Home অন্যান্য খবর সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন ও সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করেছেন উলামা প্রতিনিধি দল

সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন ও সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করেছেন উলামা প্রতিনিধি দল

সিদ্ধিরগঞ্জ কেন্দ্রীয় মন্দির পরিদর্শন করছেন ঢাকা থেকে সফররত উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধি দল। ছবি- উম্মাহ।

বৈষম্যবিরোধী ও অধিকার আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এক দফার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সফলতা আসার পর একটি চিহ্নিত মহল আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে বদনাম রটাতে যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িতে ও মন্দিরে হামলার ষড়যন্ত্র করার খবর বেরোয়, ঠিক সময়ে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটূট রাখতে তড়িৎ ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে দেশের আলেম সমাজ, মাদ্রাসা ছাত্র ও তাওহিদী জনতা। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি বাড়ি ও মন্দিরে মন্দিরে পাহারা বসায় এবং তাদেরকে নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।

এরই অশং হিসেবে গতকাল (৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা সফর করেন উলামায়ে কেরামের একটি প্রতিনিধি দল। এতে ছিলেন- জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর সহসভাপতি মুফতি তাজুল ইসলাম আশরাফী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের দাওয়াহ বিষয়ক সহ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা হুসাইন আহমদ প্রমূখ।

সফরকালে উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধি দলটি সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরসহ আরো বেশ কয়েকটি মন্দির পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে কথা বলেন। এসময় সিদ্ধিরগঞ্জের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধি দলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের হিন্দুদেরকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে অরাজকতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা বিশৃঙ্খলার অনুমতি কিংবা সুযোগ কোনোটাই দেয়া হয়নি। একটি দেশে বহু সম্প্রদায়ের, ভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে থাকে। হতে পারে তারা মুসলিম, হতে পারে হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ। সমাজে সবাইকে নিয়ে সম্প্রীতির মেলবন্ধনে ইসলাম বসবাস করতে বলেছে। কখনো একে অপরের থেকে বিছিন্ন থাকতে বলেনি। কেউ বিপদে পড়লে তাকে না বাঁচিয়ে বিপদের মধ্যে রেখে আসার শিক্ষা ইসলাম কখনো দেয়নি। বরং সমাজ, গোত্র, সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে ইসলাম শিখেয়েছে মানুষকে ভালোবাসতে, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে আর অন্য মত, আদর্শ, ধর্মকে সম্মান করতে।

আরও পড়তে পারেন-

তারা আরো বলেন, আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অন্য গোষ্ঠী কিংবা ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি বিরূপ আচার-আচরণে নিষেধ করেছেন। তিনি প্রতিটি মানুষের প্রতি ছিলেন উদার এবং মানবিক। ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী হিসাব করে তিনি কখনো বিচারকাজও পরিচালনা করেননি। কারো প্রতি জুলুম-অবিচার করাও তিনি পছন্দ করতেন না।

উলামায়ে কেরামের নেতৃবৃন্দ বর্তমান অস্থিতিশীল সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকেও অত্যন্ত সতর্ক ও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোন দুষ্কৃতিকারি যদি কোথাও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চেষ্টা করে বলে সংবাদ পান, আপনারা দেরি না করে স্থানীয় ইমাম, খতীব এবং আলেমদেরকে জানাবেন। তারা দ্রুততার সাথে অবশ্যই আপনাদের পাশে দাঁড়াবেন।

এ সময় হেফাজত নেতা মুফতি তাজুল ইসলাম আশরাফী বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদি দু:শাসন থেকে দেশ এখন মুক্ত হয়েছে। ফ্যাসিবাদি সরকার নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের উপর নিজেরা হামলা করে আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নামে বদনাম রটিয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এখন আর ওই রকম চক্রান্ত করার সুযোগ কেউ পাবে না।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল মুসলমান নাগরিক হিসেবে যেসব অধিকার ভোগ করবেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অপরাপর সকল সংখ্যালঘু ভাই-বোনরাও সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা ভোগ করবেন। আমরা সকলে মিলেমিশে বৈষম্যমুক্ত, সহনশীল, শান্তিপূর্ণ এক শক্তিশালী ঐক্যবদ্ধ সমাজ ও দেশ গঠন করতে কাজ করে যাবো। সংখ্যালঘু ভাই-বোনদেরকে কোনরূপ হীনমন্যতায় আর ভূগতে হবে না।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।