Home আন্তর্জাতিক সংবাদ সম্মেলনে ব্যর্থতার পর বাইডেনের উপর চাপ বাড়ছে সরে দাঁড়ানোর

সংবাদ সম্মেলনে ব্যর্থতার পর বাইডেনের উপর চাপ বাড়ছে সরে দাঁড়ানোর

সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে ব্যর্থতার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে জো বাইডেনের যোগ্যতা নিয়ে সমালোচনা আরও দৃঢ় হয়েছে। বাইডেন অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, এই দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি এখনও উপযুক্ত। তবে তার নিজের দলের সমালোচকেরা এখন তার ওপর রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ৩ ডেমোক্র্যাট রাজনীতিক।

গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক টেলিভিশন বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের দিনের তুলনায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক ঘণ্টার সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে তিনি বেশি দৃঢ় ও সাবলীল ছিলেন। তবে কালও তিনি কিছুটা খেই হারিয়েছিলেন।

প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়ই তিনি ভুল করে তার ডেপুটি (সহকারী) কমলা হ্যারিসকে ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তার দুই ঘণ্টা আগে ন্যাটোর এক অনুষ্ঠানে তিনি ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর অবশ্য তিনি নিজের কথা সংশোধন করেন।

এসবের অর্থ বাইডেনের প্রার্থিতা এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, আগামী কয়েকদিনে আরও অনেকবার তার ভুলভাল কথা বলার শঙ্কা রয়েছে।

বাইডেন আরও চার বছর দায়িত্ব পালনের যোগ্য নন দাবি করে ইতোমধ্যে হলিউড অভিনেতা জর্জ ক্লুনিসহ কয়েকজন দাতা তাদের আর্থিক সহায়তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

বাইডেনের পদত্যাগ চান এমন একজন ডেমোক্র্যাট তহবিল সংগ্রহকারী বিবিসিকে বলেছেন, সমমনা বাইডেন সংশয়বাদীরা মনে করেন যে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ভালো করেছেন। তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার পক্ষে তার পারফর্মেন্স যথেষ্ট নয়।

বাইডেনের জন্য বড় সমস্যা হলো এখন থেকে তার প্রতিটি ইভেন্টে সবার নজর থাকবে এবং তার প্রতিটি পারফর্মেন্সের চুলচেঁরা বিশ্লেষণ করা হবে। তার যে কোনো স্লিপ অব টাং বা ছোট ভুলকেও তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে ধরা হবে। প্রমাণ করার চেষ্টা চলতেই থাকবে যে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য বা সক্ষম নন।

আরও পড়তে পারেন-

সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই কানেকটিকাটের কংগ্রেসম্যান জিম হিমস জনসেবায় বাইডেনের রেকর্ডের প্রশংসা করে পোস্ট দেন। তবে তাকে (বাইডেন) নির্বাচনী প্রচার থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ট্রাম্পের মতো ‘হুমকি’-কে মোকাবিলায় এখন আর জো বাইডেন সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী নন।

ইলিনয়ের কংগ্রেসম্যান এরিক সোরেনসেনও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, মি. বাইডেন ২০২০ সালে ‘দলের চেয়ে দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার উদ্দেশ্যে’ প্রার্থী হয়েছিলেন। আজ আমি তাকে আবার এই কাজটিই করতে বলছি।

ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান স্কট পিটার্স বলেছেন, ‘ঝুঁকি (বাইডেনকে নিয়ে) অনেক বেশি এবং আমরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি’।

ব্রিফিংয়ে বাইডেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি ‘দায়িত্ব সম্পন্ন করার’ দৌঁড়ে আছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমি পিছিয়ে পড়ি এবং দায়িত্ব পালন না করতে পারি, তাহলে তখন বলতে পারেন আমার এটি (নির্বাচনে লড়া) করা উচিত না। কিন্তু এখনও সেরকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’

অন্যদিকে, তার অনেক সমর্থক সংবাদ সম্মেলনের পরপরই বেরিয়ে এসে তার বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি করে বলেছেন যে তিনিই সেরা প্রার্থী।

ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান জেইম হ্যারিসন বলেন, ‘আমাদের নিটপিকিং বন্ধ করতে হবে এবং এরপরে আগামীর লক্ষ্যে মনোনিবেশ করতে হবে। এই মানুষটি অতীতেও এটি (নির্বাচনে জিতে) করে দেখিয়েছেন।’ এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও বাইডেনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার বলেছেন, শীর্ষ সম্মেলনে তার সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতের সময় তিনি (বাইডেন) ‘খুব ভাল ফর্মে’ ছিলেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাইডেনের এসব ভুলকে স্লিপ অব টাং বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু কমলা হ্যারিসের নাম ভুল করায় বাইডেনকে কটাক্ষ করেন ট্রাম্প। তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘দারুণ কাজ!’

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।