Home শীর্ষ সংবাদ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান ড. ইউনূসের

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান ড. ইউনূসের

অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান, বিভেদ সৃষ্টি করার কোনো সুযোগ নেই। গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই তার সরকারের মূল লক্ষ্য।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জাতীয় উপাসনালয় রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মন্দিরের বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। পরে সকলকে ধৈর্য ধরে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়ই বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্খা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই- আমরা মানুষ হিসেবে। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।

ড.ইউনূস বলেন, এই পরিস্থিতিতে আসার কারণটা হলো, একটা বড় রকমের বিভেদের আওয়াজ শুনছি। বিমানবন্দরে নেমেই যেটা বললাম, এমন বাংলাদেশ আমরা করতে চাচ্ছি যেখানে আমরা এক পরিবার। এই হলো মূল জিনিস। পরিবারেরা মধ্যে কোনো পার্থক্য করা, বিভেদ করা, এটার কোনো প্রশ্নই আসে না! আমরা বাংলাদেশের মানুষ এটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এটা নিয়ে যেন আর কোনো বাদ-বিবাদ ইত্যাদি যেন না হয়। আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্খা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই, মানুষ হিসেবে। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক। সমস্ত সমস্যার গোড়া হলো, আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো করেছি, সব কিছু পচে গেছে। এই কারণেই গোলমালগুলো হচ্ছে। কাজেই আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন গুলো ঠিক করতে হবে।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি বলেন, ন্যায়বিচার হলে কে বিচার পাবে না! আইনে কি বলা আছে এই সম্প্রদায়ের হলে এই আদালতে যাবে, ওই সম্প্রদায়ের হলে ওই আদালতে যাবে? আইন একটা, কার সাধ্য আছে সেখানে বিভেদ করে এর রকম একটা, ওর রকম একটা। এটা হতে পারে না। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‹এটা এমন রোগ, মূলে যেতে হবে। আপনারা যদি বলেন, আমাদের সংখ্যালঘু হিসেবে এটা বলছে এটা হলো মূল সমস্যা থেকে আপনারা দূরে সরে যাচ্ছেন। আমাদের বলতে হবে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেটা পেলে আমাদের বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে যেগুলো আছে, আমরা নতুন কিছু বলছি না। আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আপনারা যদি টেনে টেনে নিয়ে আসেন, আমি অমুক, আমি তমুক এটা আবার পুরোনো খেলায় চলে গেলেন। আপনাদের শিকার করার জন্য যারা বসে আছে, তারা এগুলো শিকার করে। আপনারা বলবেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমার সাংবিধানিক অধিকার এই, আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন, আর কিছু চাইবেন না আপনারা। গ্রামীণ ব্যাংকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনি শুনবেন না গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাসে আমরা হিন্দুপাড়া বলে বাদ দিয়ে মুসলমানপাড়ায় চলে গেছি। কখনো হয়নি। একসঙ্গে গেছি, একভাবে গেছি। তিনি বলেন, আমাদের মূল কাজটায় যেতে হবে। আপনাদের অনুরোধ,আপনারা বিভিন্ন খোপের মধ্যে চলে যেয়েন না। এই খোপ হলেই এর মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। একত্রে আসেন, এক আইন। ‹আমরা এসেছি এক মানুষ, এক অধিকার। এর মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। আমাদের একটু সাহায্য করেন আপনারা, ধৈর্য ধরেন। করতে পারলাম কি পারলাম না সেটা পরে বিচার করবেন। যদি না পারি, আমাদের দোষ দিয়েন বলেন ড. ইউনূস। পরে সকলকে ধৈর্য ধরে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়ই বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।