Home রাজনীতি ‘ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে মানুষের কোন দুঃখ দুর্দশা থাকবে না’

‘ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে মানুষের কোন দুঃখ দুর্দশা থাকবে না’

সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো তাদেরকে এদেশের মানুষ ভালো করে চেনে ও জানে। এসব দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের এদেশের মানুষ আর দ্বিতীয় ক্ষমতায় দেখতে চায় না। স্বাধীনতার পর থেকে শাসকগোষ্ঠীদের মোহ ও উচ্চাভিলাসকে অগ্রাধিকার দিয়ে আইন প্রণয়ন করার কারণে দেশে কখনোই জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কর দিয়ে বারবার স্বৈরাচার ও দূর্নীবাজ সরকার পুষেছে, যারা দেশের জন্য কাজ করেনি। যার ফলে দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি, বৈদেশিক ঋণের বোঝা বেড়েছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে এবং জালেম শাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল পায়নি। ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা হলে মানুষের কোন দুঃখ দুর্দশা আর থাকবে না।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেরাণীগঞ্জের আল্লাহু চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামী শাসন ছাড়া জাতির মুক্তি নাই। ইতোপূর্বে সরকারগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে এসেছে। ইসলামী শাসনের ব্যাপারে জনমনে ভীতি তৈরি করতে স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়েছে। এর কারণ ছিল, বিগত সকল সরকার তাদের দূর্নীতি-দুঃশাসন চালাতে গিয়ে ইসলামকে বিষোধগার করেছে। ইসলাম ক্ষমতায় আসলে তারা এসকল অপরাধ করতে পারত না। সুতরাং কেমন শাসন চাই, একথার উত্তরে একবাক্যে বলা যায়, শরীয়াহ ভিত্তিক সংবিধান ও অনুশাসন চাই। এসময় তিনি বলেন ইসলাম, দেশ ও মানবতার ভিত্তিতে ঐক্যে করতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর যারা দেশে মিথ্যা মামলা, লুটপাট, জুলুম, অত্যাচার করছেন, তাদের হাতেও দেশ নিরাপদ নয়। তাদের আর আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা ডাকাত না, জালেম না, অত্যাচারী না, তাদেরকে অত্যাচার করা যাবে না। আমি ওইসব ভাইদের বলব, যারা আওয়ামী লীগ করেছিলেন, যারা আদর্শবান, মনে রাখবেন, আদর্শবান ব্যক্তির দল কখনো আওয়ামী লীগ হতে পারে না। সময় আছে তওবা করুন। আগের দেশ আর আমরা চাই না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি দূর করতে না পারলে এ দেশের পরিবর্তন হবে না। এ দেশে ওসি পরিবর্তন হয়, এসপি পরিবর্তন হয়, কিন্তু ঘুষ ঠিকই থাকে। আমরা ঘুষ ও চোর মুক্ত বাংলাদেশ চাই। টিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশের অরাজকতার পেছনে দায় হল, নীতি ও আদর্শের অনুপস্থিতি। সুতরাং ব্যক্তি সংস্কারের পাশাপাশি নীতির সংস্কার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দেশের সংবিধান সংস্কার করে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে নতুন সংবিধান ঢেলে সাজাতে হবে। নচেৎ দেশ আবারো অরাজকতার মুখে পড়বে, দলীয় শাসন ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হবে। এবং আবারো শাসক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়ে যাবে। সুতরাং শুধু শাসকের পরিবর্তন নয়, নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন করতে হবে।

সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণ সভাপতি হাফেজ মুহামস্মদ জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম ও জয়েন্ট সেক্রেটারী হাজী শাহীন আহমাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারী জেনারেল মুফতী রেজাউল করীম আবরার।

গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের ঢাকা জেলা দক্ষিণের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ হানিফ মেম্বার, অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান, মাওলানা ইলিয়াস হোসাইন, শ্রমিকনেতা আলহাজ্ব শাহীন খান, যুবনেতা মিরাজ হোসেন মঈন, ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ মাহমুদসহ জেলা সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।