জন্মদাতারা দীর্ঘ তিন বছর পর্যন্ত সকল ইসলামিক রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে বন্ধ করে দেয়। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ তখনো পূর্ব থেকে বন্ধ থাকা কওমি মাদ্রাসাগুলো খোলার ব্যাপারে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে। ১৯৭৪ সালে জামিয়া মাদানিয়া দারুল উলূম যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় হাফিজুল হাদীস মাওলানা তাজাম্মুল আলী জালালাবাদীকে সভাপতি ও মুফতি আহরারুজ্জামান হবিগঞ্জীকে সাধারণ সম্পাদক করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ করে।

তিনি আরো বলেছেন, ১৯৭৪ থেকে ২০২৪ এ দীর্ঘ সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ত্যাগ এবং কোরবানির নাজরানা পেশ করেছে। এমনকি ৫ ই আগস্ট এর মাধ্যমে অর্জিত নতুন স্বাধীনতা অর্জনে জমিয়ত সর্বাগ্রে থেকে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। যার প্রমান দলের অন্যতম সহ সভাপতি, দলের ক্যারিশমাটিক মহাসচিবের শাহবাগের ভাষন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সবার আগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ‘সংবাদ সম্মেলন’। পরিবর্তিত বাংলাদেশে সকল রাজনৈতিক দলের তথা বিরোধী মত গুলোর কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে সন্দেহাতিতভাবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন ও চাপের মুখে থেকেও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি, বিক্রি হয়নি সামান্যতম, হালুয়া রুটিতে ভাগও বসায়নি বরং ধীর গতিতে হলেও নিজেদের আদর্শে অটল অবিচল থেকে কাজ করে গিয়েছে নিরলসভাবে।

তিনি মনে করেন, আগামী দিনেও যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যুব জমিয়ত ও ছাত্র জমিয়ত থেমে যাবে না। এমনকি কেউ থামিয়ে দিতেও পারবেনা, ইনশাআল্লাহ। ব্রিটিশ যখন আমাদেরকে দমাতে পারেনি বাংলাদেশের মাটিতেও কেউ আমাদেরকে দমাতে পারবেনা। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশ ও জাতি গঠনে ছাত্র জমিয়ত, যুব জমিয়ত, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সময়ের ভাষা বুঝে সঠিক সীদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেই ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আহবান জানান, তাই আসুন, যুব জমিয়তের হাতকে শক্তিশালী করি এবং আগামী দিনে রাষ্ট্র গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করি। পরিশেষে আগত সকল নেতাকর্মী, জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং হল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষভাবে মিডিয়া তথা সাংবাদিক বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন করিব।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।