নূর হোসাইন: শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী ইসলামী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রখ্যাত আলেম হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেছেন, ফ্যাসিবাদি আওয়ামী গুণ্ডা বাহিনীর সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করায় দেশের মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। ছাত্রলীগের পাশাপাশি যুবলীগসহ আওয়ামিলীগের মদদপুষ্ট সকল সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামিলীগ যেন এদেশের রাজনীতিতে আর না আসতে পারে, সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুব জমিয়তের কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী এসব কথা বলেছেন।
যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল।
বক্তব্যে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী আরো বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সহযোগী সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে। এতে করে আমি আশাবাদি, এখন থেকে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের মতো এখন আর কেউ বই-খাতা-কলমের পরিবর্তে অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে সাহস পাবে না। দেশের পক্ষে কথা বলায় আবরার ফাহাদের মতো আর কোন দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা খুন হবে না। আমাদের মা-বোনরাও বাসাবাড়িতে অধিকতর নিরাপদবোধ করবেন।
আরও পড়তে পারেন-
- ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে ঠাট্টা-তাচ্ছিল্য জঘন্য গুনাহ
- উগ্র হিন্দুত্ববাদ এবং মুসলিমবিদ্বেষ ভারত ও বাংলাদেশের জন্য হুমকি
- ‘ইবাদুর রাহমান’ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের বিশেষ ১২টি গুণ
- মৃত্যুর স্মরণ জীবনের গতিপথ বদলে দেয়
- যে কারণে হিন্দুত্ববাদের নতুন নিশানা ‘দারুল উলূম দেওবন্দ’
মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকার আমাদেরকে মিম্বরে, ওয়াজ মাহফিলের স্টেজ কোথাও মনখুলে কথা বলতে দেয়নি। হাজার হাজার কোটি টাকা দূর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে পশ্চিমাবিশ্বে বেগমপাড়া করেছে। আমাদের দেশকে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে করদ রাজ্যে পরিণত করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কে বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে এই বাংলাদেশকে বিষাক্ত করেছে। তাই ফ্যাসিবাদি আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আজকের এই সম্মেলনের জন্য আমাদেরকে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিগত ১৬ বছর আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ পাইনি। স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারিনি। কেউ ভাল নেই, কষ্টে আছে; এই কথাও বলতে দেয়নি। কতো জঘন্য নিষ্ঠুরতায় দেশের মানুষ ১৬টা বছর আবদ্ধ ছিল। জুলাই বিপ্লবের পর আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সকলে মিলে যদি শক্তিশালী দেশ ও আদর্শ জাতি গড়ায় মনোনিবেশ করতে পারি, তাহলেই আমাদের এই অর্জিত স্বাধীনতা সফল হবে।
যুব জমিয়তের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, জমিয়তের স্লোগান- আল্লাহর জমিনে আল্লাহর নেজাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আপনাদের সকলকে সরব থাকতে হবে এবং এই লক্ষে তৃণমূল পর্যায়ে জনসংযোগ বৃদ্ধিসহ সাংগঠনিক সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মনপ্রাণ উজাড় করে কাজ করে যেতে হবে। ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের স্বার্থে জমিয়তকে শক্তিশালী করতে হবে। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনকে সামনে রেখে অকৃত্রিম আন্তরিকতার সাথে কাজ করে গেলে ইনশাআল্লাহ, সফলতা বয়ে আসতে দেরি হবে না।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা লোকমান মাযহারী, অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুফতি গোলাম মাওলা, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী প্রমুখ।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ