চট্টগ্রামের কোতোয়ালীর পুরান ফিশারীঘাটে মনোহরখালী মন্দির। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি আইডি থেকে জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর দেওয়া হয়। এই মন্দির থেকে একটু দূরে জগন্নাথ মন্দির। আছে রক্ষাখালী মন্দিরও। এসব মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয় বলেও ফেসবুকের ওই সব পোস্টে দাবি করা হয়।
কিন্তু আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিন দেখা গেল, সব মন্দির-ই অক্ষত রয়েছে। কোনো ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি।
কোতোয়ালীর পাথরঘাট পুরান ফিশারীঘাট এলাকার মনোহরখালী মন্দিরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রার্থনা করছিলেন বিপুল দাশ ও রতন কুমার। তাঁরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই মন্দিরে কোনো হামলা হয়নি। জ্বালিয়ে দেওয়ার খবরও মিথ্যা। এই এলাকায় রক্ষাখালী ও জগন্নাথ মন্দিরেও কোনো হামলা হয়নি।
গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে চট্টগ্রামের ঘাটফরহাদবেগ আরোহন ক্লাবে সংখ্যালঘুর বাসায় ডাকাতির খবর সুবির চৌধুরী চট্টগ্রাম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। সেখানে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, ডাকাতির এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে, চোর সন্দেহে একজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
দৈনিক আজাদীর সাংবাদিক জুলকার নাইন সাদমান জানান, ঘাটফারবেগ এলাকায় একজনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বাবা ভর্তি। হাসপাতালে তাঁর বাবার সঙ্গে থাকে তার বোন। তার বাবার অবস্থা খারাপ। হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনি চোর বলে মারধরের শিকার হন।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মো. ওবায়দুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোতোয়ালী থানা এলাকায় কোনো মন্দির বা সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। আমরা গতকাল শুক্রবার থেকে স্বল্প পরিসরে কাজ করছি।’
সনাতন ধর্মের সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা কেউ চট্টগ্রাম শহরে কোথায় হামলা হয়েছে, সেই তথ্য জানাতে পারেননি।
বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক বলভদ্র বাচ্চু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলার খবর পেয়েছি। তবে কোথায় কোথায় হামলা হয়েছে, সেই তথ্য সংগ্রহে নেই।’
ইচ্ছে করেই কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে হিন্দু ভাইদের মাঠে নামিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা হিন্দু ভাইদের প্রতিটি মন্দিরে পাহারা দিচ্ছি। মূলত দেশের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা বিভিন্ন হামলা করছে।’
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ